রূপপুর পারমাণবিকের কাজের অগ্রগতি ও গুণমান সন্তোষজনক বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। দুই দিন ব্যাপী দেশের সর্ববৃহৎ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি, মনিটরিং ও গুণগতমানের দ্বিপাক্ষিক পর্যবেক্ষণ ও বেশ কয়েকটি সভা শেষে বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারী) এক সাক্ষাতকারে মন্ত্রী একথা জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, অগ্রগতি ও গুণমান পর্যবেক্ষণ শেষে প্রকল্পের ভবিষ্যত কাজের বিভিন্ন বিষয়ে একমত হওয়ার জন্য রাশিয়ানদের সাথে গত দুই দিনে অনেকগুলো সভা হয়েছে। এটি রুটিন ওয়ার্কের একটি অংশ হলেও বৈশ্বিক মহামারীর কারণে এর আগে বসা হয়নি। পরবর্তী ধাপের কাজগুলো নিয়ে এখন ঘন ঘন বৈঠক এখানে বা রাশিয়ায় হতে পারে। রাশিয়ার কারখানায় যেখানে যন্ত্রপাতি নির্মাণ হচ্ছে, এগুলো আরো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের কথা বলা হয়েছে বলে জানান তিনি। রাশিয়ায় যন্ত্রপাতি নির্মাণ কারখানায় আমাদের এক্সপার্টরা অবস্থান করছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, হাই প্রোফাইল টিম নিয়ে আমাদের ১-২ মাসের মধ্যে পর্যবেক্ষণের জন্য রাশিয়ায় যাওয়ার কথা রয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর জানান, মিটিংগুলোতে প্রথমত: ২০২০ সাল পর্যন্ত নির্ধারিত কাজগুলো কিভাবে এবং কি পরিমাণ সম্পন্ন হয়েছে, কোথায়ও কোন গ্যাপ আছে কিনা সেগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়। দ্বিতীয়ত: সিডিউলকে মাথায় রেখে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ সম্পন্নের লক্ষ্যে ২০২১ সালে কি কি কাজ হবে, এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সিডিউল মোতাবেক প্রাথমিক কাজগুলো সম্পন্নের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য উভয় পক্ষ থেকে যে ধরণের পদক্ষেপ গ্রহন করা দরকার সেসব বিষয় চুড়ান্ত হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক মনিটরিং রুটিন ওয়ার্কের অংশ হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্ধারিত সময় ও গুণমান বজায় রাখার জন্য রাশিয়ার ঠিকাদার ও সাব-ঠিকাদারদের সভাগুলোতে উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছিল। ঠিকাদারদের কাজের গুণমান বজায় রাখতে নিয়মিত সুপারভিশন এবং আরো জনবল বৃদ্ধির জন্য বলা হয়েছে। ২০২০ সালের কাজের অগ্রগতির বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতে কাজ একদিনও বন্ধ থাকেনি। এজন্য আমরা উভয় পক্ষই খুশী।
প্রসঙ্গত: বাংলাদেশ ও রাশিয়ার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ও নিউক্লিয়ার বিশেষজ্ঞের অংশ গ্রহনে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে দ্বিপাক্ষিক পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং এর খবর ইত্তেফাকে প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশ পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং রাশিয়ার পক্ষে রাষ্ট্রিয় পারমাণবিক সংস্থা রোসাটমের ফাস্ট ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল ও এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের প্রেসিডেন্ট লকসিন। বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এবং রাশিয়ার পক্ষে এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট, রোজ এনার্গোএটম, রশিয়ার নিউক্লিয়ার রেগুলেটারী বডি এবং বিভিন্ন এরিয়ার নিউক্লিয়ার বিশেষজ্ঞ কাজের সার্বিক অগ্রগতি, মনিটরিং এবং গুণগতমান পর্যবেক্ষণ বিষয়ে বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত একাধিক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী, রোসাটমের ফাস্ট ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল ও এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের প্রেসিডেন্ট, প্রকল্প পচিালক ছাড়াও রাশিয়ান নিউক্লিয়ার রেগুলেটারী বডির মি: ফেরা পান্তভ, রোজ এনার্গোএটমের মি: পেট্রোভ, বিজ্ঞান ও প্রযু্িক্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রূপপুর প্রকল্প) মোহাম্মদ আলী হোসেন, পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সানোয়ার হোসেন, প্রকল্পের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা অলোক চক্রবর্তি, সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুসসহ বাংলাদেশের নিউক্লিয়ার বিশেষজ্ঞরা পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং কার্যক্রমে এবং সভাগুলোতে অংশগ্রহন করেন। ##