নাজিম হাসান,রাজশাহী থেকে:
রাজশাহীর বাগমারায় ফসলি জমির প্রকৃতি (শ্রেণী) পরিবর্তন করে একই স্থানে ৫টি পুকুর খনন অব্যাহত রয়েছে। উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের সাজুড়িয়ার যশের বিলে কয়েকজন প্রভাবশালী মহল আবাদি জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন অব্যাহত রাখলেও স্থানীয় প্রশাসন রহস্যজনকভাবে নিরব ভুমিকা পালন করছেন। এতে কৃষি জমির পরিমান কমে যাচ্ছে এবং চাষাবাদ হুমকীর মুখে পড়ছে। এদিকে অবৈধ ভাবে প্রকাশ্যে পুকুর খনন বন্ধের প্রতিবাদে শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার তালতলী বাজারের চার রাস্তার মোড়ে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসি। এছাড়া পুকুর খননের বন্ধের জন্য বাগমারা সহকারি (ভুমি) কমিশনার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে এক যোগে দুইটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছে গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে মেম্বার আবেদ আলী মোল্লা। তিনি আভিযোগপত্রে উল্রেখ্য করেছেন,যশের বিলের উত্তর পশ্চিম কর্নারে মৌজায় প্রায় ৪৫০ বিঘা বিভিন্ন ধরনের ফসলী জমির উপর পুকুর খনন করে মাছ চাষের নামে জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করে পুকুর খনন অব্যাহত রেখেছেন। এতে বর্ষা মওসুমে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে পড়ছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এলাকার শত শত বিঘা ফসলি জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে থাকবে। অপরদিকে, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ রয়েছে জমির প্রকৃতি (শ্রেণী) পরিবর্তন করা যাবে না। আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে ফসলি জমিতে চলছে হরদম পুকুর খনন। কিন্তু কনোপাড়া গ্রামের প্রভাবশালী আকরামের ছেলে আফজাল হোসেন,সাজুড়িয়া গ্রামের প্রভাবশালী সেফাতুল্ল্যা ওরুপে সেফার ছেলে কামাল হোসেন, কনোপাড়া গ্রামের মৃত আমির আলীর ছেলে শামসুদ্দিন,সেনোপাড়া গ্রামের জফি উদ্দিনের ছেলে পিন্টু আলী,কাউছার,কামাল,পিক্কা,সাজুড়িয়া গ্রামের রোফাতের ছেলে রুহুল আমিনসহ অনেকে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে জমির প্রকৃতি (শ্রেণী) পরিবর্তন করে পুকুর খনন অব্যাহত রাখলেও স্থানীয় প্রশাসন রহস্যজনকভাবে নিরব রয়েছে।এছাড়া তারা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যাজেন করে পুকুর খনন কাজ চলছে বলে স্থানীয় কৃষকরা দাবি করেছেন। এলাকাবাসি জানান,গত কয়েক দিন আগে আনার মাষ্টার, রুহুল আমিন,বকুল ও জামিল নামের কয়েকজন ব্যাক্তি জমির মালিকদের জিম্মি করে বিঘা প্রতি বিশ হাজার টাকা করে দিয়ে পুকুর খনন কাজ শুরু করেন। এবং কয়েকজন কৃষক স্থানীয় প্রশাসনকে জানালে বাগমারা সহকারি (ভুমি) কমিশনার মাহাবুল হাসান পুলিশসহ ঘঁটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ড্রেজার মেশিন ভাংচুর করে চলে যায়। কিন্তু কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর আবারো রাতের আধারে পুকুর খনন অব্যাহত রেখেছে। এবং ব্যবসার নামে ফসলি জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করে পুকুর খনন করলেও কেউ এগিয়ে আসছে না বলে কৃষকরা দাবি করেছেন। কৃষকদের অভিযোগ প্রভাবশালীদের হাত থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ও ফসলি জমিতে নিয়মবর্হিভূত অপরিকল্পিত পুকুর খনন বন্ধের জন্য দফায় দফায় ভুক্তভোগীরা একাধিকবার স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। কিন্তু কোন প্রতিকার হয়নি বলে তারা দাবি করেন। এছাড়া পুকুর খননকারীরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে তাদের অভিযোগ। এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আহমেদ ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সহকারি (ভুমি) কমিশনার মাহাবুল হাসান বলছেন আমি ঘঁনাস্থলে গিয়ে (ভেকু) ড্রেজার মেশিন ভাংচুর করে ব্যাটারে খুলেছি। আমি অফিসিয়াল কাজে ব্যবস্থা থাকায় অভিযান পরিচালনা করতে পারেনি। তবে অচিরে অভিযান চালাবো বলে তিনি জানান।#