ওসমান গনি,বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি ঃ
পাবনার বেড়া উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে চিনাবাদাম চাষ। চরাঞ্চলের বেলে – দোআঁশ মাটি চিনাবাদাম চাষের জন্য খুবই উপযোগী তাই চরাঞ্চলের কৃষকরা তাঁদের বেলে – দোআঁশ মাটির জমিতে চিনাবাদাম চাষ করছেন। গত বছর চিনাবাদামের বাম্পার ফলন হওয়ায় এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর আরো অধিক পরিমাণ জমিতে চিনাবাদাম চাষ করছেন কৃষকরা।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায় , চরাঞ্চলে অর্থকারি ফসলের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চিনাবাদাম।প্রতিবছর উপজেলার চর নাকালিয়া , চর সাঁড়াশিয়া, চর নাগদাহ, চর পাইখন্দ , ঘিওর , আঁড়ালিয়া ও চর সাফুল্লা মৌজা সহ উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলের হাজার হাজার বিঘা জমিতে চিনাবাদাম চাষ করে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন কৃষকরা । কৃষকরা আরও জানান , অন্যন্য ফসলের তুলনায় চিনাবাদাম চাষে বেশি লাভবান হওয়ায় চিনাবাদাম চাষকে ঘিরেই স্বপ্ন বুনছেন তারা।
চর নাকালিয়া গ্রামের কৃষক আফান মাঝি বলেন , চর এলাকায় অন্যন্য ফসলের তুলনায়, চিনাবাদাম চাষে খরচ অনেকটাই কম , অল্প দিনে চিনাবাদাম চাষ করে অধিক লাভবান হওয়া যায় ফলন ভালো হলে বিঘা প্রতি ২০থেকে ২৫ হাজার টাকা লাভ হবে। আমি এবছর ৫ বিঘা জমিতে চিনাবাদাম চাষ করেছি , কোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুরে্যাগ না থাকলে বিঘা প্রতি ৭থেকে ৮ মণ চিনাবাদাম পাওয়া যাবে , যা নায্য মূল্যে বিক্রি করে সারা বছরের সাংসারিক চাহিদা মেটাতে পারব। চর নাগদাহ গ্রামের ইউপি সদস্য জাহিদ মোল্লা বলেন , ফাল্গুন মাসের শুরু থেকে চিনাবাদাম বোনা শুরু হয় , এবং জৈষ্ঠ মাসের প্রথম দিকে এ চিনাবাদাম পরিপক্ক হয়। চিনাবাদাম চাষে উপজেলা কৃষি অফিস থেকেও কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে যাঁর ফলে চরাঞ্চলের কৃষকরা এখন বাদাম চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন।তিনি আরও বলেন , চলতি মৌসুমে আমিও ৭ বিঘা জমিতে চিনাবাদাম চাষ করেছি , আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। সরেজমিনে আরও কথা হয় চর সাঁড়াশিয়া গ্রামের কৃষক আ.সাত্তার বেপারির সাথে তিনি বলেন, প্রতি বছর বন্যায় চরাঞ্চলে অনেক ক্ষতি হয় সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চরাঞ্চলের আশেপাশে জেগে উঠা চরে অনেক কৃষক চিনাবাদাম চাষ করে থাকেন , তবে এ বছর যমুনার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চরাঞ্চলের চিনাবাদামের নিচু জমি তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।এবছর তিনি ৩ বিঘা জমিতে চিনাবাদাম চাষ করেছেন বাদাম উঠানো পর্যন্ত খরচ হবে প্রায় ১৮ হাজার টাকা। ৩ বিঘা জমিতে ফলন ভালো হলে তিনি ২০ মণ চিনাবাদামের আশা করছেন। বাজারে ভালো চিনাবাদামের দাম মণ প্রতি বিক্রি হয় ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারলে মোট ৯০ হাজার টাকার চিনাবাদাম বিক্রির আশা করছেন এ কৃষক। খরচ বাদেও প্রায় ৭০ হাজার টাকা আয় হবে বলে জানান তিনি ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় , চলতি রবি মৌসুমে এ উপজেলায় ১৫ ‘শ ৬৫ হেক্টর জমিতে চিনা বাদাম চাষ করেছেন কৃষকরা ১শ’ থেকে ১শ’ ২০ দিনের মধ্যে চিনাবাদাম পরিপক্ক হয় ।বেড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত কবীর এ প্রতিবেদককে জানান , চিনাবাদাম চাষ একটি লাভজনক ফসল। গত বছরের তুলনায় এ বছর উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে চিনাবাদামের চাষ বেশি হয়েছে। অল্প খরচে বেশি লাভ করা যায় চিনাবাদাম চাষে। যার ফলে কৃষকরা চিনাবাদাম চাষে বেশি উৎসাহিত হচ্ছেন।চিনাবাদামের ফলন ও বাজার দর ভালো থাকলে চিনাবাদাম চাষিরা অনেক লাভবান হবেন বলে তিনি আশাবাদী।#
