মোঃ হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
চরের কৃষক-কৃষাণীরা এখন মহাব্যস্ত সময় পার করছে। নানাবিধ ফসলের পরিচর্যায় ছেলে মেয়েসহ মাঠে কাজ করছে কৃষকরা। তিস্তার ধূ-ধূ বালুচরে গত তিন বছর ধরে তরমুজ চাষাবাদে ঝুকে পড়েছে কৃষকরা। তরমুজসহ নানাবিধ ফসলে ভরে উঠেছে তিস্তার চরাঞ্চল। জমি জিরাত খুঁয়ে যাওয়া পরিবারগুলো চরে ফিরে চাষাবাদে ঝুকে পড়েছে। দীর্ঘদিন পর নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়া জমির ফসল ঘরে তুলতে পেরে খুশি কৃষকরা। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত রাক্ষুসি তিস্তা নদী এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। চরাঞ্চলের হাজারও একর জমিতে এখন চাষাবাদ করা হচ্ছে নানাবিধ প্রজাতির ফসল। বিশেষ করে তরমুজ, গম, ভুট্টা, আলু, বেগুন, মরিচ, পিঁয়াজ, রসুন, টমেটো, বাদাম, সরিষা, তিল, তিশি, তামাক, কুমড়াসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষাবাদ করা হচ্ছে। কথা হয় বেলকা ইউনিয়নের নবাবগঞ্জ চরের তরমুজ চাষি মজনু মিয়ার সাথে। তিনি ২ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছে। প্রতি বিঘা জমিতে ছোট বড় কমপক্ষে ১ হাজার তরমুজ পাওয়া যাবে। স্বল্প খরচে অধিক লাভের আশায় চরের কৃষকরা এখন তরমুজ চাষে ঝুকে পড়েছে। তিনি বলেন, আগাম জাতের তরমুজের দামও ভাল। আশা করা যাচ্ছে, প্রতি বিঘা জমিতে ৩০ হাজার হতে ৪০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি হবে। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয় ৫ হাজার হতে ৬ হাজার টাকা। বাজারে প্রতিটি তরমুজ ৬০ হতে ২০০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। দেশী তরমুজের চাহিদা অনেক বেশি। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ১৬০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় বেশি। বেলকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ জানান, চরাঞ্চলের জমিতে এখন নানাবিধ ফসলের ভাল ফলন হয়। সে কারণে চরের মানুষ এখন মহাখুশি। কৃষি এখন চরবাসিকে স্বাবলম্বী করে তুলেছে। গত বছর তরমুজ বিক্রি করে অনেকে লাভবান হয়েছে। সে কারণে চলতি মৌসুমে অনেকে তরমুজ চাষে ঝুকে পড়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ জানান, পলি জমে থাকার কারণে চরের জমি অনেক উর্বর। যার কারণে যে কোন প্রকার ফসলের ফলন ভাল হয়। তিনি বলেন, চরের কৃষকরা নিজে পরিজন নিয়ে জমিতে কাজ করে। সেই কারণে তারা অনেক লাভবান হয়। চরের জমি তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী।