আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সম্প্রতি সংঘটিত ঘনঘন অগ্নিকান্ড, ধর্ষণ ও গণপিটুনির ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হবে।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতিসংঘ নির্যাতন বিরোধী কনভেনশন (ইউএনসিএটি) বিষয়ে সিভিল সোসাইটির সাথে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, যে কোন ঘটনার একটা স্বাভাবিকতা আছে, আর একটা অস্বাভাবিকতা আছে। আপনারা যদি আগুন লাগার ঘটনা দেখে থাকেন। তাহলে দেখবেন, এটা কন্টিনিউয়াস ঘটতে থাকলো। তারপরে ধর্ষণের ঘটনা কন্টিনিউয়াস ঘটতে থাকলো। এখন গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে। এটা একটা দু’টা দুর্ঘটনা হলে ঠিক আছে। পরিসংখ্যান কি বলে ১১ থেকে ১২টা ঘটনা ঘটেছে। এখানে এটা অস্বাভাবিক।
এর আগে আলোচনা সভায় আইনমন্ত্রী বলেন, দেশে বিচারবর্হিভূত হত্যা কমেছে। একটাও যাতে বিচার বহির্ভূত হত্যা না হয়, সরকার সে দিকেই অগ্রসর হচ্ছে। নির্যাতন বন্ধে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে নির্যাতন কমেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম জাতিসংঘে নির্যাতন বিরোধী প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশের যেখানেই অপরাধ হচ্ছে সেখানেই তা রুখে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ধর্ষণ বা অন্যান্য নির্যাতন বন্ধ করার জন্য সরকার সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিচ্ছে। মাদক নির্মূলের জন্যও চেষ্টা করা হচ্ছে। এসিড সন্ত্রাস দমনে যেমন দেশের মানুষ সবাই একত্রিত হয়েছিল- তেমনি এসব অপরাধ দমনে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বৈষম্য দূর করার জন্য সরকার বৈষম্য বিরোধ আইন প্রণয়ন করছে। এ আইনের খসড়া ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে। আগামী মাসে এটি মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হবে এবং সেখানে অনুমোদিত হলে সংসদের আগামী অধিবেশনে এটি পাশের জন্য পাঠানো হবে।
আনিসুল হক বলেন, বৃটিশ ও পাকিস্তান আমলে জনগণকে শাসন করার জন্য পুলিশ বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলেছেন। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারও জনবান্ধব সরকার। জনগণের অকল্যাণ হয় এমন কোন কাজ তিনি করতে চান না।
মন্ত্রী বলেন, এই দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বের হওয়ার ব্যবস্থা প্রথমে শেখ হাসিনাই নিয়েছেন। তার সরকার এই দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে।
গণপিটুনিসহ সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এ ধরনের সব ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দেশের প্রচলিত আইনে এসবের বিচার হবে। দেশে যথেষ্ট ভালো আইন রয়েছে।
তিনি বলেন, এখন দেখা যাচ্ছে যে যদি আগুন লাগে তাহলে ৫টা থেকে ৭টা ঘটনা একসাথে হয়ে যায়। যদি ধর্ষণ হয় তাহলে ১০টা-১৫টা ঘটনা একসাথে হয়ে যায়। ‘‘এটি কি প্রোএকটিভনেস অব দ্য মিডিয়া”? তাতো না। ঘটনা হচ্ছে বলেই মিডিয়া কিন্তু রিপোর্ট করে। হঠাৎ গত ছয়মাসে কোনা ঘটনা নাই। একটা ঘটনা ঘটলো তারপরেই ছয়টা, দশটা ও পনেরটা ঘটে যায়- এটা অস্বাভাবিক। সেই ক্ষেত্রেই আমি বলছি যে, এখানে যারা গণতন্ত্র প্রতিহত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ করতে চায় সেটার কারণটাও আমরা খতিয়ে দেখবো এবং এটাও একটা কারণ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শহিদুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হকও বক্তৃতা করেন।