রাজশাহী অঞ্চলে ছেলে ধরা গুজব ছড়িয়ে পড়ছে। ছেলে ধরা সন্দেহে পৃথক পৃথক স্থানে এক নারীসহ দুই যুবককে গণপিটুনি দিয়েছে এলাকাবাসী। তবে গতকাল রবিবার পুলিশের পক্ষ থেকে এধরনের গুজবে কান না দেয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। কারণ,এ ধরনের গুজবের কোনো ভিত্তি নেই। তবে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় মাইকিংয়ের নির্দেশনা দেয়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শনিবার দুপুরে তানোর উপজেলার কলমা ইউনিয়নের বহাড়া গ্রামে সন্দেহজনক ভাবে লুৎফর (২৯) নামে এক যুবক ঘোরাঘুরি করছিল। এ সময় ওই যুবকের অসংলগ্ন কথাবার্তায় স্থানীয়রা ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে ক্লাবঘরে বেঁধে রাখে। পরে র্যাব-৫ এ খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে র্যাব রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের একটি দল উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানায় নিয়ে যায়। জানা যায়, আটক লুৎফর মানসিক ভারসাম্যহীন, তবে শিক্ষিত। এদিকে বিকেলে কামারগাঁ ইউনিয়নের কচুয়া এলাকায় মনোয়ারুল (৩০) নামে এক ব্যক্তি স্থানীয় একজনের বাড়িতে গোপনে প্রবেশ করে। এ সময় ওই বাড়িতে একাধিক শিশু ছিল। হঠাৎ বাড়ির ভিতরে অপরিচিত ওই ব্যক্তিকে দেখে সকলের সন্দেহ হয়। বাড়িতে প্রবেশের কারণ জিজ্ঞেস করলে সেকোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। এ সময় এলাকাবাসী জড়ো হয়ে তাকে গণপিটুনি দেয়া শুরু করে। খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে তানোর থানায় নিয়ে আসে। আটক মনোয়ারুলের বাড়ি মোহনপুর উপজেলার টাঙ্গাইন কামারপাড়া গ্রামে। চুরির উদ্দেশে ওই বাড়িতে প্রবেশ করে বলে জানায় সে। শনিবার সকালে ছেলেধরা সন্দেহে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে এক প্রতিবন্ধী নারীকে পুলিশে সোপর্দ করেছে মহল্লাবাসী।মানুষের মধ্যে কল্লা কাটা গুজবের ফলে ওই নারীকে আটক করে এলাকাবাসী। পরে তাকে পুলিশের কাছে দেয়া হয়। কিন্তু ওই নারী একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। তার ছেলে সোনালী ব্যাংকে কর্মরত। ছেলের কাছেই তাকে দেয়া হয়েছে। রাজশাহীর এসপি মো. শহিদুল্লাহ এ তথ্য সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন লুৎফর কী উদ্দেশ্য নিয়ে তানোরের বহড়ায় গ্রামে এসেছে তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাছাড়া নাম জানতে পারলেও তার ঠিকানা জানাতে পারেনি সে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আর কচুয়া থেকে আটক মনোয়ারুল নামের অপর ওই ব্যক্তি চিহ্নিত চোর। তার বিরুদ্ধে থানায় চুরির মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর গোদাগাড়ীতে এক প্রতিবন্ধী নারীকে পুলিশে সোপর্দ করেছে মহল্লাবাসী। তার ছেলে সোনালী ব্যাংকে কর্মরত। ছেলের কাছেই তাকে দেয়া হয়েছে।#