মোঃ হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
তিস্তার বালুচরে চলতি মৌসুমে মরিচের ভাল ফলন দেখা দিয়েছে। মরিচসহ নানাবিধ
ফসলে ভরে উঠেছে তিস্তার চরাঞ্চল। জমি জিরাত খুঁয়ে যাওয়া পরিবারগুলো
পুর্নরায় চরে ফিরে এসে চাষাবাদে ঝুকে পড়েছে। দীর্ঘদিন পর নদীগর্ভে বিলিন
হয়ে যাওয়া জমির ফসল ঘরে তুলতে পেরে খুশি কৃষকরা। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ
উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের
উপর দিয়ে প্রবাহিত রাক্ষুসি তিস্তা নদী এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে।
চরাঞ্চলের হাজারও একর জমিতে এখন চাষাবাদ করা হচ্ছে নানাবিধ প্রজাতির ফসল।
বিশেষ করে মরিচ, গম, ভুট্টা, আলু, বেগুন, পিঁয়াজ, রসুন, টমেটো, বাদাম,
সরিষা, তিল, তিশি, তামাক, কুমড়াসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষাবাদ করা হচ্ছে। কথা
হয় হরিপুর ইউনিয়নের লখিয়ারপাড়া গ্রামের বাবলু মিয়ার সাথে। তিনি নিজে ২ বিঘা
জমিতে মরিচ চাষ করেছে। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয় ৮ হতে ১০ হাজার টাকা। ফলন
ভাল হলে ২০ হতে ২৫ হাজার টাকা মরিচ বিক্রি হয় এক বিঘা জমিতে। দীর্ঘ ৬ মাস
ধরে মরিচ তোলা হয়। স্বল্প খরচে অধিক লাভের আশায় চরের কৃষকরা এখন মরিচসহ
নানাবিধ তরিতরকারি চাষে ঝুকে পড়েছে। তিনি বলেন, মরিচের দামও এখন ভাল।
বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি মরিচ ৮০ হতে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে
করে প্রতি মন মরিচের দাম হচ্ছে ৪ হাজার টাকা। সুন্দরগঞ্জ পৌর বাজারের
ব্যবসায়ী লাভলু মিয়া জানান, স্থানীয় মরিচের চাহিদা অনেক বেশি। তাছাড়া
স্থানীয়ভাবে মরিচ কিনে বিক্রি করলে লাভ বেশি হয়। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ১৫৫ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। যা গত বছরের
তুলনায় অনেক বেশি। বেলকা ইউনিয়নের ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ জানান, চরাঞ্চলের
জমিতে তরিতরকারির আবাদ এখন ভাল হয়। সে কারণে চরের মানুষ এখন অনেক খুশি।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ জানান, পলি জমে থাকার কারণে
চরের জমি অনেক উর্বর। যার কারণে যে কোন প্রকার ফসলের ফলন ভাল হয়। তিনি
বলেন, চরের কৃষকরা নিজে পরিজন নিয়ে জমিতে কাজ করে। সেই কারণে তারা অনেক
লাভবান হয়। বিশেষ করে তরিতরকারি চাষাবাদে চরের জমি এখন উপযোগী হয়ে উঠেছে।