হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
সুন্দরগঞ্জে ভোট কেন্দ্রে গোলাগুলি ও কনের বাড়িতে আটকে রাখা বর পক্ষকে উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ এবং গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার দুই মামলায় ৫৬০ জনকে অজ্ঞাতনাম আসামি করা হয়েছে। এছাড়া দুই মামলায় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ ৯৩ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। গ্রেপ্তার আতংকে অনেকে এখন বাড়ি ছাড়া।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন শান্তিরাম ইউনিয়নের পরান বয়েজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গোলা-গুলির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছয় বছর পর থানায় মামলা করা হয়। গত ৩ এপ্রিল ঘটনার সময় গুলিবিদ্ধ মো. শাহিন মিয়ার বাবা শান্তিরাম ইউনিয়ন ২ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের আমির মো. আইয়ুব আলী বাদী হয়ে মামলাটি করে। এতে ৩৪ জনের নাম উল্লাখ্যসহ ৫০-৬০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
শান্তিরাম ইউনিয়ন জাতীয় পাটির সভাপতি প্রভাষক মো. শরিফুল ইসলাম শাহিন, শান্তিরাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবিএম মিজানুর রহমান খোকন, শান্তিরাম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি সুরুজিত কুমার প্রামানিক, সাধারন সম্পাদক মো. আনিছুর রহমান, উপজেলা জাতীয় পাটির সহ-সভাপতি মাওলানা মো. আবুল হোসেনসহ জাতীয় পাটি ও আওয়ামীলীগের ৩১জন নেতাকর্মীর নাম রয়েছে। অপরদিকে কনের বাড়িতে অবরুদ্ধ বরপক্ষকে উদ্ধার করতে গিয়ে জনতার কবলে উপজেলা নিবার্হী অফিসার, সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
ছাপড়হাটী ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপড়হাটী হাজিপাড়া গ্রামের মো. দুখু মিয়ার কন্যার সঙ্গে পাশ্বববর্তী রামজীবন ইউনিয়নের মো. আয়নাল হকের ছেলে মো. সবুজ সরকারের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে গিয়ে তুচ্ছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে বরপক্ষ অবরুদ্ধ হয়। গত ৫ এপ্রিল অবরুদ্ধ বরপক্ষকে উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দেয় জনতা। এনিয়ে ৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। এতে ছাপড়হাটী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. দুদু মিয়াসহ ৫৯ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে।
ছাপড়হাটী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কনক কুমার গোস্বামী বলেন, জনপ্রতিনিধিদের গুরুত্ব এখন অনেকটা কমে গেছে। কাউরে কথা কেউ শোনে না বা মানে না। জনগণের উপকার করতে গিয়ে এখন জনপ্রতিনিধিকে আসামি হতে হচ্ছে।
থানার ওসি মো. আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, প্রশাসন ও আইনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ নেই। মানুষ এখন প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে গেছে। এতটা হিংস্র হতে পারে মানুষ তা জানা ছিল না। অন্যয়কারিরা তো অবশ্যই দূর্বল। দুই মামলার কোন আসামি এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি।
