// সঞ্জু রায়, বগুড়া: বগুড়া শিবগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দশ বছর পর আকবর আলী মণ্ডল নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। নারী ও শিশু ট্রাইবুন্যালের বিচারক নুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার তারিক মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে এই রায় দেন। একই সঙ্গে আসামিকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডও দেয়া হয়।
৫৭ বছরের আকবর আলী মণ্ডল শিবগঞ্জের কিচক ইউনিয়নের বেলাই কেকারপাড়ার বাসিন্দা।
নিহত হাসিনা বিবি একই উপজেলার বলরামপুরের মৃত নুরুল ইসলামের মেয়ে এবং আকবর আলীর তৃতীয় স্ত্রী ছিলেন। ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে তাকে মারধর করে হত্যা করে ঘরের তীরের সঙ্গে ঝুলে রাখা হয়। পরের দিন ১৯ সেপ্টেম্বর হাসিনার ভাই লোকমান আলী নওফেল শিবগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ সময় মামলার আরও তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, আকবরের ছেলে আনোয়ার হোসেন, এনামুল এবং প্রথম স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন। এদের মধ্যে এনামুল পলাতক আছেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নারী ও শিশু ট্রাইবুন্যাল-২ এর সরকারি কৌঁসুলি আশেকুর রহমান সুজন।
তিনি জানান, ২০০৭ সালের দিকে হাসিনা বিবিকে বিয়ে করেন আকবর আলী। এর আগে আকবরের আরও দুইজন স্ত্রী ছিলেন। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য হাসিনাকে চাপ প্রয়োগ ও মারধর করা হতো। ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বরে হাসিনাকে মারধর করা হয়। এতে হাসিনা মারা যান। পরে হত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে আকবর আলী মৃতদেহ শয়ন ঘরের তীরের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখেন।
কিন্তু পরের দিন হাসিনার স্বজনরা আকবরের বাড়িতে এলে মরদেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের দাগ দেখতে পান। এতে সন্দেহ হলে নিহতের ভাই হত্যা মামলা করেন। এতে আকবর আলী, তার দুই ছেলে ও প্রথম স্ত্রীকে আসামি করা হয়।
আশেকুর রহমান সুজন বলেন, পরের বছর জানুয়ারি মাসে শিবগঞ্জ থানার তৎকালীন তদন্ত (পরিদর্শক) একেএম লুৎফর রহমান এই মামলার চার্জশিট জমা দেন । চার্জশিটে হত্যার ঘটনায় শুধু আকবর আলীর সম্পৃক্ততার বিষয় উঠে আসে। এরপর মামলার দীর্ঘ শুনানিতে এসব বিষয় প্রমানিত হয়। পরে েআজ মঙ্গলবার বিচারক মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। আর অন্য তিনজনকে বেকসুর খালাস করে দেন।
মামলার বাদী লোকমান আলী নওফেল জানান, তার বোনের হত্যার বিচার হয়েছে। বিচারকের রায়ে তারা সন্তুষ্ট।