নাটোরের আড়তে বেড়েছে চামড়ার আমদানি

// নাটোর প্রতিনিধি
ঈদের দ্বিতীয় দিনে সামান্য পরিমানে কাঁচা চামড়া আসছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার মোকাম নাটোরের চকবৈদ্যনাথের আড়তগুলোতে। মূলত যারা ঈদের দ্বিতীয় দিন কোরবানী করেছেন, তারাই আজকে নিয়ে আসছেন কাঁচা চামড়া। এছাড়া ঈদের দিন বিকেল থেকে গতকাল সারা রাত ধরে চামড়া সংগ্রহ করেছেন নাটোরের দুই শতাধিক চামড়া ব্যবসায়ী। সে সব চামড়ায় লবন দিয়ে সংরক্ষণ করতে ব্য সময় পার করছেন আড়তদার ও শ্রমিকরা।

চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতি সুত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন বিকেল থেকে আজ বুধবার অন্তত ৮০ হাজার পিস চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। এবার নাটোর মোকামে ২ লাখ ৫০ হাজার গরুর চামড়া এবং ৫ লাখ ছাগলের চামড়া ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে । গতবারের তুলনায় চামড়ার দামেও বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান তারা।

চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা জানান, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, রাজশাহী সহ বিভিন্ন জেলার মৌসুমি ব্যবসায়ী ও মাদ্রাসাগুলো নাটোরের চামড়া সরবরাহ করে। এতে একদিনেই নাটোরের আড়তগুলোতে গরুর চামড়া ৪৫ থেকে ৫০হাজার পিস এবং খাসির ২০ থেকে ২৫হাজার পিস কাঁচা চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। তবে লবণযুক্ত চামড়া আসতে সময় লাগবে আরও সপ্তাহ খানেক। আগামী সপ্তাহে দেশের ৩০ থেকে ৩৫জেলার লবণযুক্ত চামড়া আসবে চকবৈদ্যনাথের আড়তে। এরপর ট্যানারী মালিক ও তাদের প্রতিনিধিরা চামড়া সংগ্রহ করবেন।

বুধবার চামড়ার মোকাম নাটোরের চকবৈদ্যনাথ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কুরবানীর চামড়া আড়তে আনছেন ফরিয়া ও মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা। তবে বেশ কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ী ও মাদ্রাসা থেকে চামড়া নিয়ে আসা বিক্রেতারা জানান, দাম নিয়ে কারসাজি করছেন বড় ব্যাবসায়ীরা।

নলডাঙ্গা থেকে গরুর চামড়া নিয়ে আসা মালেক আলী জানান, তিনি প্রতিপিস চামড় ১২০০-১৩০০ টাকা দরে কিনে এনেছেন। কিন্তু এখানে দাম ১ হাজার টাকার উপরে বলছে না।

চামড়া বিক্রি করতে আসা নলডাঙ্গা উপজেলার একটি মাদ্রাসার শিক্ষক বলেন, ভ্যান ভর্তি করে চামড়া নিয়ে এসেছি। গড়ে দাম বলে চামড়া কিনেছে এক ব্যাবসায়ী। বেছে বেছে ভালো গুলো নিয়ে এখন বলছে দাম কম দিবে। প্রশাসনের এগুলো নজরদারি করা দরকার।

মাদ্রাসা ও এতিম খানার সংগৃহীত গরু-ছাগলের কাঁচা চামড়া লবন দিয়ে সংরক্ষণে জেলা প্রশাসন উদ্দ্যোগ নিলেও বেশ কিছু জায়গায় এসব লবণের ব্যবহার না করার ঘটনাও ঘটেছে।

জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব লুৎফর রহমান বলেন, প্রতি বছর মৌসুমি ব্যবসায়ীরা না বুঝে চামড়া কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হন।তারা চামড়া পেলেই কিনে নেন। কিন্তু সে চামড়ার মান, আকার ও লবন দ্বারা রক্ষণের মাত্রা অনুযায়ী আমরা চামড়া কিনে থাকি।কাঁচা চামড়া লবন দ্বারা আরো ২/৩ দিন আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে।সে অনুযায়ী আমরা ন্যায্য দামেই চামড়া ক্রয় করছি।

চামড়ার বাজার পরিদর্শনে এসে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাছুদুর রহমান ঢাকা পোস্ট’কে বলেন, আমরা সার্বাবক্ষণিক বাজার মনিটরিং করছি। গতবারের চেয়ে এবার চামড়ার দামও বেশি।
ছোট ছোট কিছু অভিযোগ শুনেছি, এবং তাৎক্ষণিক গিয়ে সেগুলো সমাধান করেছি। চামড়া আড়তদাররা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন কোনো ব্যাবসী বিক্রেতাদের হেয় করার চেষ্টা করলে তারাই সেগুলোকে নিভৃত করবেন।