ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
প্রায় দেড়শ বছর ধরে পাবনার ঈশ্বরদীতে মৌবাড়ি মন্দিরে দুর্গা পূজা হচ্ছে। পূর্বে এই মন্দির শরৎ কালী মন্দির হিসেবে পরিচিত ছিল। কালের পরিক্রমায় এখন এটি মৌবাড়ি দুর্গা মন্দির বলে পাবনা জেলা ছাড়াও দেশের অনেক এলাকায় পরিচিত। এটিই এখন ঈশ্বরদীর কেন্দ্রীয় মন্দির। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাত দশটার দিকে অমৃতযোগে মন্দিরে দূর্গা প্রতিমা আসনে অধিষ্ঠিত করা হয়েছে।
পৌর এলাকার শৈল পাড়া ১ নং ওয়ার্ডে এই মন্দিরের অবস্থান। মন্দিরের আশেপাশে কোন হিন্দু সম্প্রদায়ের জনবসতি নেই। শহরের অন্যান্য এলাকার স্থানীয়রা এই মন্দির পরিচালনা করেন। আশেপাশের মুসলিম জনগোষ্ঠি মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ ও দেখভাল করেন। এযাবত এই মন্দিরের গায়ে কোন আঁচড় লাগতে দেয়নি স্থানীয়রা। মিরেমিশে সকলে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করে।
এই মন্দিরের দেবী দুর্গাকে সকলেই জাগ্রত বলে বিশ্বাস করে। দেবী মায়ের কাছে কোন মনস্কামনা করলে তা পূরণ হয় বলে সকলে মনে করেন। যেকারণে পূজার সময় সোনা-রুপার গহনা, কবুতর, পাঁঠাসহ অন্যান্য অনেক উপকরণ ভক্তরা উৎসর্গ করেন দেবী দুর্গার উদ্দেশ্যে। শুধু হিন্দু ভক্তই নয়, মুসলিম সম্প্রদায়ের কোন কোন মানুষও এসব সামগ্রী দান করেন। মন্দিরের দীর্ঘদিনের প্রচলন পাঁঠা বলি। নবমী তিথিতে এখানে প্রতিবছর ৫০-৭০টি পাঁঠা বলি হয়ে থাকে।
মন্দিরের পুরোহিত রঘুনাথ স্যান্নাল জানান, অন্যান্য মন্দিরে দেবী দুর্গা তাঁর সন্তানাদি লক্ষী, স্বরস্বতি, কার্তিক ও গনেশসহ মর্তলোকে পূজিত হলেও এই মন্দিরের দেবী ২২ পুতুলের প্রতিমায় পূজা গ্রহন করেন। সবার ওপরে গঙ্গা দেবী, তাঁর নীচে শিব। এছাড়াও সত্য, দাপর, ত্রেতা ও কলিযুগে যেসব অবতারের আগমন ঘটেছিল তাদেরও দেবীর সাথে পূজা করা হয়। এখানে শুধু স্থানীয়রা ছাড়াও দূরদুরান্ত হতে ভক্তের আগমন ঘটে।
তিনি আরও জানান, এবারে পূজার তিথি ব্যতিক্রম। একইদিনে সপ্তমী-অষ্টমী, অষ্টমী-নবমী এবং নবমী-দশমী পড়েছে। যেকারণে পূজা এবারে একদিন কম হবে। অর্থাৎ শনিবার (১২ অক্টোবর) নবমী খুব সকালে শেষ হলে শুরু হবে বিজয়া দশমী। এদিনই বিসর্জ্জন হওয়ার কথা। যদি এদিন বিসর্জ্জন না দেওয়া হয়, তাহলে রবিবার (১৩ অক্টোবর) একাদশীতে প্রতিমা বিসর্জন হবে। ##