ফুটফুটে সুন্দর এক পুত্র সন্তান প্রসব করে মা হলেন নাম পরিচয়হীন মানসিক ভারসাম্যহীন সেই নারী। সোমবার রাতে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের রানীগাঁও এলাকার বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলামের বাড়ির পাশে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ওই নারী এ সন্তান প্রসব করেন।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর খেলার মাঠ এলাকায় ঘোরাঘুরি করতো। আর তার নাম, ঠিকানা সস্পর্কে স্থানীয়দের কেউই অবগত ছিলেন না। তবে স্থানীয় লোকজনের সাহায্য সহযোগিতায় তার খাওয়া পরা চলতো। আর ওই নারীর একমাত্র আশ্রয়স্থল ছিল গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বারান্দা।
এনিয়ে গত ২১ ডিসেম্বর “স্কুলের বারান্দায় অন্তঃসত্ত¡া কিশোরীর মানবেতর জীবন” শিরোনামে দৈনিক যুগান্তরের প্রিণ্ট ভার্সণে একটি সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা পপি রানী তালুকদার, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রেজাউল করীম ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা বেগম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই নারীর জন্য একটি কম্বল, কিছু ঔষধ ও খাবারসহ তাকে দেখাশুনার জন্য ওই এলাকার এক স্বাস্থ্যকর্মীকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
এব্যাপারে উপজেলা মহিলাবিয়ষক কর্মকর্তা পপি রানী তালুকদার যুগান্তরকে বলেন, মঙ্গলবার সকালে সন্তান প্রসবের খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাই। সেখানে গিয়ে জানতে পারি মানসিক ভারসাম্যহীন নারী তার সন্তান রেখে ওই জায়গা থেকে পালিয়েছে। আর সন্তানটি ওই এলাকার সাইফুল ইসলামের মেয়ে হাসনা খাতুনের কাছে রয়েছে। হাসনা খাতুনের দুই বছরের একটি কণ্যা সন্তান রয়েছে। সেই সুবাদে হাসনা খাতুন মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর ছেলেকে বুকের দুধ পান করানোসহ লালন পালন করছেন। তিনি আরও বলেন, হাসনা খাতুন ওই ছেলে সন্তানটিকে পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করবেন। নবজাতক বর্তমানে সুস্থ্য এবং হাসনা খাতুনের কাছে নিরাপদে রয়েছে। আমরা তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।
এবিষয়ে জানতে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রেজাউল করীমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, শিশুটি সুস্থ্য আছে। আগামীকাল (বুধবার) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।