সুজন মৃধা, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ॥ ছোট বেলায় বিভিন্ন বাসা-বাড়ির কাজ করতেন। দেখাশুনা করতেন অন্যের গরু। অর্থের অভাবে দ্বিতীয় শ্রেণীর পর আর লেখাপড়া করা সুযোগ হয়নি তার। নিজের কষ্টের কথা মনে করে, অপরের কষ্টে নিজেকে বিলিয়ে দেন তিনি। নিজের জমি নেই, শারীরিক ভাবে অক্ষম বয়োবৃদ্ধ বাবা-মা কে নিয়ে থাকেন অন্যের ভিটা ভাড়া নিয়ে। বলছি এক হোটেল কর্মচারী মো. মিন্টু মিয়ার কথা। বর্তমানে তিনি কলাপাড়া লঞ্চঘাট এলাকায় কালামের হোটেলে কাজ করেন।
মিন্টু মিয়া অনেক বছর আগ থেকে বিভিন্ন সময়ে মানষিক ভারসাম্যহীনদের দেখা শুনা করতেন। সম্প্রতি অজ্ঞাত পায়ে পঁচন ধরা মানষিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে নিজ দায়িত্বে কলাপাড়া হাসপাতালের চিকিৎকের পরামর্শে ঔষধ কিনে পায়ের ক্ষত জায়গায় প্রায় তিনদিন পরিস্কার করে কিছুটা সুস্থ করে তুলেন। এরপর কোন উপায় না পেয়ে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে চাইলেন সহযোগীতা। যোগাযোগ করতে বললেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে কলাপাড়া হাপাতালে ভর্তি সহ নগদ অর্থ দিয়ে করলেন সহযোগীতা। বর্তমানে মানষিক ভারসাম্যহীন মহিলা কলাপাড়া স্বাস্থ্য কম্প্রেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মিন্টু মিয়া জানান, নিজের উপার্জনের টাকা দিয়ে সাধ্যমতে মানষিক ভারসাম্যহীনদের প্রায় খাবার কিনে দেই। এছাড়া শুক্রবার হোটেল থেকে ছুটি নিয়ে মানষিক ভারসাম্যহীনদের গোসল করা, চুল ও নক কাটা সহ মানুষের কাছ থেকে চেয়ে আনা পুরনো কাপড় পরিধান করিয়ে দেই। মঙ্গলবার পায়ে ক্ষত নিয়ে কলাপাড়া হাপাতালে ভর্তি হওয়া অজ্ঞত মহিলার পরিচয়ের জায়গায় আমার নিজ ঠিকানা ব্যবহার করতে হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, মিন্টু মিয়ার কাছ থেকে এ মানষিক ভারসাম্যহীন পায়ে পচন ধরা রোগীর খবর পাই। খবরটি শোনার পর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদারকে ফোন দিলে তিনি তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এছাড়া কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ পাঁচ হাজার টাকা প্রদান করি।