চলনবিলের ১৬টি নদী সৌন্দর্যও পূবর্ জৌলুশ হারিয়ে মরা খাল

// নাটোর প্রতিনিধি
দেশের বৃহৎ চলনবিল অঞ্চলের প্রাণ কেন্দ্র নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বুক চিওে বয়ে যাওয়া প্রায় ১৬টি নদ-নদী এখন সৌন্দর্য্য-পূর্ব জৌলুশ ও স্বকীয়তা হারিয়ে মরাখালে পরিণত হয়েছে। দখল, দূষণ ও ভরাটে এ উপজেলার প্রধান নদী নন্দকুঁজা, গুমানী, আত্রাইসহ তুলসীগঙ্গা, মির্জামামুদ ও খলিসাডাঙ্গা নদী সংকুচিত হয়ে পড়ায় অস্তিত্ব সংকটে এখন মৃত প্রায়। ফলে কৃষি জমির সেচকার্য্য ব্যহতসহ দেশীয় মৎস্য সম্পদ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। বেকার হচ্ছে নদীকে জীবিকা কওে খাওয়া মানুষগুলো। ব্যবসা-বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, বর্ষা শেষে চলনবিলের নদী-নালা ও খাল-বিলে পানি থাকেনা। তাই বন্ধ হয়ে গেছে নৌ চলাচল। জেলেদের মাছ ধরছেনা। ধান চাষ হচ্ছে এসব মরা নদীতে। অথচ এক সময় এসব নদীতেই বছর জুড়ে পানি থাকতো। চলাচল করত ছোট বড় নৌকা। এসব নদী আর নৌকাকে ঘিরেই গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড়, নাজিরপুর, খুবজীপুর, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, আহম্মেদপুর, তাড়াশ, ধামাইচ, নাদোসৈয়দপুর, চাটমোহর, ছাইকোলা, অষ্টমনিষা, মির্জাপুর, ভাঙ্গুড়ায় গড়ে উঠেছিল বড় নৌবন্দর। চলত রমরমা ব্যবসা-বাণিজ্য। কালের বিবর্তনে সেসব এখন শুধুই ইতিহাস।
স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জানান, নদীর পানিতে সেচ সুবিধাসহ ফসলের উৎপাদন খরচ কম হতো। এখন আর নদীর পানি দিয়ে সেচ হয়না। আবার ফসলের উৎপাদন খরচ বাড়লে ও বিক্রিতে মূল্য পাওয়া যায়না। এক সময় নৌকায় কওে শতশত মণ ধান, পাট, গম সরিষাসহ চলনবিলের সকল কৃষিজাত পণ্য ঢাকা, খুলনা সহ দেশের বিভিন্ন মোকামে সরবরাহ করতেন ব্যবসায়ীরা। মোকাম থেকেই নানা পণ্য গুরুদাসপুওে এনে পাইকারি দামে বিক্রি করতেন। নদীপথে কম খরচে সহজলভ্য পরিবহন সুবিধা ভোগ করলেও বর্তমানে পানি না থাকায় আগের মত ব্যবসা করতে পারছেননা তারা।
চলনবিল ও নদীরক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি মজিবর রহমান মজনু জানান, গুরুদাসপুর পৌরসদরের চাঁচকৈড় মধ্যমপাড়া থেকে উপজেলার চলনালী-কান্দিপাড়া, কান্টাগাড়ী বিল হয়ে পাটপাড়া, সোনাবাজু, চাকলেরবিল এবং পশ্চিমের চাপিলাহয়ে নন্দকুঁজা নদীতে মিলিত হয়েছে মির্জা-মামুদ নদ। এই নদীর সংযোগনালা বয়ে গেছে দক্ষিণের সিধুলীহয়ে চরকাদহ, ধারাবারিষা, চামটা বিলে। দখল ও ভরাটে এই নদের স্মৃতি চিহ্নই মুছে গেছে। নদীগুলো রক্ষায় সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপের দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপাওে নাটোর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডেও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, ২ হাজার ১৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে নাটোরের প্রধান নদী নারদ, বড়াল ও মুসাখাঁ মিলে ১৫৪ কিলোমিটার শাখা নদী পুনঃ খননের জন্য পৃথক একটি প্রকল্প উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলেই ছোট-বড় নদী নালা খনন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।#