আবু ইসহাক, সাঁথিয়া ( পাবনা) ঃ
দৈনন্দিন পুষ্টির চাহিদা মেটাতে এবং শারীরিক সুস্থতা ও ওজন হ্রাসে মসলা ফসলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। একজন মানুষের দৈনিক প্রায় ২০ গ্রাম মসলা খাওয়া প্রয়োজন তার মধ্যে আদা প্রায় ৩ থেকে ৫ গ্রাম। সাঁথিয়ার জনসংখ্যা ৪,১০,৭৬৭ জন। সেই হিসেবে সাঁথিয়ার মানুষের দৈনিক প্রায় ১২২০ থেকে ২০৫০ কেজি আদার চাহিদা যেটা বাৎসরিক প্রয়োজন গিয়ে দাঁড়ায় ৪৪২ থেকে ৭৪৫ মেট্টিক টন। সাঁথিয়ায় এবছর ৩১,৫০০ বস্তা আদা হতে ৪৭,৫০০ কেজি থেকে ৯৫,০০০ কেজি আদা প্রাপ্তির আশা করছেন কৃষি অফিস।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, দিন দিন বাড়ছে মানুষ, কমছে আবাদী জমি। বাড়ছে চাহিদা। এ বিষয়কে লক্ষ্য রেখে সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সন্জীব গোস্বামীর প্রচেষ্টায় উপজেলার ১০ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান, উঠান বৈঠক, উদ্বুদ্ধকরণ এবং কিছু ক্ষেত্রে কৃষি উপকরণ সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সর্বমোট ৩১৫০০ টি বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে। যেখানে মাটিতে আদা চাষের ফলে বীজ পানি নিষ্কাশনের অভাবে আদার কন্দ পঁচা রোগ ছড়িয়ে পড়ার মাধ্যমে আদার ফলন হ্রাসের ঝুঁকি থাকে, সেখানে বস্তায় আদা চাষের ফলে অনাবাদি পতিত জমি ও বাগানের মধ্যে সুব্যবহার করা সম্ভব হয়, আদার পরিচর্যা করা সহজ হয় এবং রোগবালাইয়ের আক্রমণ অনেক কমে যায়। একেকটি বস্তায় জৈবসার, বীজসহ
মাত্র ২০-৩০ টাকা খরচে জাত ও পরিচর্যাভেদে ১ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত আদা পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য কমপক্ষে ১২০-৩৬০ টাকা।
উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের ছোন্দহ গ্রামের অবসর প্রাপ্ত পুলিশ আকতারুজ্জামান প্রতিবেদককে বলেন, আম বাগানে ৬০০ বস্তায় আদা চাষ করেছেন। যদি প্রতি বস্তায় এক কেজি আদা হয় তাতেই বাজার দরের অর্ধেক লাভ হবে। আর বেশী হলে লাভ আরো হবে। আগামীতে তিনি ২০০০ থেকে ২৫০০ বস্তায় আদা লাগাবেন।
কাশিনাথপুর ইউনিয়নের মেহেদীনগর গ্রামের শফিউজ্জামান জানান, তার সুপারী ও আম বাগানের ফাঁকে কৃষি অফসের পরামর্শে ৫০০ বস্তায় আদা চাষ করছেন, গাছের অবস্থায় ভাল ফলাফল আশা করছেন। আগামীতে তার বাগানে ২৫০০ থেকে ৩০০০ বস্তায় আদা চাষ করবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সন্জীব গোস্বামী জানান, সাঁথিয়ায় এবছর আবাদকৃত ৩১,৫০০ বস্তা আদা হতে ৪৭,৫০০ কেজি থেকে ৯৫,০০০ কেজি আদা প্রাপ্তির আশা করছেন আদাচাষী কৃষক-কৃষাণী ও উপজেলা কৃষি অফিস। যা উপজেলার চাহিদা মেটায়েও অন্য জায়গায় বিক্রি করে লাভবান হবেন আদা চাষীরা।