// ইয়ানূর রহমান : যশোরের মনিরামপুরের আবু সাঈদকে ধরে এনে ক্রসফায়ারের নামে হত্যার অভিযোগে সাবেক পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান এবং আরো ৩ পুলিশ কর্মকর্তাসহ আট জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
বিএনপির’র রাজনীতি’র সাথে জড়িত আবু সাঈদ নিহতের প্রায় এক দশক পর রোববার আদালতে এই মামলা করেন নিহতের স্ত্রী পারভীনা খাতুন। আনিসুর রহমান ডিআইজি হিসেবে বর্তমানে রাজশাহী রেঞ্জে কর্মরত রয়েছেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহমেদ অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজিকে আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদীর আইনজীবী শহিদ ইকবাল হোসেন।
আসামিরা হলেন, যশোর জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, মনিরামপুর থানার তৎকালীন ওসি মোল্যা খবির আহমেদ, এস আই তাসমিম আহমদ, এস আই শাহিন, মনিরামপুর উপজেলার জালঝাড়া গ্রামের মৃত দূর্গাপদ সিংহের ছেলে সুব্রত সিংহ, জিনার আলীর ছেলে মতিয়ার রহমান, খোর্দ্দ গাংড়া (জালঝাড়া) গ্রামের
মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে ফিরোজ আহমেদ ও জয়পুর গ্রামের মৃত নওশের আলী মেম্বারের ছেলে মুন্তাজ আলী।
মোছা. পারভীনা খাতুন মামলায় উল্লেখ করেছেন, তার স্বামী আবু সাঈদকে ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যার পর মনিরামপুর উপজেলার জয়পুর বাজারের গ্রাম্য চিকিৎসক বজলুর রহমানের দোকান থেকে তৎকালীন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানের নির্দেশে পুলিশ আটক করে এবং তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো।
আসামি সুব্রত সিংহ, মতিয়ার রহমান, ফিরোজ আহমেদ ও মুন্তাজ আলী ক্রসফায়ারের লিস্ট তৈরি করে যশোরে পুলিশ সুপার হিসেবে চাকরিকালীন আনিসুর রহমানকে সরবরাহ করতেন। ১৭ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে কিছু দুরে জয়পুর বাজারে গিয়ে বজলুর রহমানের ওষুধের দোকানে বসে ছিলেন আবু সাঈদ। এ সময় ওসি
মোল্যা খবির আহমেদ, এস আই তাসমিম আহমদ ও এস আই শাহিন তাকে সেখান থেকে ধরে হাতকড়া পরিয়ে মারধর করতে করতে নিয়ে যান। পরে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
খবর পেয়ে সাথে সাথে আবু সাঈদের স্ত্রী পারভীনা খাতুন থানায় গিয়ে সেখানে তার স্বামীকে পুলিশ হেফাজতে দেখতে পান। এরপর রাত ১২টার দিকে পারভীনা খাতুন ওসির সাথে দেখা করলে তিনি তাকে জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশে তার স্বামীকে আটক করা হয়েছে। তিনি তাকে পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলতে বলেন।
এছাড়া আসামি আওয়ামী লীগ নেতা মুন্তাজ আলীর সাথেও যোগাযোগ করতে বলেন ওসি।
আবু সাঈদকে পেন্ডিং মামলায় আটক করা হয়েছিলো। পরদিন সকাল ৬টার দিকে পারভীন খাতুন জানতে পারেন, তার স্বামী আবু সাঈদকে পুলিশ হেফাজতে গুলি করে হত্যার পর লাশ থানায় আনা হয়েছে। পরে পারভীন খাতুন আরও জানতে পারেন, পুলিশ শারীরিক নির্যাতন করে থানা থেকে বাইরে নিয়ে যান আবু সাঈদকে এবং
যশোর-সাতক্ষীরা রোডের বেগারিতলায় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।#