// পাবনা প্রতিনিধি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-৩ আসনে (চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর) নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী পুলিশ সুপারের (চাটমোহর সার্কেল) বিরুদ্ধে।
এছাড়া নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
প্রিজাইডিং ও সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগের অনিয়ম বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পাবনা-৩ আসনের ট্রাক প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ মাস্টার।
এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর ইউএনও ও ১৩ ডিসেম্বর চাটমোহর সার্কেলের বিরুদ্ধে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর অভিযোগ করেন আব্দুল হামিদ মাস্টার।
লিখিত অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থীর দাবি, প্রতিক বরাদ্দের পর থেকে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার রেদুয়ানুল হালিম এবং সহকারী পুলিশ সুপারের (চাটমোহর সার্কেল) হাবিবুল ইসলাম নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছেন না। তারা নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। তারা দায়িত্বে থাকলে নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। তাই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে তাদেরকে দ্রুত বদলী করা প্রয়োজন।
এছাড়াও চাটমোহর, ফরিদপুর ও ভাঙ্গুড়া উপজেলার প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের নিয়োগে অনিয়ম করা হয়েছে। ফলে তারাও নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। তাদের কারণে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় থাকবে না। এজন্য তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।
এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার রেদুয়ানুল হালিম বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। উনি অভিযোগ দিয়ে থাকলে সেগুলো মিথ্যা। আমরা তো নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিরপেক্ষভাবে কাজ করছি।’
চাটমোহর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার হাবিবুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি কি কারণে অভিযোগ দিয়েছে জানি না। কোনো পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে না। তিনবারের এমপির সাথে দেখা হলে সালাম দেয়াটা তো তার পক্ষ নেয়া হয় না। অভিযোগ সত্য নয়।’
এ বিষয়ে একাধিবার তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও পাবনা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মু. আসাদুজ্জামান রিসিভ করেননি। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ মাস্টার বলেন, ‘কোনো প্রয়োজনে ইউএনও সাহেবকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেন না। কোনো বিষয়ে তাকে জানাতে পারিনা, তার সহযোগিতাও পাই না। সহকারি পুলিশ সুপার নৌকার লোকজন নিয়ে মিটিং করেন, নৌকার প্রার্থীর প্রচারণায় তাকে দেখা গেছে। তিন উপজেলায় প্রিজাইডিং ও সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগে দেয়া হয়েছে নৌকা সমর্থিত লোকজনকে। এর মধ্যে আবার ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলায় মাদ্রাসা শিক্ষকদের প্রিজাইডিং ও সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার পদে নিয়োগ দেয়া হলেও চাটমোহর একটি বড় উপজেলা হওয়া স্বত্ত্বেও এখানে মাদ্রাসা শিক্ষকদের নেয়া হয়নি। সবমিলিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়।’