এনামুল হক টগর
শয়তান মানব দেহের ভেতরে অহংকার ও অশুভ নির্ণয়ে,
এমন ভাবে মিশে হিংসা ও বিদ্বেষ ছড়ায় সূক্ষ্মভাবে বিভ্রান্ত বিস্ময়!
মানুষ বুঝতেও পারে না সেই কৌশলের রহস্যে ভেদ যন্ত্রণা!
জীবন সংসারে তাই এতো অবিশ্বাস দুঃখ পরিতাপ ও বেদনা।
ইবলিস সুযোগ পেলেই মানব শরীর থেকে রক্ত ঝরায়,
দেশ ও সমাজের কল্যাণকে ক্ষত বিক্ষত করে ভীষণ অসহায়!
দেহ থেকে মোহ ও মায়াবী খান্নাস পৃথক
আর আলাদা করা বড়ই কঠিন তাত্ত্বিক।
কিভাবে দাস হয়ে মহাপ্রভুকে একা একা ডাকবে অবাক,
জীবন চৈতন্যে অলৌকিক ও ঐশ্বরিক?
শয়তানতো শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে আছে কুমন্ত্রনার ফাঁকে।
আল্ কুরআনের বাণীতে আল্লাহ বলেন পুতঃ পবিত্র পাকে,
তুমি যখন পৃথক হয়ে আমাকে,
একা একা ডাকবে ধ্যানের আলোকে,
তখন তোমার হৃদয় প্রেমের আলোতে দেখবে আমাকে!
গুপ্তজ্ঞান ও ঐশী নূরের আলোকে অবয়ব জাতপাক!
তোমার ডাকে সাড়া দিবো প্রশান্ত আত্মার মিলন ঐক্যে!
মানুষ যখন মহান স্রষ্টাকে ডাকতে থাকে
খান্নাস ও জীবাত্মাও তখন মানব রক্তে মিশে উয়াসা দিতে থাকে,
প্রতারণা ও ছলনা করে শরীরের ফাঁকে ফাঁকে!
দেহের ভেতর দুজন দুইরূপে ডাকলে,
স্রষ্টার জবাবও মিলবে না সরল,
আর সত্যের পরিচয় দর্শনও হবে না মঙ্গল!
একা হওয়ার একটি মাত্র আদেশ আরাধনা
যার রহস্যের নিগুঢ়ে প্রেমের আলোকপ্রাপ্ত ধ্যান ও জ্ঞান!
আদেশ হলো মহাত্মার নূর থাকে অণুত্মা,
মহানূরের ক্ষুদ্র নূরই এক মহারত্ন মানব দেহে বিজ্ঞ আত্মা!
তপস্যা ও গবেষণায় আল্লাহর হাকিম নাম
চেনো ও জানো,
চিন্তে পারলেই পাবে মহাজ্ঞানের চৈতন্যে আর মহাপ্রেমের একক দর্শন চিরন্তন!
তোমার রবের জিকির ও স্মরণে স্মরণে
একনিষ্টভাবে মগ্ন হও তাপস ধ্যানের চিত্ত নয়নে।
মৃত্যুর পূর্বেই নফসকে মুসলমান করে নাও
মিলনের অমীয় স্বাদ গ্ৰহণ করে ধীরে ধীরে আগাও!
এক সময় রবের প্রেমে সমুদয় অস্তিত্ব হারায় সালেক!
আশেক পর্দার গভীরেই সে খুঁজে পায় মাশুক প্রেমের সত্য বিবেক!
মহাচৈতন্যের অখন্ড আল্লাহর পথেই যেন জীবনের প্রজ্ঞাময় ঝলক!
সমগ্র অন্তররাজ্যেই যেন আল্লাহ জিকির আল্লাহ বন্ধু!
পদবাচ্য সর্বদাই ওলি-আল্লাহ ওলি-আল্লাহ বন্ধু!
ফানা-ফিল্লার অভিনব পুণজীবন সুফির স্তরে বিভোর সন্ধি!
সাধ্য সাধনায় সুফির তপস্যার আমিত্ব,
আল্লাহর আমিত্বে মিশে একাকার হয় ওলির অসীমত্ব!
পরিচয় লাভে আদম অবয়ব সুরত মিলনে সেজদার এক নিগূঢ় তত্ত্ব!
সদর্থক বাকা-বিল্লাহর উপর স্তরেই যেন ফানাউল ফানা,
কঠিন সাধনায় মায়াবী খান্নাস দেহ থেকে পৃথক করে মানব হয় স্বাধীন !
এক সময় ফেরেস্তাদের সেজদা কার্য শেষে করে বসে নিরালা,
হঠাৎই আদম (আঃ) শরীরে একটু গরম অনুভব হলো!
আর মহান আল্লাহ পাক কে সে বললো,
আমিই কি সকল সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী আলো!
আল্লাহ বললেন উপরের দিকে তাকাও সিরাজুম মনিরার আলো!
আদম (আঃ) উপরের তাকাতেই
দেখলেন,
আরশে লেখা আছে লা-ইলাহা
ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।
আরো লেখা আছে আমিরুল মোমেনীন হযরত আলী (রাঃ)!
হযরত ফাতেমা খাতুন জান্নাত রাদি
আল্লাহু তাআলা আনহা নারীদের সর্বদা!
হযরত সায়্যিদিনা ইমাম হাসান (রাঃ),
হযরত সায়্যিদিনা ইমাম হোসাইন (রাঃ),
বেহেস্তে যুবকদের সর্দার!
তখনই আদম (আঃ) ও মা হাওয়ার মনে
একটু হিংসা অনুভব হলো,
তখন থেকে ইবলিস উয়াসার সুযোগ পেলো।
আর সেই থেকেই বিদ্বেষ রক্তপাত জীবন গরল,
তারপরও কিছু মুমিন এক আল্লাহর প্রেমে সন্তোষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে প্রত্যাবর্তন করবে জান্নাতে এলেম।
এমন সময় দেখবে মহান আল্লাহ উদয়
তাঁর দাসকে ডাকছে মুক্তির বার্তায়,
হে প্রশান্ত আত্মা তোমার রবের দিকে প্রত্যাবর্তন করো সদয়,
তোমার দেহের গভীরেই আমার সত্তা
আমার নিদর্শন ও অত্মমহিমার গৌরব অখণ্ড মহাত্মা।