ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা:
ঈশ্বরদীতে রেলওয়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে ভাষার মাসেই গুড়িয়ে দেয়া হলো ভাষা সৈনিকের নামে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী ‘মাহবুব আহমেদ খান স্মৃতি মঞ্চ’। বুধবার দুপুরে ঈশ্বরদী শহরের প্রাণকেন্দ্র বুকিং অফিস এলাকায় রেলওয়ের জায়গায় গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।
মূল বাজারের সামনেই গড়ে ওঠা বেশ কিছু দোকান উচ্ছেদ করা হয়। অভিযানের সময় ঈশ্বরদীর ঐতিহ্যবাহী ‘মাহবুব আহমেদ খান স্মৃতিমঞ্চ’ টি ভাঙা পড়ে। ঈশ্বরদীবাসীর আবেগ, অনুভুতি, পুরনো অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই মঞ্চটিকে ঘিরে। ভাষা আন্দোলন থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং তৎপরবর্তীকালে সকল আন্দোলন-সংগ্রামের ডাক দেওয়া হয়েছে এই মঞ্চ থেকে। যেকোনো রাজনৈতিক সভা, সমাবেশ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এই মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত হতো।
মাহবুব আহমেদ খান ছিলেন একজন ভাষা সৈনিক। তার স্মৃতিতে ১৯৯০ সালের জুলাই মাসে এই মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। খান পরিবারের সদস্যরা উচ্ছেদ অভিযানের সময় আপত্তি তুলে বলেন, আমাদেরকে আগে কেন অবগত করা হলোনা। ভাষার মাসে একজন ভাষা সৈনিকের নামে গড়া স্মৃতিমঞ্চ উচ্ছেদ বড়ই কষ্ট দায়ক। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা আফসোস করে বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে মঞ্চটি রেলওয়ের জায়গায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কষ্ট লাগলেও কিছু করার নেই।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ বলেন, ৯ ফেব্রুয়ারি বৃহষ্পতিবার ঈশ্বরদী-রূপপুর রেললাইন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। রেলমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এখানে আসার কথা আছে। ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনকে আধুনিকীকরণের জন্য উচ্ছেদকৃত রেলওয়ের এই জায়গাটিতে বিশ্বমানের টয়লেট, খুবই পুরনো বুকিং অফিসটি ভেঙ্গে নতুন করা, পার্কিং এরিয়া সম্প্রসারণসহ বেশকিছু কাজের উদ্বোধন ও ঘোষণা করবেন। মঞ্চ উচ্ছেদের ব্যাপারে আগে থেকে কাকে অবহিত করবো এ প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, মঞ্চ করার সময় রেলওয়ের কাছে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। লীজ নেয়া থাকলে সেই ঠিকানা বরাবর আমরা চিঠি দিতে পারতাম।