আজ প্রথম তোর উপস্থিতি অনুভব করলাম আমার শরীরে।একটা খুব ক্ষীণ হৃৎস্পন্দনের শব্দে শিহরিত হলো আমার গোটা শরীর।আর মাত্র কয়েকটি মাসের অপেক্ষা,তারপর তুই দেখবি পৃথিবীর আলো আর আমরা সুখের। আজকাল তোর নড়াচড়া বেশ অনুভব করতে পারি।হয়তো আমাকে খুবই আপন মনে হয় তোর,তাইতো আমার ভেতরেই তোর সুখের দিনযাপন।তোর হাত পা ছোড়া,আমার খাওয়ার থেকে পুষ্টি সংগ্রহ,তোর জন্য নিয়মিত ওষুধ আর ইনজেকশন সবকিছু মিলিয়ে বড্ড বেশি জড়িয়ে পড়ছি তোর সাথে।কখনো চাই তুই অনেকটা দেরী করে জন্ম নে,যাতে আরও বেশ কিছুদিন তোর সাথে সময় কাটাতে পারি।আবার কখনও চাই তুই খুব তাড়াতাড়ি পৃথিবীতে চলে আয়,যত কম দিন থাকবি তত মায়া কম।এক অদ্ভূত দোলাচলে কেটে যাচ্ছে মিষ্টিমধুর দিন গুলো। তোর জন্মের সময় এগিয়ে আসছে,কিন্তু আর পাঁচটা মায়ের মতন আমার সাধের অনুষ্ঠান হয়নি।খুব ইচ্ছে হয়েছিল এমন একটা অনুষ্ঠানে তোর আগমনের খুশিতে সামিল হবো,প্রাণ ভরে আশীর্বাদ করবো আমার হৃদয়ের ধন কে,তুই যে আমারও।এইমাত্র তুই পৃথিবীতে এলি।কি মিষ্টি পুতুলের মতন মেয়ে আমার।না আমার নোস,তুই আমার নাড়ি ছেঁড়া ধন হলেও এক আনাড়ি মায়ের হাতে তুলে দিতে হবে সেই নারী কে পূর্ণতা দিতে।আমার স্তনসুধা পাণ করানোর অধিকারটুকুও থাকতে নেই যে।আর কোনোদিনো দেখা হবে না তোকে,ছোঁয়া যাবে না।তোর কাছে অদেখাই রয়ে যাবে তোর জন্মদাত্রী মা।একবুক ভালোবাসার হাহাকার নিয়ে নিজের সন্তানকে ভালোবাসতে না পারা এক সারাগোট মাদারের যন্ত্রণা এভাবেই চাপা পড়ে যায় একটা কোর্ট পেপার আর এক থোক টাকার তলায়।