// ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় এলজিইডির সড়কের পাশে গভীর গর্ত করে পুকুর খনন করায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সড়ক। উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামে পুলিশ সদস্য মাজেদ আলী এই পুকুর খনন করছেন। এতে আগামী বৃষ্টি মৌসুমে সড়ক ধসে পড়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় বাসিন্দারা। এর আগে একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী পাটুলিপাড়া গ্রামে পুকুরের কারণে অর্ধ কোটি টাকার সড়ক নির্মাণের কয়েকদিন পরেই ধসে যায়।
জানা যায়, ভাঙ্গুড়া বাজার থেকে কাশিপুর ও রাঙ্গালিয়া গ্রাম হয়ে এলজিইডির এই সড়কটি টেবুনিয়া-বাঘাবাড়ী আঞ্চলিক মহা সড়কে সংযুক্ত হয়েছে। এছাড়া সড়কটি উপজেলা সদরের সঙ্গে রাংগালিয়া ও কাশিপুর গ্রামের জন্য যোগাযোগের একমাত্র সড়ক। গতবছর এলজিডি সড়কটি সংস্কার করেন। সম্প্রতি কাশিপুর গ্রামের বাসিন্দা পুলিশ সদস্য মাজেদ আলী ছুটিতে এসে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সড়কের পাশে গভীর গর্ত করে পুকুরের কাজ শুরু করেন। প্রশাসন ও লোক চক্ষুর আড়াল করতে তিনি গভীর রাতে ভেকু মেশিন দিয়ে এই খননের কাজ করেন। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা সড়কের ক্ষতির বিবেচনা করে তাকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে পুকুর খননের পরামর্শ দিলেও তিনি শুনছেন না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশের দুই ফুট ফুটপাত থেকে প্রায় ১০ ফুট নিচু জমি। এতটা গভীর থাকা সত্ত্বেও মাজেদ আলী আরো ৫ ফুট গভীর করে গর্ত করছেন। এতে সড়কের ফুটপাতের দীর্ঘাকৃতির তালের গাছ সহ অন্যান্য গাছ যে কোন সময় উপড়ে যেতে পারে। দুই যুগ আগে সড়ক নির্মাণের সময় এসব গাছ রোপন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। প্রতি রাতে মাজেদ আলি সড়কের পাশে এই খনন কাজ করেন। তবে দিনের বেলায় পাশের জমিতে খননের কাজ করেন। এসব জমিতে পুকুর খননের প্রশাসনের অনুমোদন নেই বলে জানা যায়।
পুকুর খননের বিষয়ে পুলিশ সদস্য মাজেদ আলী বলেন, সড়কের পাশে আগে থেকেই নিচু জায়গা ছিল। সেখানেই পুকুর খনন করছি। তবে সড়ক যাতে না ভাঙ্গে সেজন্য কিছু মাটি সড়কে লাগিয়ে দিচ্ছি। পুলিশ সদস্য হয়ে বেআইনি কাজ করছেন কিভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুদিন পরে অবসরে আসবো। তাই প্রয়োজনে করছি।
উপজেলা প্রকৌশলী আফরোজা পারভিন বলেন, এলজিইডির নিয়ম অনুসারে সড়ক থেকে অন্তত ১২ ফুট সমতল ভূমি রেখে পুকুরের পাড় বাঁধতে হবে। এ ব্যাপারে সকল ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে এ ধরনের সড়কের পাশে পুকুর খনন বন্ধে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। এই অবৈধ পুকুর খননের বিষয়ে দপ্তরকে জানানো হবে।
পারভাঙ্গুড়া ইউপি চেয়ারম্যান হেদায়েতুল হক বলেন, উপজেলা প্রকৌশলী এমন চিঠি দিয়েছে কিনা আমার স্মরণে নেই। তবে গ্রাম পুলিশকে পাঠিয়ে সড়কের পাশে পুকুর খনন কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, পুলিশ সদস্যের এমন নিয়ম বহির্ভূত কর্মকাণ্ড করা উচিত নয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন বলেন, বিষয়টি জানার পরই আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া করা হচ্ছে।