মৌলভীবাজার শহরের অন্যতম জনবহুল পয়েন্ট চৌমুহনা ও শাহ মোস্তফা রোড পয়েন্টের শেষ দিকের বেশ কিছু অংশ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কিছু কর্মকর্তার যোগাযোগীমূলে ভোগ দখল করে আসছেন। ভূমির উপর দোকান-পাঠ, বাসাবড়ি নির্মান করে ব্যবসা বানিজ্য ও ভাড়া আদায় করছেন। এসব জেনেও রীতিমত না জানার ভান করছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। উচ্ছেদ নয় বরং তাদের নিকট থেকে মোটা অংকের ফায়দা লুটছে। বিগত ২০২০ সালের জানুয়ারীর তথ্যমতে- কাজের জন্য ৭টি রোড রোলার রয়েছে। তন্মধ্যে ৪টি সচল,৩টি অচল অবস্থায় রয়েছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারী থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত রোড রোলার থেকে প্রাপ্ত আয় ৭ লাখ একচল্লিশ হাজার টাকা। অপরদিকে উল্লেখিত সময়ে রোড রোলার ডিপার্টমেন্টাল যন্ত্রপাতি মেরামতের অন্য ব্যায় ১৫ লাখ চুরান্নব্বই হাজার পাঁচশত একুশ টাকা। অর্থাৎ সরকারের এই অফিসের আয়ের চেয়ে ব্যয় দ্বিগুন। রোড রোলারের প্রতিদিনের ভাড়া ঠিকাদারগনের নিকট থেকে ৩ হাজার টাকা খাতা পত্রে দেখানো হলেও প্রকৃত পক্ষে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৫ হাজার টাকা করে। রোড রোলার থেকে আয় ব্যয়ের যে হিসাব দেখানো হচ্ছে তাও সঠিক নয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। এভাবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও ট্রাক ভাড়া দেওয়ার টাকা হরিলুট হচ্ছে। বছরের পর বছর সরকারের রাজস্ব কর্তৃপক্ষ হরিলুট করে খাচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী কর্মঘন্টা সকাল ৯ ঘটিকা হতে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত। অথচ সকাল ১০ টা দূরে থাক ১১ টা কিংবা ১১:৩০ মিনিটে তাদের অফিসে গিয়েও মহারতিদের দেখা পাওয়া প্রায় দু:ষ্কর। অপরদিকে, আবার দুপুরে লাঞ্চ ব্রেক ১:৩০ বের হলেও অনেক কর্মকর্তা আর অফিসে ফেরেন না। আবার মাঝে মধ্যে তাদের অনেককে’ই রাত ৯/১০ টা পর্যন্ত বাতি জালিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক অনেক কর্মকর্তা জানান -সিন্ডিকেট চক্রের জন্য অপেক্ষা এবং টাকার ভাগ ভাটোয়ারার করার জন্য উনারা এতরাত পর্যন্ত অফিসে বসে থাকেন। সড়ক ও জন পথ প্রায় সময় নিম্নমানের কাজ করিয়ে থাকে। হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার সংরক্ষিত আসনের সাংসদ সৈয়দা জহুরা আলাউদ্দিন এসব নি¤œ মানের কাজ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। গত ২০২০ সালে দুই সাংবাদিক মো:জাফর ইকবাল ও এ,কে অলক মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের কিছু তথ্য তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চান। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করে অপরিপূর্ণ তথ্য দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসে নিয়ম অনুযায়ী আপিল করেন। আপিলের নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর সার্কেল অফিসে গিয়ে জানা যায় আরো অনেক চ্যাঞ্চলকর ঘটনা। সে সময় করোনায় আক্রান্ত সার্কেল চিকিৎসার জন্য ছুটিতে থাকা অবস্থায় তথ্য সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে সুষ্ট বিভাগীয় তদন্ত ছাড়া স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনায় ৪ জনকে চাকুরীচুত্য করা হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সার্কেলের স্বাক্ষর জালিয়াতির সাথে নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিসের কর্মকর্তা জড়িত থাকতে পারেন বলে অফিসের অনেকের ধারনা বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনার পর থেকে, সাংবাদিক পরিচয় দিলেই গেইটে নিতে হয় নির্বাহী প্রকৌশলীর পাস। সাংবাদিক ভীতির কারনে অফিসে প্রবেশ করতে গেইটে নির্বাহী প্রকৌশলীর পাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে সুত্রে জানাগেছে। জনৈক সাংবাদিক একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী দুলাল মিয়াকে স্যার না ডাকায় নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরাগ ভাজন হতে হয়। এছাড়াও সাংবাদিক তথ্য অধিকারে তথ্য চাওয়ায় চাকুরী হারায় সড়ক ও জনপথ বিভাগে সার্কেল অফিসের ৪জন কর্মচারী। এভাবে মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের অফিসে চলছে অনিয়ম দূনীর্তির মহা উৎসব। সর্বশেষ- জ্বালিয়াতি ও দূর্ণীতির সংবাদ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকাসহ কয়েকটি অনলাইনে প্রকাশিত হওয়ার পর চলছে বিভিন্ন লবিং ও তদবির। স্বার্থনেসী মহলের যেন ‘কাটা গায়ে নুনের ছিটা লেগেছে’। যারা অসাধু এই কর্মকর্তাদের থেকে বিভিন্ন রকম সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছিল তাদের ‘যেন আঁত ঘা লাগা অবস্থা’।