নাটোরে পুকুর খননে বাধা॥ ভেকুর আঘাতে ভ্যানচালকের পা বিচ্ছিন্ন

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের গুরুদাসপুরে পুকুর খননে বাঁধা দেওয়ায় ভেকুর বাকেটের আঘাতে সাইদুল ইসলাম (৩৬) নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। ভেকুর বাকেটের আঘাতে আঘাতপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির বাম পা প্রায় বিচ্ছিন্ন। অপরদিকে ভুক্তভোগীর বিচ্ছিন্ন প্রায় বাম পা কেটে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার ধানুড়া মোল্লাপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহত সাইদুল ইসলাম গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের ধানুড়া মোল্লাপাড়া এলাকার মোঃ ফজল আলীর ছেলে এবং পেশায় তিনি ভ্যান চালক। বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন গুরুদাসপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সাইফুল ইসলাম।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের পুরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা যাদু মাস্টার ও আনিসুরের পৃথক দুটি পুকুর খনন করতে মাটি কাটার ভেকু নিয়ে যাচ্ছিল পুকুর খননকারীরা। ভেকুটি ধানুড়া এলাকায় পৌছালে স্থানীয়রা ভেকু নিয়ে যেতে বাঁধা দেয়। পরে শামীম, জাহাঙ্গীর ও যাদু মাস্টার ভেকু চালককে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হুকুম দিলে ভেকু চালক ভেকু সামনের দিকে এগিয়ে নিতে থাকে। এসময় রাস্তার পাশে ছোট্ট বাচ্চাকে কোলে দাড়িয়ে থাকা সাইদুল ইসলামকে ভেকুর বাকেট দিয়ে সজোরে আঘাত করা হয়। এতে তার কোলে থাকা শিশু কোল থেকে ছিটকে মাটিতে পড়ে যায় এবং সাইদুলের বাম পায়ের গোড়ালি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে ঘটনাস্থলে থেকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। অন্যদিকে এ ঘটনার পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ভেকু চালক আব্বাস আলীকে আটক ও ভেকুটি জব্দ করে থানায় নেওয়া হয়।

রামেকে চিকিৎসাধীন সাইদুল ইসলামের আতœীয় ওয়াসিম আকরাম জানান, সাইদুলের বাম পাশের গোড়ালি জয়েন্ট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়া পায়ের দুইটি হাড় ভেঙ্গে গেছে। সন্ধ্যার পরে চিকিৎসকরা তার পায়ের অপারেশন করবেন বলে জানা গেছে।

পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, এই ঘটনায় ভেকু চালক আব্বাস আলীকে আটক ও ভেকু জব্দ করা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা আফরোজ জানান, আমি বা আমার অফিস অভিযুক্তদেরকে পুকুর খননে কোন অনুমতি দেয়নি। ঘটনাটি যেহেতু ফৌজদারি অপরাধ, কাজেই ফৌজদারি আইনেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে উপজেলা প্রশাসন থেকে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারকে সহযোগীতা করা হবে।