// সঞ্জু রায়, বগুড়া: বগুড়ায় কথিত ৫’শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাড়ির মালিক অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকার প্রেসিডেন্ট সাখওয়াত হোসেন টুটুল (৬৫) এর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অসাধু উপায় ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে ৯ কোটি ৩২ লাখ ১৩ হাজার ৮৬১ টাকার সম্পদ অর্জনের অপরাধে রবিবার দুদক বগুড়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
জানা যায়, সাখওয়াত হোসেন এএইচজেডি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও বগুড়ার শিবগঞ্জের দেউলি গ্রামের মৃত আব্দুল হাই সরকারের ছেলে। ওই গ্রামেই কথিত ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শে^তপাথরে তৈরি দৃষ্টিনন্দন এক বাড়ির মালিক তিনি। বর্তমানে কেউ বসবাস করে না ওই বাড়িতে। শুধু একজন কেয়ারটেকার রয়েছেন দেখাশোনার জন্য। বাড়ির মালিক সাখাওয়াত হোসেন টুটুল ২০১৮ সালেও দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এছাড়াও ওই বছর ঢাকার মতিঝিল থানায় একটি ব্যাংকের ঋণখেলাপির মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
দুদক বলছে, সাখওয়াত হোসেনকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ দেওয়া হয়। তিনি ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রæয়ারি তার সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। সাখওয়াতের দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে দেখা যায় তার স্থাবর অস্থাবর মিলে সম্পদের পরিমাণ ১৮ কোটি ৫৭ লাখ ৫৭ হাজার ৮৩৭ টাকা। কিন্তু যাচাইকালে তার স্থাবর-অস্থাবর মিলে সম্পদ মিলে গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৯ কোটি ২৫ লাখ ৪৩ হাজার ৯৬৭ টাকার। এই হিসেবে সাখওয়াতের জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে ৯ কোটি ৩২ লাখ ১৩ হাজার ৮৬১ টাকার সম্পদ ভোগ-দখল রেখেছেন যদিও এটি প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য।
এ প্রসঙ্গে মামলার বাদী দুদকের সহকারি পরিচালক মো. কামরুজ্জামান জানান, সাখওয়াত হোসেন অবৈধভাবে সম্পদ অজর্ন করায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ সালের ২৭ এর (১) ধারায় মামলা হয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে ৯ কোটি ৩২ লাখ ১৩ হাজার ৮৬১ টাকার সম্পদ ভোগ-দখলের হিসেব পাওয়া গিয়েছে তবে তদন্তকালে আরও স্পষ্ট বোঝা যাবে প্রকৃতঅর্থেই সাখাওয়াত হোসেন আরও কত টাকার অবৈধভাবে ভোগদখল করছেন।
এদিকে দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানকালে সাখাওয়াতের কথিত ৫০০ কোটি টাকার বাড়ির হিসেব নিকেশ করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তরসহ দুদকের সংশ্লিষ্টদের। কারণ শিবগঞ্জের দেউলির সেই বাড়িতে টুটুল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিয়ে এসে বসিয়েছে নানা সাজসজ্জার সামগ্রী যার দাম হিসেব করা কিছুটা ভোগান্তির। একই সাথে বাড়ি নির্মাণে যে খরচ রটেছে সারাবিশ্বে তার সাথে সাখাওয়াতের আয়ের কোন সাদৃশ্য পায়নি দুদক তবে মামলার তদন্তকালে হয়তোবা উঠে আসবে আলোচিত এই বাড়ির মালিক সাখাওয়াত হোসেনের দুর্নীতির ফিরিস্তি।