নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানা গভীর রাতে রক্ত দিয়ে এক মুমূর্ষ রোগীর প্রাণ বাঁচাতে ছুটে যান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে।
কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, বুধবার উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের কাউছা বেগম (২৩) নামে এক নারী হাসপাতালে ভর্তি হন। গত ৪০ দিন আগে ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ওই নারীর সিজার সম্পন্ন হয়। এর কয়েকদিন পরে তিনি বাড়িতে ফিরেন। বুধবার হঠাৎ করে তার শরীর থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরে তার পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার শরীরে রক্ত শূন্যতা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে পরিবারের লোকজন ওই নারীকে বাঁচাতে রক্তের জন্য দিগি¦দিক ছুটতে থাকেন। এসময় ইউএনও সোহেল রানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিক রক্ত দিতে হাজির হন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। পরে তিনি রক্ত দেন ওই নারীকে। ইউএনওর রক্ত দেয়াকে কেন্দ্র করে “কলমাকান্দা পরিবার” নামে ফেসবুক গ্রæপ একটি পোস্ট দেয়। কিছু সময়ের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ভাইরায় হয়ে যায়। আর এ ঘটনায় উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন ইউএনও সোহেল রানাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানা জানান, বুধবার রাত ১১টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে দেখতে পাই এ পজিটিভ রক্তের অভাবে এক নারী মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আর তখনই ওই নারীকে বাঁচাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত হয়ে চিকিৎসাধীন কাউছা বেগমকে এক ব্যাগ রক্ত দিই।
কলমাকান্দা বøাড ডোনেশন সোসাইটির সদস্য সজীব জানায়, তিনি ইউএনও সোহেল রানাকে বলেন, স্যার অনেক জায়গায় যোগাযোগ করেও এ পজিটিভ রক্ত পাচ্ছিনা। এসময় সজিবের কথা শুনে ইউএনও বলেন, আমার এ পজিটিভ রক্ত। আমি ওই রোগীকে রক্ত দিব। আর এই বলে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ওই নারীকে রক্ত দিয়ে আশঙ্কা মুক্ত করেন। কাউছা বেগম বর্তমানে সুস্থ্য আছেন।
কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আল মামুন যুগান্তরকে বলেন, ইউএনও মহোদয় ওই নারীকে রক্ত দিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে রক্ত দানের সংস্কৃতিকে বেগবান করেছেন।