// এস.এম.রকি, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ পূত্রবধূকে হত্যা করে দিনাজপুর খানসামা উপজেলায় আত্মহত্যার নাটক; অতঃপর এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী থানা পুলিশের হাতে শাশুড়ি গ্রেফতার হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত শাশুড়ী ছাদেকা বেগম (৪৫) দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচার আদালত-৩ এর বিচারক সুরাইয়া বেগমের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ৩১ জুলাই (সোমবার) উপজেলার আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের নতুন হঠাৎ পাড়া এলাকায় রাত ৮টার দিকে মর্মান্তিক এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
নিহত পিনুয়ারা আক্তার আফসুরা উপজেলার আলোকঝাড়ী নতুন হঠাৎ পাড়ার আশিকুর রহমানের স্ত্রী ও পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ মল্লিকাদহ সরকার পাড়ার বাসিন্দা রুস্তম আলীর মেয়ে।
হত্যার ঘটনায় সোমবার (১ আগস্ট) নিহত পিনুয়ারা আক্তার আফসুরার বাবা রোস্তম আলী বাদী হয়ে খানসামা থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এতে শাশুড়ী ছাদেকা বেগম (৪৫) ও নিহতের স্বামী আশিকুর রহমান (৩২) সহ ৬ জনকে অভিযোগে আসামী করা হয়।
নিহতের পরিবার ও সেই অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৫-৬ বছর আগে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। সংসার জীবনে পিনুয়ারা আক্তার আফসুরা (২৩) এর গর্ভে একটি কন্যা মোছাঃ আফসি আক্তার (০৩) বছর গ্রহণ করে। ঘর সংসার কালীন বিভিন্ন সময় বাদীর মেয়ের সহিত তার স্বামী ও তার শশুরবাড়ির পরিবারের লোকজনের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ, দ্বন্দ লেগেই থাকত। সেই অবস্থায় এমন মৃত্যুর ঘটনা নানা সন্দেহের জেরে রহস্য উন্মোচন করে থানা পুলিশ।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও থানা পুলিশের সাথে কথা বলে জানা যায়, সোমবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে শ্বাসরোধ ও মারধর করে মৃত্যু নিশ্চিতের পর শশুরবাড়ির লোকজন বাড়ির পার্শ্বেই প্লাস্টিকের রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। তখন স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে জড়িতরা নিহতের মরদেহটি নামিয়ে চিকিৎসার জন্য নীলফামারী সদর হাসপাতাল নিয়ে গেলে হাসতাপালে কর্তব্যরত চিকিৎসক পিনুয়ারাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আসামীগণ নিহতকে হত্যা করে মৃত্যুর বিষয়টি গোপন করা সহ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে কিন্তু থানা পুলিশের চেষ্টায় সেটি ব্যর্থ হয়।
নিহতের বাবা রোস্তম আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমার মেয়ের উপর তারা প্রায় সময়ই তারা অত্যাচার করতো। সেই অবস্থায় আমার মৃত্যুর খবর জানতে পারে সন্দেহ হয়েছে পরে থানা পুলিশের সহযোগিতায় বিষয়টি উদঘাটন হয়েছে। দ্রুত সময়ে জড়িতদের শনাক্ত করায় থানা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে এবিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকারী কর্মকর্তা এসআই দিবাকর রায় বলেন, প্রাথমিক তদন্তেই বিষয়টি নিশ্চিত যে এটি আত্মহত্যা নয় হত্যা। তাই গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে জড়িতদের আটক করা হয়েছে।
অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চিত্তরঞ্জন রায় বলেন, স্পর্শকাতর এই ঘটনার শুরু থেকেই থানা পুলিশ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত কাজ করে জড়িত শাশুড়ীকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পরে বিজ্ঞ আদালত তাকে জেলে প্রেরণ করে।
বার্তা প্রেরকঃ