মোঃ নূরুল ইসলাম, চাটমোহর (পাবনা) ঃ
পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নে জমি দখল ধান কাটা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যে কোন মূহুর্তে এনিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেতে পারে বলে এলাকাবাসী জানান। ইতোমধ্যে ধান কেটে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ওই এলাকার আঃ মজিদ গং ও আলমগীর হোসেন গং এর মধ্যে জমি নিয়ে এই বিরোধ তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, হান্ডিয়াল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল করিম মাস্টার, তার ভাই আঃ রহমান, আঃ আজিজ, আঃ মজিদ, শামসুল আলম, নজরুল, নজির প্রাং গং ক্রয়সূত্রে মারিয়াস্থল মৌজার ৮ একরের বেশি জমির মালিক। দীর্ঘদিন ধরে তারা এই জমি ভোগদখল করে আসছেন। এসএ রেকর্ড ও আরএস রেকর্ড
তাদের অনুকূলে। এনিয়ে আদালতে মামলা চলমান। রবিউল করিম মাস্টার-আঃ মজিদ গং এর
অভিযোগ বিগত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর একটি আলমগীর গং এই জমি জবরদখলে মরিয়া
হয়ে ওঠে। যার ফলে তারা সশস্ত্র অবস্থায় জমি দখলের অপচেষ্টা করছেন। জানা গেছে, মারিয়াস্থল
মৌজার ১১ একর ৬০ শতাংশ জমির ডিএস রেকর্ড অনুযায়ী মালিক নুরুল হক সরকার গং।
১৯৫১ সালে ওই জমি নিয়ে খাজনার মামলা করেন সরকার পক্ষ। মামলায় সমস্ত জমি সরকারি হয়ে
যায়। পরবর্তীতে সরকার নিলামে ওই জমি বিক্রি করেন। এলাকার বাসিন্দা শশধর হলদার নিলামে জমি
ক্রয় করেন। এরপর শশধর হলদারের নামে এস এ রেকর্ড হয়। এরপর রবিউল করিম-আঃ মজিদ গং ৮ একরের
বেশি জমি ক্রয় করে ৪৪ বছর ধরে ভোগদখল করছেন। সম্প্রতি প্রতিপক্ষ আলমগীর হোসেন গং এই
জমি নিজেদের দাবি করে জবরদখলের অপচেষ্টা করছেন। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনার
সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, এই জমি নিয়ে যে কোন সময় সংঘাত-সংঘর্ষের সৃষ্টি
হতে পারে। ঘটতে পারে আইন শৃঙ্খলা পরি¯ি’তির অবনতি।
গত শনিবার (১০ মে) এই জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকার
দপ্তরে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুসা নাসের চৌধুরী,
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মনজুরুল আলম, এ্যাড. আঃ ছাত্তার, এ্যাড.এস এম আঃ রউফ,
বিএনপি নেতা অধ্যক্ষ আঃ রহিম কালু, গিয়াস উদ্দিন, আতাউর রহমান তোতা, আবুল কালাম
আজাদ, আবু হানিফ, রেজাউল করিমসহ দুই পক্ষের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এক পক্ষ
জমি চাষাবাদ করছে, তাদের নামে এসএ ও আরএস রেকর্ড। আইনগতভাবে ফসল তারাই পাবেন।
কিন্তু প্রতিপক্ষ আলমগীর গং এ সিদ্ধান্ত মানতে রাজি নন। তারা ধান কেটে নেওয়ার হুমকি
দিচ্ছে বলে অভিযোগ। এরআগে গত ৩ এপ্রিল চাটমোহর থানায় আরেকটি একটি বৈঠক
অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় আদালতে এনিয়ে মামলা চলমান। মামলা নষ্পিত্তি হলে এবং
যারা রায় পাবেন, তাদের পক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। থানার বৈঠকের পরই আলমগীর হোসেন গং গত ২
মে প্রায় ৫ বিঘা জমির ধান জোরপূর্বক কেটে নেয়। পরে অবশ্য থানা পুলিশ এনিয়ে পদক্ষেপ
নিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। বর্তমানে আলমগীর গং নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে অপরপক্ষ
অভিযোগ করেছেন। তারা ধান কেটে নেওয়াসহ জমি জবরদখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে
অভিযোগ। আলমগীর গং কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে জমি জবরদখল করার জন্য মরিয়া হয়ে
উঠেছে। তারা যে কোন মূল্যে এই জমি দখল ও ফসল কেটে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে বলে একাধিক
সূত্র জানায়। যদিও এ বিষয়ে আলমগীর হোসেনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া
যায়নি।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মনজুরুল আলম জানান, আদারতের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত দিতে
পারিনা। তবে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।