সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :
স্বামীর অমানবিক অত্যাচার, নির্যাতনে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের চড়িয়া শিকার উত্তরপাড়া গ্রামে এক গৃহবধু প্রায় ৪ মাস ধরে স্বামীর ঘর ছেড়ে পিতার পিতৃতালয়ে অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই ঘটনায় গৃহবধূ মোছাঃ শারমিন খাতুন (২০) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধিত-০৩) এর ১১(গ)/৩০ মোতাবেক আদালতে স্বামী মো. আবু সুফিয়ানসহ ৬ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে ,সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের চড়িয়া শিকার উত্তরপাড়া গ্রামের মো. আব্দুল জুব্বারের কন্যা মোছাঃ শারমিনের সাথে একই গ্রামের মো. সোনাউল্লাহ এর ছেলে মো. আবু সুফিয়ানের মুসলিম ধর্মীয় বিধান মতে সামাজিক ভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের এক পর্যায়ে সন্তানের মা হওয়ার পর স্বামীর ঘরে শারমিনের কিছু দিন সুখের কাটলেও যৌতুক লোভী আবু সুফিয়ান দিন দিন নানা উপায়ে (ছুতা) খোঁজে অত্যচার, নির্যাতন শুরু করে। নানা অঘটনের মধ্যে দিয়ে বড় হতে থাকে সন্তান আব্দুর রহমান (১০ মাস)। এদিকে যৌতুক লোভী পাষান্ড স্বামী আবু সুফিয়ান শারমিনকে তার দরিদ্র পিতা আব্দুল জুব্বারের নিকট থেকে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য দিনের পর দিন শারিরিক ও মানসিক ভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। অসহায় অবলা শারমিন পিতার অসহায়ত্বের কথা চিন্তা করে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে পারবে না বলে স্বামীকে জানিয়ে দেন।
এ ঘটনার পর স্বামী আবু সুফিয়ান নেশায় আসক্ত হয়ে শারমিনের উপর অত্যাচারের মাত্রা দিন দিন বাড়িয়ে দেন। এসব অত্যাচার, নির্যাতন ও শাশুড়-শাশুড়ি ও ভাসুরের বিশ্রী ও অকথ্য ভাষার আক্রমণ সহ্য করতে না পেরে হাটিকুমরুল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে একটি শালিস দায়ের করেন।
কিন্তু স্বামী আবু সুফিয়ান স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের বিচার অমান্য করে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হেদায়েতুল আলম উক্ত বিচারের একটি শালিসি রোয়েদাদ প্রদান করেন শারমিনকে। এঘটনার শেষ হতে না হতেই শারমিনকে দফায় দফায় যৌতুকের দাবীতে মারধর করতে থাকে পাষন্ড স্বামী আবু সুফিয়ান।
আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে বিষয়টি তদন্তের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানকে নির্দেশ প্রদান করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
শারমিন খাতুন বলেন, যৌতুক লোভী স্বামী আমায় অত্যাচার নির্যাতন করে আমার দরিদ্র পিতার কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য বার বার চাপ প্রয়োগ করেন।
আমি অসহায় হয়ে নিরবে মুখবুঝে অনেক কিছু সহ্য করেছি। আমি স্ত্রী নির্যাতনকারী যৌতুক লোভী স্বামী আবু সুফিয়ানের শাস্তি দাবী করছি।
এ বিষয়ে হাটিকুমরুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো হেদায়েতুল আলম জানান, মামলাটি আমাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কিন্তু উভয় পক্ষকে দুইবার নোটিশ প্রেরণ করা হলোও ছেলে পক্ষ হাজির না হওয়ার কারনে তদন্তের রিপোর্ট এখনও পাঠানো সম্ভব হয়নি। তবে শেষ বারের মতো উভয় পক্ষকে নোটিশ প্রেরণ করে আগামী বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) পরিষদে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।