সাকিব আল হাসানের ১৮ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে ছাপিয়ে গেছে তার মাত্র ছয় মাসের রাজনৈতিক জীবন। এই স্বল্প সময়েই তার জীবনে এসেছে বড় ধরনের ওলট-পালট। গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় বিতর্কিত ছবি ও দর্শকদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে নিজের পথকে আরও জটিল করেছেন সাকিব। অভ্যুত্থানের পর তার বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে হত্যা মামলা, উঠে এসেছে দুর্নীতির অভিযোগ।
সম্প্রতি একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাকিব তার রাজনৈতিক জীবন নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি মনে করেন, রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত তার ভুল ছিল না এবং এখনও নির্বাচনে দাঁড়ালে তিনিই জিতবেন।
রাজনীতিতে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিয়ে সাকিব বলেন, “রাজনীতিতে যোগ দেওয়া যদি আমার জন্য ভুল হয়, তবে ভবিষ্যতে অন্য কেউ যোগ দিলেও তা ভুল হবে। ডাক্তার, ব্যারিস্টার, ব্যবসায়ী—যে কেউ রাজনীতিতে আসতে পারে। এটা প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। ভোট দেওয়া বা না দেওয়া জনগণের সিদ্ধান্ত। আমি যখন এসেছিলাম, তখন আমার উদ্দেশ্য ছিল মাগুরার মানুষের জন্য কাজ করা। আমি বিশ্বাস করি, তারা আমাকে চেয়েছিল।”
নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার এলাকায় সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আবার দাঁড়ালেও আমিই জিতব। আমি মাগুরার মানুষের সেবা করতে চেয়েছিলাম, তারা আমাকে সুযোগ দিয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত, আমি তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি, এটা আমি মেনে নিয়েছি।”
রাজনীতিতে আসার কারণ ব্যাখ্যা করে সাকিব বলেন, “পরিবর্তন আনতে হলে সিস্টেমের ভেতরে আসতে হয়। বাইরে থেকে সিস্টেম বদলানো সম্ভব নয়। যারা দেশ চালাচ্ছে, তারা সিস্টেমের বাইরে থাকলে কি কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনতে পারত?”
তিনি আরও বলেন, “যারা আমার রাজনীতিতে আসাকে ভুল বলে, তারা বেশিরভাগই মাগুরার ভোটার নয়। মাগুরার মানুষ ভিন্নভাবে ভাবে। আমি বিশ্বাস করি, আজ নির্বাচনে দাঁড়ালে তারা আমাকেই ভোট দেবে, কারণ তারা বিশ্বাস করে আমি তাদের জন্য কিছু করতে পারি।”
ছয় মাসের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে সাকিব বলেন, “নির্বাচনের পর আমি মাত্র তিন দিন মাগুরায় ছিলাম। বাকি সময় ক্রিকেট খেলেছি আর দেশের বাইরে ছিলাম। রাজনীতিতে পুরোপুরি জড়ানোর সময়ই পাইনি।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, “তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘রাজনীতি করতে হবে না, ক্রিকেটে মন দাও।’ আমি সেই পরামর্শ মেনে চলেছি। আমার পরিকল্পনা ছিল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর ধীরে ধীরে রাজনীতিতে মনোযোগ দেওয়া। কিন্তু আমার মূল লক্ষ্য ছিল মানুষের জন্য কাজ করা।”