কবির সঙ্গে প্রেম

তুমি আমার হাতে চাঁপা দিয়ে বলেছিলে,
…এই নাও কবিতা।
তুমি আমার হাতে রক্তকরবী দিয়ে বলেছিলে,
…এই নাও বিপ্লব।
তুমি টুকটুকে লাল গোলাপ তুলে এনে আমার
খোঁপায় দিয়ে বলেছিলে,
…এই নাও বন্ধন।
বলেছিলাম,
…পরের জন্মে একটা আকাশ হবো দুজনে।
একটা সূর্য কিংবা একটা চাঁদ।
তুমি হেসেছিলে, মুহূর্তেই গম্ভীর হয়ে বলেছিলে,
…গভীর ষড়যন্ত্র চারিদিকে!
আর ওসব পরের জন্ম বলে কিছু হয়না।
এসো ভালোবেসে বেরিয়ে পড়ি পথে।
বলেছিলে,
… চলো ঘর বাঁধি!

তোমার চাঁপার গন্ধে আমি
কী এক আশঙ্কার অধ্যায় খুঁজে পেলাম।
তোমার রক্তকরবীতে গুমরানো কান্না!
টুকটুকে লাল গোলাপ রক্ত মাখা খড়্গ হয়ে
দুলতে লাগলো তোমার আমার সাঁকোর মাঝখানে।
আমি বললাম আমাদের সন্তান হবেৃ
নাম রাখবো কবিতা।
তুমি বললে,
…যে কদিন আছি বাকি
চলো তবে ঘর বাঁধি!

গভীর রাতে তোমাকে তুলে নিয়ে গেল পুলিশ।
তুমি নাকি কলম দিয়ে খুন করেছো সভ্যতা!
তুমি বললে, গভীর ষড়যন্ত্র!
তবু তুমি অপেক্ষা কোরো।
আমি সূর্য, চাঁদ, পৃথিবী, সন্তান চাই!

আমার কবি কী এক গোপন অধ্যায় লিখেছে…
লিখেছে মানুষ হলেও সে নাকি মুখোশ চিনতে পারে!
লিখেছে,
… কবিতা দিয়ে ধুয়ে দেওয়া যায় মাংসের দোকান।
রাস্তার ফুটপাত তুলে আনা যায় রাজপথের
মধ্যেকার গিজগিজে জ্যামে।
তাই পুলিশ তাকে নিয়ে গেছে তুলে মাঝরাতে।
কবিতা দিয়ে অন্যায় খুন করার অপরাধে।

আমার কবি কারাগারে বন্দী।
আমি চাঁপা, রক্তকরবী, লাল গোলাপ
বুকে নিয়ে শুয়ে থাকি একা।
সে ওইসব মুখোশগুলো ছিঁড়ে বেরিয়ে এলেই তার সঙ্গে
বাঁধবো সংসার। বুনবো সন্তান।
বিপ্লবের সন্তান।
নাম রাখবো কাব্য অথবা অগ্নি।