লিপন সরকার চলনবিল প্রতিনিধি: চলনবিল অধ্যাষিতু সিরাজগঞ্জের তাড়াশে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন পিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজ চার বছরেও শেষ হয়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সড়কে যাতায়াতাকারী ১০টি গ্রামের হাজারো মানুষ।তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, পাবনার চাটমোহর ও নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার প্রায় ৩০-৩৫টি গ্রামের মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে তাড়াশ পশ্চিম ওয়াপদা বাঁধ-নাদোসৈয়দপুর বাজার সড়কটি ব্যবহার করে থাকে। সড়কটির গুরুত্ব বিবেচনা করে গত ২০১৬ সালে ১০ কোটি তিন লাখ ৩৯ হাজার ৪৯০ টাকা ব্যয়ে তাড়াশ পশ্চিম ওয়াপদা বাঁধ থেকে নাদোসৈয়দপুর বাজার ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৮ দশমিক ৫৩৬ কিলোমিটার ডুবো সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানি। কিন্তু গত চার বছরেও সড়কটির দক্ষিণ অংশে কাটা খালে ব্রীজের কাজ শেষ করতে পারেনি এমএসএএফ কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, তাড়াশের কাটাখালে চার কোটি ৪১ লাখ আট হাজার ৪৪৮ টাকা ব্যয়ে ৯৯ মিটার পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী দরপত্রে অংশ নিয়ে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার কাদিরগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএসএএফ কনস্ট্রাকশন কাজটি পায়। কার্যাদেশ পাওয়ার পর ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বর সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৮ সালের ৫ মার্চ সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এর পর তিন দফা সময় বৃদ্ধি করে চলতি বছরের ৮ এপ্রিল কাজটি শেষ করার কথা ছিল। এর পরও কাজটি শেষ করতে পারেননি ঠিকাদার।
উপজেলার নাদোসৈয়দপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, আশপাশে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল সেতুর পাশ দিয়ে পরিবহন করে থাকেন কৃষকরা। কিন্তু সেতু নির্মাণে ধীরগতির কারণে পাকা রাস্তা থাকা সত্ত্বেও অধিক খরচে জমির ফসল গরুর গাড়ি বা ভ্যানে আনা-নেওয়া করতে হচ্ছে।
নাদোসৈয়দপুর গ্রামের আরেক ব্যবসায়ী রেজাউল করিম জানান, তাড়াশ উপজেলা সদর থেকে সেতু নির্মাণের ওই সড়কটির দূরত্ব মাত্র আট কিলোমিটার। কিন্তু সেতু নির্মাণে বিলম্ব হওয়ায় ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে ১৫-১৮ কিলোমিটার ঘুরে নাদোসৈয়দপুর ও তৎসংলগ্ন হাটবাজার ও ১০-১২টি গ্রামে আসতে হয়।
মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক আতিকুল ইসলাম বুলবুল জানান, উপজেলার তাড়াশ-নাদোসৈয়দপুর সড়কের কাটাখালে একটি ৯৯ মিটার পিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় সড়কটির ব্যবহার করতে পারছে না এলাকাবাসী।
তিনি আরও জানান, নির্মাণাধীন ব্রীজের খালে নৌকা করে পার হয়ে চলাচল করতে হয়।
এ ব্যাপারে এমএসএএফ কনস্ট্রাকশনের ঠিকাদার জহুরুল ইসলাম বলেন, সেতুর দু’পাশে সংযোগ সড়ক করতে প্রয়োজনীয় মাটি পাওয়া যাচ্ছে না। সেতুটির অন্যান্য কাজ শেষের দিকে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে কাজটি শেষ করা সম্ভব হবে।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী বাবলু মিঞা জানান, কাটাখালের ওপর সেতুর নির্মাণ কাজটি দ্রুত শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।