কুদ্দুস হটাও এলাকা বাঁচাও। কুদ্দুসকে না বলুন। এমন সব ফেস্টুন হাতে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে মুহুর্তের মধ্যে জড়ো হন কয়েক হাজার নারী-পুরুষ। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেনের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে সাংসদ কুদ্দুসকে দল থেকে পদচ্যুত করার দাবি জানান আওয়ামীলীগ ও সকল সহযোগি অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এরআগেও উপজেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশন কলম বিরতি ও কালো ব্যাজ ধারণ করে ঘটনার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানায়। তাছাড়া উপজেলা ও পৌর আ’লীগের নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন নেতাকর্মিরা। সোমবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ এসোসিয়েশন নাটোর জেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে জেলার বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ যোগ দেন। প্রথমে গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে চাঁচকৈড় থেকে পৌরসভা পর্যন্ত দীর্ঘ ১ কিমি সড়ক জুড়ে মানববন্ধন হয়। একই সাথে উপজেলা পরিষদ চত্বরে সমাবেশ করেন এসোসিয়েশনের নেতারা।
এসময় হামলার শিকার উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, উপজেলার রায়পুর গ্রামে পুকুর খননকে কেন্দ্র করে আমাকে সালিশি বৈঠকে দুই পক্ষ আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য সেখানে যাই। এসময় একদল মানুষ বলে ওঠে- এখানে কিসের সালিশ হচ্ছে, এমপি সাহেব তো এখনই বলে গেল এখানে সালিশ হবেনা। যে সালিশ করতে আসবে তাকে মেরে পুতে ফেলতে হবে। এই বলে একজন আমার ওপর আক্রমণ করে। আমি ছুটাছুটি করতে থাকি। সাংসদ কুদ্দুসের মদদে সবুর মিয়াসহ বেশ কয়েকজন আমাকে মারধর করেন। লোকজন টেনেহেচরে আমাকে গাড়িতে তুলে দেয়। একজন পুলিশ অফিসার আমার প্রাণ রক্ষায় আপ্রাণ চেষ্টা করেন।
গুরুদাসপুর পৌরসভার মেয়র উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহনেওয়াজ আলী বলেন, পৌর নির্বাচনে নৌকার ভোট করায় সাংসদ কুদ্দুস উপজেলা চেয়ারম্যানের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। বিদ্রোহীর প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে পরাজিত হয়ে সাংসদ এসব কর্মকান্ড চালাচ্ছেন। সেই রেষেই সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে চেয়ারম্যানের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
সমাবেশে হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ উপজেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশন নাটোর জেলা শাখার সভাপতি লালপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসাহক আলী, সাধারণ সম্পাদক সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক, বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী, জেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক সরকার এমদাদুল হক, গুরুদাসপুর পৌর আ’লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মো. জাহিদুল ইসলাম প্রমূখ।
জানা যায়, ৫ ফেব্রæয়ারী শুক্রবার দুপুরে চেয়াম্যানের দুলাভাই আব্দুল মান্নান বাদি হয়ে সাংসদ সমর্থক ৯জনকে অভিযুক্ত করে গুরুদাসপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আসামিরা জামিনে মুক্ত আছেন। তবে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
নাটোর জেলা আ’লীগের সভাপতি স্থানীয় সাংসদ আব্দুল কুদ্দুস বলেন, তিনি এই ঘটনায় সম্পৃক্ত নন। তাকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।