চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতিতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন পাবনার চাটমোহরের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রয় ক্ষমতা কমায় কাট ছাট করতে হচ্ছে বাজার তালিকায়। প্রয়োজনীয় পরিমান মতো পণ্য কিনতে পারছেন না এ শ্রেণীর মানুষগুলো। গত কয়েকদিন যাবত বৃষ্টি হওয়ায় কর্মহীন হয়ে পরেছেন দিনমজুররা। ফলে দূর্ভোগ বেড়েছে তাদেরও। প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বের না হওয়ায় আয় কমেছে রিকসা ভ্যানচালকদেরও।
চাটমোহর থানা বাজার এলাকার সবজি বিক্রেতা বিল্লাল হোসেন জানান, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়, রসুন ২৮০ টাকায়, আদা ২০০ টাকায়, পেয়াজ ১২০ টাকায়, টমেটো ২৪০ টাকায়, গাজর ২২০ টাকায়, বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, আলু ৫৫ টাকায়, করলা ১০০ টাকায়, পটল ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, ওল ৮০ টাকায়, ঢেড়শ ৮০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, লাল শাক ৬০ টাকায়, শসা ৬০ টাকায়, মুখী কচু ৬০ টাকায়, পেঁপে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি কাচকলা ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, প্রতিটি লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দাম বেড়েছে ডিমেরও। প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়।
চাটমোহর থানা বাজার এলাকার আড়তদাড় ছাইফুল ইসলাম জানান, শুকনা মরিচ, আলু, আদা, পেঁয়াজ, রসুনের দাম স্থিতিশীল থাকলেও প্রায় সব ধরণের কাচা শাক সবজির দাম বেড়েছে। আড়তে কাচা শাক সবজির আমদানী কমে গেছে ফলে বেড়েছে দাম।
দোলং গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন জানান, প্রচুর ফুল আসলেও বৃষ্টির কারণে জমিতে সবজি টিকছে না। ফুল, জালি পঁচে যাচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সবজি ক্ষেত। দাম বাড়লেও উৎপাদন কমায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
উপজেলার জাবরকোল গ্রামের ফেরিওয়ালা আব্দুল জলিল বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে জানান, সবজির দাম বেশি হওয়ায় এবং ব্যবসা খারাপ হওয়ায় গত প্রায় পনেরো দিন সবজি কিনতে পারেননি তিনি। ভাত রান্না করার পর ভাতের মধ্যে পানি দিয়ে পান্তা করে খাচ্ছেন।
বেসরকারি সংস্থা ডক্টরস এগ্রোভেট এর চাটমোহর শাখা ব্যবস্থাপক লাল সরকার জানান, সবজির দাম অনেক বেশি। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের পক্ষে সবজি কিনে খাওয়া কঠিন হয়ে পরেছে। প্রতিটা জিনিসের দাম বেশি। প্রতি বছরই এ সময় সবজির দাম বাড়ে। গত কয়েক দিন যাবত প্রাকৃতিক দূর্যোগ হওয়ায় এবার দাম আরো বেশি বেড়েছে। ফলে ব্যহত হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জীবনযাত্রা।
চাটমোহর পৌরসদরের বালুচর মহল্লার শিক্ষক মোহাইমিনুল হালিম জানান, অবসর ভাতা ও কল্যাণ তহবিলের কর্তন বাদে মাসে ২০,০১৪ টাকা বেতন পান তিনি। বর্তমান দ্রব্য মূল্যের যে উর্ধগতি তাতে সংসার চালানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পরেছে।
হরিপুর মসজিদপাড়া সিদ্দিকিয়া আলিম মাদ্রাসার জেষ্ঠ্য অধ্যাপক আব্দুস ছালাম জানান, দ্রব্যমূল্য বাড়ায় পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করা কষ্টকর হয়ে পরেছে। বেতনের টাকায় মাসের অর্ধেক দিনই চলেনা। ঋণ করে, ধার দেনা করে চলতে হয়।
চাটমোহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোখলেছুর রহমান বিদ্যুৎ জানান, ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বাজারে শাক সবজির আমদানি কম। আমরা সব সময় বাজার মনিটরিং করছি। ব্যবসায়ীরা যেন কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়াতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখছি।