নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে দুই সন্তানের জননী সাকিলা আক্তার শ্যামলি (৩২) কে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সন্ধায় উপজেলার সিম্বা গ্রামে। এঘটনার পর থেকে স্বামী মাসুদ রানা (৩৮)সহ পরিবারের সবাই পলাতক রয়েছে। থানাপুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সিম্বা গ্রামের আফসার আলীর ছেলে মাসুদ রানা প্রায় ১৬ বছর আগে একই উপজেলার বেলবাড়ি গ্রামের আব্দুস সাত্তারের মেয়ে সাকিলা আক্তার শ্যামলী কে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে করে। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। দাম্পত্তজীবন ভাল চললেও হঠাৎ করে গত প্রায় দুই মাস আগে প্রতিবেশি জনৈক তিন সন্তানের জননীর সাথে পরকিয়া সম্পর্কের সুত্র ধরে স্ত্রীর অজান্তে দ্বিতীয় বিয়ে করে মাসুদ রানা। বিয়ের পর থেকে প্রথম স্ত্রীর প্রতি শুরু করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এনিয়ে পারিবারিক ও সামাজিক ভাবে সমাধানের লক্ষ্যে দফায় দফায় বৈঠক হলেও সুষ্ঠু কোন সমাধান হয়নি। এরই এক পর্যায়ে গত বুধবার সন্ধার আগে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে স্ত্রী শ্যামলীকে পিটিয়ে হত্যার পর মাসুদ নিজেই শ্বশুর বাড়িতে খবর দেয় যে তাদের মেয়ে গুরুত্বর অসুস্থ্য! তাড়াতারি আমার বাড়িতে আসেন হাসপাতালে নিতে হবে’। শ্বশুর বাড়ির লোকজন দ্রুত সেখানে পৌছা মাত্রই তড়িঘরি করে মাসুদ রানা একটি ভ্যান ভাড়া করে শ্যামলিকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। পথিমধ্যে শ্বশুর বাড়ির লোকজন বুঝতে পাড়ে তাদের মেয়ে আর বেঁচে নেই। পরে তারা লাশ নিয়ে বাড়িতে ফিরে গিয়ে থানাপুলিশকে খবর দিলে বুধবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। তবে গৃহবুধ শ্যামলীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহৃ,গলায় ফাঁসির দাগ রয়েছে বলে সুরতহাল প্রস্তুতকারী এসআই সেলিম জানিয়েছেন ।
শ্যামলির বাবা আব্দুস সাত্তার জানান,গত প্রায় দুই মাস আগে মাসুদ দ্বিতীয় বিয়ে করে। ওই বিয়ের পর থেকে আমার মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন শুরু করে। পারিবারিক ও গ্রামের লোকজনদের নিয়ে কয়েক দফায় বৈঠকও করলেও হয়নি। বুধবার দিন বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে আমার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমার মেয়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই।
এব্যাপারে রাণীনগর থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুব আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এঘটনায় তার বাবা আব্দুস সাত্তার বাদি হয়ে মাসুদ রানাকে প্রধান ও অজ্ঞাতদের আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গৃহবধু শ্যামলীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহৃ ও গলায় ফাঁসির দাগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর থেকে মাসুদসহ সবাই পলাকত রয়েছে। তবে আসামীদেরকে গ্রেফতারে জন্য পুলিশী অভিযান অব্যহত রয়েছে।