// কামরুল হাসান টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে পৌলী নদীর তীরে ভেকু মেসিন বসিয়ে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে চরম হুমকির মুখে পড়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্প ও ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের পৌলী নদীর ওপর কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু। অবৈধভাবে মাটি কাটার ফলে আশ্রয়ণ প্রকল্প ও মহাসড়ক এবং রেল সেতুর দুই পাশ থেকে মাটি সরে গিয়ে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও করছে অনেকে।
উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিল উদ্দিন নেতৃত্বে পৌলি নদীর ওপর রেল সেতুর পূর্ব পাশে আদর্শ গ্রাম সংলগ্ন মহেলা এলাকায় নদীর তীর মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে এলেঙ্গা পৌরসভাধীন আদর্শ গ্রাম ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে বলে স্থানীয় জানান। নদীর মাটি কেটে ট্রাক গাড়ী চলাচলের জন্য পৌলি নদীর ওপর রেল সেতুর বাঁধ রক্ষা ব্লক সরিয়ে রাস্তা তৈরি করেছেন প্রভাবশালী নেতা হাবিল উদ্দিন।
ইতিপূর্বে রেলসেতুর দু’পাশের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তির শিকার হন হাজার হাজার মানুষ। অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করায় এলাকার আশপাশে বর্ষা মৌসুমে ব্যাপক ভাঙন হয়। ইতোপূর্বে ভাঙ্গনে শতাধিক পরিবারের ভিটে-বাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে।
নদীর দুই তীরে ভেকু মেশিন বসিয়ে সেতুর দুপাশে ছয় – আটটি পয়েন্ট থেকে অবৈধভাবে নদীর তীরে মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে।
সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার পৌলী নদীর ওপর মহাসড়ক সেতু ও রেল সেতুর
দুপাশে অদূরে পূর্ব পাশে মহেলা ও পশ্চিম পাশে পৌংলি এলাকায় কয়েকটি ভেকু বসিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ট্রাক ভর্তি মাটি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এর ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী রক্ষা গাইড বাঁধ পৌলী নদীর পাশে আশ্রয়ণ প্রকল্প ও নদীর ওপর পাশাপাশি নির্মিত সড়ক ও রেল সেতু দুইটি দেবে যেতে পারে। মাটিখেকোদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রতি বছরই এসব মাটিখেকো তাদের অবৈধ মাটি বিক্রির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাটিখেকোদের উৎপীড়নে দিশাহারা হয়ে উঠেছে স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসীরা জানায়, সাগর মিয়া, হাফিজুর রহমান,বাবুল ড্রাইভার, ফেরদৌস,নাজু, দেলোয়ার, জাহাঙ্গীর ও রশিদ ও আফজাল টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার ছত্রছাত্রায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবাধে মাটি খেকোরা পৌলী নদী থেকে মাটি কেটে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছেন।
সম্প্রতিতে মাটি কাটার কারণে দু’বার তিতাস গ্যাসের মূল পাইপলাইন ভেসে উঠে টাঙ্গাইল, গাজীপুরসহ আশপাশের জেলাগুলোতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে সাধারণ জনগণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ওই সময় নদীতে
মাটি কাটা ও বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হলে সাময়িকভাবে মাটি বিক্রি বন্ধ হয়। পরে পাইপ লাইন মেরামত করা হলে আবার অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদীর তীরে মাটি কেটে বিক্রি অব্যাহত রেখেছে প্রভাবশালীরা।
এভাবে ভেকু দিয়ে মাটি কাটার ফলে গ্যাসপাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হুসেইন বলেন, দ্রুত মাটি কাটা বন্ধ করে ও তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।