‘শারীরিকভাবে টাইগাররা অনেক দুর্বল’

টেস্টের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ভারতীয়দের নূন্যতম চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে ব্যর্থ বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতেও নিশ্চিত ধবলধোলাইয়ের পথে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

সিরিজের প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে হেরে আগেই সিরিজ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। আজ শনিবার হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে সাঞ্জু স্যামসন ও সূর্যকুমার যাদবের ব্যাটিং তাণ্ডবে তুরুপের তাসে পরিণত হন টাইগার বোলাররা।

ভারতীয় এই দুই তারকা ব্যাটসম্যান একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলীয় রেকর্ড সর্বোচ্চ ২৯৭ রান তুলতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। টেস্ট খেলুড়ে প্রথম দল হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ২৯৭ রান করল ভারত। এর আগে আফগানিস্তান ২৮৭ রান করেছিল।

আজ ভারত ২৯৭ রান করতে হাঁকিয়েছে ২২টি ছক্কা আর ২৫টি চার। সাঞ্জু স্যামসন ৪৭ বলে ১১টি চার আর ৮টি ছক্কায় করেছেন ১১১ রান। ৩৫ বলে ৮টি চার আর ৫টি ছক্কায় ৭৫ রান করেন সূর্যকুমার যাদব।

ভারত বনাম বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি সিরিজের অন্যতম পার্থক্য হয়ে দাঁড়িয়েছে দুই দলের ব্যাটস্যানদের ছক্কা হাঁকানোর দক্ষতা। প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি ভারত মাত্র ৩১ ওভার ব্যাটিং করে ২২টি ছক্কা হাঁকিয়েছে। আজ ২০ ওভারে হাঁকিয়েছে ২২টি ছক্কা।

প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ হাঁকিয়েছে মাত্র ৮টি ছক্কা। প্রথম দুই ম্যাচে নীতিশ কুমার একাই ৮টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। আজ শেষ ম্যাচে সাঞ্জু স্যামসন হাঁকিয়েছেন ৮টি ছক্কা।

এই সামর্থ্যের ফারাকের জন্য বাংলাদেশের সহকারী কোচ নিক পোথাস জিনগত সমস্যাকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, ভারতীয়রা শারীরিকভাবে অনেক শক্তিশালী। আমরা নিজেদের স্ট্রেন্থ-কন্ডিশনিংয়ের জন্য পরিশ্রম করছি। তবে কেউ তো আর জিনগত বিষয় বদলাতে পারবে না।

বাংলাদেশ দলের দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ আরও বলেছেন, একজনের যদি ৯৫-১০০ কেজি এবং অন্যজনের যদি ৬৫ কেজি দৈহিক ওজন হয়, তাহলে শক্তিশালী যে সে বেশি জোরে বল হিট করতে পারবে। অবশ্যই টাইমিং এবং টেকনিক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই বিষয় নিয়ে ক্রমাগত পরিশ্রম করছি।

শনিবার লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের এক ওভারে টানা ৫টি ছক্কা হাঁকান সাঞ্জু স্যামসন। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের টানা ছক্কা হাঁকানোর দক্ষতার জন্য আইপিএলকে কৃতিত্ব দিয়েছেন পোথাস।

তিনি বলেন, আইপিএল বিশ্বসেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট। বিশ্বের সেরা তারকারা এই টুর্নামেন্টে খেলে। তাদের সঙ্গে খেলে ভারতীয় ক্রিকেটাররা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা পেয়ে যায়। ভারতীয়দের সঙ্গে আমাদের ছক্কা হাঁকানোর ফারাক অনেকটা ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের সঙ্গে বাংলাদেশের ছক্কা মারার দক্ষতার সঙ্গে তুলনীয়।

ঐতিহাসিকভাবেও বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা ছক্কা হাঁকাতে অপারগ। টি-টোয়েন্টিতে যেখানে ছক্কা হাঁকানোর প্রদর্শনী চলে, সেখানে বাংলাদেশ তো আরও পিছিয়ে। ১৭৮টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ ছক্কা হাঁকিয়েছে মাত্র ৬৯৭টি। ম্যাচ প্রতি হিসেব করলে চারেগর নিচে গড়।

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড মাহমুদুল্লাহর রিয়াদের। তিনি ১২৯ ম্যাচে ৭৭টি ছক্কা হাঁকান। ভারতের বর্তমান অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব একাই ৭০ ইনিংসে হাঁকিয়েছেন ১৩৯টি ছক্কা।