ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঈশ্বরদীসহ আশেপাশের এলাকায় অস্বাভাবিক আবহাওয়া বিরাজ করছে। দিনের বেলায় চৈত্র মাসের মতো গরম অনুভূত হলেও রাতের বেলায় শীতে কাঁথা-কম্বল দিয়ে ঘুমাতে হচ্ছে। সন্ধ্যার পর হতে শুরু হয় শীতের প্রভাব। এদিকে শুক্রবার (২৮ মার্চ) ঈশ্বরদীর ওপর দিয়ে বইছে মাঝারি তাপপ্রবাহ। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং বাতাসের আদ্রতা ৩২ শতাংশ। আবহাওয়ার এ তারতম্য প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বিরাজ করছে। যেকারণে দেখা দিয়েছে নানা রোগ-বালাই ।
চলতি মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে ঈশ্বরদীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় মৃদু তাপপ্রবাহ। গত ১৬ মার্চ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড হয়। ২০ মার্চ থেকে তাপমাত্রা কমতে থাকে। এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রী এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৪ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ২৫ মার্চ থেকে ফের তাপমাত্রা বেড়ে ৩৪ ডিগ্রী এবং ২৬ মার্চ সর্বোচ্চ ৩৫ দশমিক ২ ডিগ্রী এবং সর্বনিম্ন ১৯ দশমিক ৫ ডিগ্রী রেকর্ড হয়েছে। বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২২ দশমিক ৮ ডিগ্রী রেকর্ড হলেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রী রেকর্ড হয়েছে।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলে গত এক সপ্তাহ ধরে দিনের বেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭-৩৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। ফলে দিনের বেলায় গরম অনুভূত হচ্ছে। আর সন্ধ্যার পর তাপমাত্রা কমে গেলে শীত বাড়তে থাকে। যা সকাল ৭/৮ টা পর্যন্ত থাকে। আবহাওয়ার তাপমাত্রা পর্যালোচনা করে আবহাওয়াবিদরা বলছেন এটা অস্বাভাবিক।
এ ব্যাপাওর ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন বলেন, চৈত্র মাসে অস্বাভাবিক আবহাওয়া মূলত: জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য। দিনের বেলা তাপ বিকিরণ কম হয় বলে গরম লাগে। আর বিকালের পর থেকে তাপ বিকিরণ বেশি শুরু হলে ঠান্ডা লাগে। তবে দীর্ঘদিনের মধ্যে ঈশ্বরদী অঞ্চলে আবহাওয়ার এমন তারতম্য দেখা যায়নি।
এদিকে ঠান্ডা-গরমের জন্য ভাইরাস জ্বর, সর্দি, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। ঈশ্বরদী উপজেলা হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন দুই শতাধিক শিশু ও বৃদ্ধ চিকিৎসা নিতে আসছে। এদের মধ্যে যাদের অবস্থা ভালো নয় তাদের ভর্তি করে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও শিশু চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বারে রোগীর ভীড় দেখা গেছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহেদুল শাহরিয়ার শিশির জানান, বিরূপ আবহাওয়ার কারণে বিশেষ করে শিশুরাই বেশি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি শিশুদের গরম কাপড় পড়ানো আর সন্ধ্যার পর প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না করার পরামর্শ দিয়েছেন। ##