ঢাকা শহরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, গণমাধ্যমে রিপোর্ট এসেছে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে শিশুসহ ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে কয়েক হাজার। এ পরিস্থিতিতে একজন মেয়র বলেন এখন পর্যন্ত কিছুই হয়নি। আমাদের প্রশ্ন উনি একথা কিভাবে বলেন। আমরা তো দেখতি পাচ্ছি এটা মহামারি আকারে রূপ নিতে বাকি নেই।
বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার এ মন্তব্য করেন। আদালত বলেন, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের স্বজনরাই এর ব্যাথা বোঝেন। এতে দুর্নীতিবাজদের খারাপ লাগার কথা নয়। কারণ তাদের সন্তানেরা এদেশে থাকে না।
শুনানিকালে আদালত এডিস মশা নির্মূলে সিটি করপোরেশনের ক্রয়কৃত ওষুধের মান নিয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদনের বিষয়টিও উল্লেখ করেন।
হাইকোর্ট বলেন, যদি ওষুধে মশা নিধন না হয় তাহলে তা ক্রয় করা হলো কেন? তাহলে ওষুধ ক্রয়ে দুর্নীতি হয়েছে। সেক্ষেত্রে কি কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? তদন্ত করে বের করতে হবে কারা দায়ী এ ধরনের ওষুধ ক্রয়ের জন্য। এর কোন জবাব দিতে পারেননি আদালতে উপস্থিত দুই সিটি করপোরেশনের আইনজীবী নুরুন্নাহান নূপুর।
আদালত বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আমরা বলে আসছি মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নিন। কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেননি। আপনারা এফিডেভিট দিয়ে বলছেন সারা বছরই মশার ওষুধ ছিটান। আমাদের প্রশ্ন কোথায় ছিটান, কে ছিটায় সেটা কেউ জানে না। অথচ জনগণ কর দিচ্ছে কিন্তু কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে না। আদালত বলেন, এই মশার উপদ্রব চলবে তো সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, সে পর্যন্ত তো অনেক লোক আক্রান্ত হবে। মশা নির্মূলে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ মানুষ তো মারা যাচ্ছে।
রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, সরকারি ক্রয় নীতি মেনে ওষুধ ক্রয় করতে গেলে অনেক সময় দরকার। তাই আদালতের নির্দেশনা দেওয়া দরকার জরুরি ভিত্তিতে যাতে কার্যকর ওষুধ ক্রয় করে মশা নির্মূলে পদক্ষেপ নেয়া হয়।
শুনানি শেষে হাইকোর্ট ডেঙ্গু মশা নির্মূলে সিটি করপোরেশন কর্তৃক নিম্নমানের ওষুধ ক্রয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে দেশের বাইরে থেকে কার্যকর ওষুধ আনার পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে এক্ষেত্রে সরকারের সাহায্য নিতে বলা হয়েছে।