পাবনা প্রতিনিধিঃ
পাবনার সদর উপজেলার কাশিপুরে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা দেখার সময় তুফান হোসেন (৩০) নামের এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে আলোচিত হত্যাচেষ্টার মামলার আসামিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাহিরে। শহরের চাঞ্চল্যকর এই হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আসামিরা প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও গ্রেফতার করছে না পুলিশ।
এভাবে আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেরানোর ফলে বাদী পরিবারের মধ্যে নানা শঙ্কা বিরাজ করছে। পরিবারটির সদস্যদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। আবারও যেকোনো সময় এরা অপ্রতিকর ঘটনা সৃষ্টি করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বাদীরা। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
তবে পুলিশের দাবি- মামলা দায়েরের পর থেকে তারা জোর অভিযান চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে আসামিদের মধ্যে অন্যতম একজন আদালতে আত্মসমর্পণ করা করেছেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। খুব শিগগিরই বাকিরা ধরা পড়বে।
আহত তুফানের পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে কয়েকদিন আসামিরা পলাতক ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি আসামি এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরছেন। পুলিশকে আমরা জানালেও তারা তেমন কোনও অভিযান চালায় না। আসামিরা বিভিন্নভাবে আমাদের হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছে। এভাবে আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরলে বিচার পাবো কিভাবে? আমরা আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের মাধ্যমে সবোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই।’
এবিষয়ে পাবনার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ‘আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনার মুল আসামিদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এরপরও আপনি যখন নতুন করে তথ্য (আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরছে) দিলেন, এবিষয়ে অবশ্যই আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখবো এবং আসামিদের ধরতে পুলিশের জোরালো তৎপরা শুরু হবে।’
উল্লেখ্য, তুফানের সাথে আগের একটি মারামারির ঘটনা নিয়ে বিরোধ ছিল আসামিদের। সেই ঘটনার রেশ ধরে গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে পাবনার কাশিপুর বটতলায় বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা চলাকালে তুফানকে ডেকে একটু দূরে নিয়ে যায় আসামি রাশেদ, নিশান, রাজুসহ তার সহযোগীরা। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তুফানকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় তারা। এসময় শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরিকাঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়। তুফানের নাড়ি-ভুরিও বের হয়ে যায়।
এসময় তার চিৎকারে স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকরা। দীর্ঘদিন সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তুফান।
এঘটনায় তুফানের ভাই সুজন শেখ পাবনার সদর থানায় নিশান, রাশেদ, কালাম, সুইট, বিজয়, সাজুসহ ১১ জনের নাম এবং অজ্ঞাত আরও ২/৩ জন উল্লেখ্য করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পরের এক মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও পুলিশ কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি।