// সঞ্জু রায়, বগুড়াঃ বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ডঃ খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেছেন বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কোনদিনো সম্ভব না। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে এই আওয়ামী সিন্ডিকেট। অর্থ পাচার করে দেশে লুটপাট চালাচ্ছে এই সরকার। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করেছে এই ফ্যাসিবাদ সরকার যার দরুণ আজ সারাদেশে মামলা হামলায় জর্জরিত করা হচ্ছে আমাদের নেতাকর্মীদের। তিনি বলেন, এই দেশের জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে সকলের একটাই দাবি শেখ হাসিনার বিদায় এবং দেশনেত্রীর মুক্তি। দেশনেত্রীকে মুক্ত না করতে পারলে দেশে গনতন্ত্র আসবে না।
উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে অধিনস্থ আদালত, গায়েবী মামলায় নির্বিচারে গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানি, দ্রব্য মূল্যের অসহনীয় উর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, বর্তমান সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি বগুড়া জেলা শাখা আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশারফ হোসেন এই কথাগুলি বলেন। শুক্রবার বিকেলে শহরের সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে আয়োজিত এই সমাবেশে খন্দকার মোশারফ দেশের এই দুর্দিনে বিএনপি নেতাদের নিজেদের মাঝে সকল ভুল বুঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতার নিজ জেলা হিসেবে বগুড়াবাসীর দায়িত্ব সর্বদাই বেশি। তাই রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমেই দেশে আবার গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হবে।
জনসমাবেশে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা সভাপতির বক্তব্যে শুক্রবারের জনসমাবেশকে ঘিরে বিগত কয়েকদিন ধরে অন্যায়ভাবে তাদের নেতাকর্মীদের যেভাবে নির্বিচারে গ্রেফতার করা হয়েছে তিনি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। একই সাথে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন এই নেতা। তিনি বলেন, তাদের জনসমাবেশ বানচাল করতে পথে পথে তাদের নেতাকর্মীদের আসতে বাঁধা দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তারপরেও হাজার হাজার নেতাকর্মীদের জনস্রোত আটকাতে পারেনি তারা।
জনসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এ্যাড. একেএম মাহবুবর রহমান, সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, বিএনপি’র রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এএইচএম ওবায়দুর রহমান চন্দন, জেলা বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক এমপি গোলাম মোঃ সিরাজ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি কাজী রফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও সাবেক এমপি মোশারফ হোসেন। জনসমাবেশের সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা বিএনপি নেতা সহিদ-উন-নবী সালাম, কে.এম. খায়রুল বাশার এবং জাহিদুল ইসলাম হেলাল। জনসমাবেশে বগুড়ার ১২টি উপজেলার প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে জনসমাবেশে আসার পথে পুলিশি বাঁধার অভিযোগটি অস্বীকার করে বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) স্নিগ্ধ আখতার বলেন, সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে বগুড়া জেলা পুলিশ সর্বদা জিরো টলারেন্স। তবে শুক্রবারের জনসমাবেশে আসতে পুলিশের পক্ষে কাউকে বাঁধা দেয়া হয়নি বরং সমাবেশস্থলে কঠোর নিরাপত্তা বিধান করেছে পুলিশ যার দরুণ সুশৃঙ্খলভাবে তাদের কর্মসূচি শেষ হয়েছে বগুড়ায়। জেলার কোথাও থেকে এমন অভিযোগও তাদের কাছে আসেনি।