বনপাড়ায় স্বপ্ন বুনে হারিয়ে গেলো ব্যাংক ম্যানেজার পল্টন

নাটোরের বড়াইগ্রামে বনপাড়া পৌরশহরের কালিকাপুরে জমি কিনে চারতলা বাড়ি নির্মাণ করেন অগ্রণী ব্যাংকের ম্যানেজার পল্টন কুমার সরকার (৩৮)। স্ত্রী শিলা সরকারও একই ব্যাংকের কর্মকর্তা। সাত বছরের ছেলে রয়েছে তাদের। অপরদিকে স্ত্রীর গর্ভে রয়েছে আরেকটি অনাগত সন্তান। জীবনটাকে সুন্দর করে গোছানো প্রায় শেষের পথে আর সে মুহুর্তে সড়ক দুর্ঘটনায় পৃথিবী ছেড়ে চিরতরে চলে যেতে হলো পল্টন কুমার সরকারকে।

প্রতিবারের মতো বৃহস্পতিবার অফিস শেষে বিকেল ৫টার দিকে কর্মস্থল নওগাঁ সাপাহার অগ্রণী ব্যাংক কার্যালয় থেকে বনপাড়ায় নিজের স্বপ্নের বাড়ি ও পরিবারের কাছে ফিরতে গিয়ে মান্দা ফেরিঘাট এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় সে। জানা যায়, সিএনজি অটোরিক্সা যোগে ফেরিঘাটে আসার সময় একটি রড বোঝাই ট্রাকের পেছনে ধাক্কা খায় সিএনজি। এ সময় ট্রাকের রড তার মাথায় ঢুকে গেলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। শুক্রবার দুপুরে ময়না তদন্ত শেষে তার লাশ গ্রামের বাড়ি কদিমচিলান এলাকায় আসলে পুরো গ্রাম যেনো শোকে স্তব্দ হয়ে যায়। স্ত্রী শিলা সরকার অগ্রণী ব্যাংক বাগাতিপাড়া কাদিরাবাদ শাখার ক্যাশ কর্মকর্তা। নিথর দেহে পড়ে থাকা স্বামীর দিকে চেয়ে শোকে বারবার তিনি মূর্ছা যাচ্ছিলেন। পল্টন সরকারের বাবা দ্বীজেন্দ্রনাথ সরকার বাকরুদ্ধ। মৃত সন্তানের দিকে অপার শোকে শুকিয়ে যাওয়া অশ্রুহীন চোখে পলকহীন তাকিয়ে থেকে যেনো পুত্রকে শেষবারের মতো দেখার সাধ তার মিটছিলো না। আর মা সেতো সন্তানের বুকে মাথা রেখে ভগবানকে বার বার সুধাচ্ছে যেনো তাকেও একসাথে চিরতরে নিয়ে যেতে। হৃদয় বিদারক এমন দৃশ্য দেখে যেনো প্রকৃতিও নির্বাক-নিস্তব্দ হয়ে উঠে ওই সময়।


কদিমচিলান ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা মাস্টার জানান, ছোট বেলা থেকে মেধাবী ছিলো পল্টন কুমার সরকার। তার মেধা ও কর্ম দক্ষতার কারণে অতি সম্প্রতি সে অগ্রণী ব্যাংকের ম্যানেজার পদে পদন্নোতি নিয়ে সাপাহার শাখায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। শুক্রবার বিকেলে কদিমচিলান শশ্মানে তার অন্তুষ্টিক্রীয়া সম্পন্ন করা হয়।