ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
পাবনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বিকেলে ঈশ্বরদীর সাঁড়া ইউনিয়নের ইসলামপাড়া বালুমহলে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এসময় ভেক্যু, ড্রেজার ও বালু পরিবহণের গাড়ি জব্দ করা হলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। ঈশ্বরদীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মমতাজ মহল অভিযানের বিষযটি নিশ্চিত করে জানান, অভিযানে পাবনা-১২ এর র্যাব সদস্য ও ঈশ্বরদী থানা পুলিশ অংশগ্রহন করে। এরআগেও বিভিন্ন সময়ে বালুমহলে অভিযান পরিচালিত হলেও বালু সিন্ডিকিটের মুল হোতারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়।
এসি ল্যান্ড মমতাজ মহল জানান, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট খোন্দকার মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে ৫ জন ম্যাজিষ্ট্রেট এই অভিযানে অংশগ্রহন করেন। এসময় ভ্রাম্যমান আদালত ২টি ভেক্যু, ১টি ড্রেজার এবং বালু পরিবহনের ১৫টি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। প্রশাসনের গাড়ি দেখে বালু কাটার সাথে জড়িতরা দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। বালু পরিবহনের জন্য জব্দকৃত গাড়িগুলো স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্বায় রাখা হয়েছে। এব্যাপারে ঈশ্বরদী থানাকে নিয়মিত মামলা দায়েরের জন্য বলা হয়েছে বলে তিনি জানিযেছেন। মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী জানান, বালুর উত্তোলনের সাথে যারা জড়িত, তারা খুবই প্রভাবশালী। এই ঘাটে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ গাড়ি বালু উত্তোলন ও বিক্রয় হয়। এরআগেও অভিযান হয়েছে, মুল হোতারা সবসময় ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই থাকে। তিনি আরো বলেন, নদী ভাঙন ঠোকাতে মাত্র কয়েক বছর আগে সরকার এখানে শত শত কোটি টাকা খরচ বাঁধ নির্মাণ করেছে। বালু কাটার কারণে এই বাঁধও এখন হুমকির সম্মুখিন।
উল্লেখ্য, ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডা, পাকশী ও সাঁড়া ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক স্থানে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উঠানো হচ্ছে। এরআগে ‘ঈশ্বরদীতে পদ্মা নদী দখল করে রমরমা বালুর ব্যবসা’ শীর্ষক সংবাদ ইত্তেফাকসহ বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বারংবার প্রকাশিত হয়েছে। গত ২৮ শে জানুয়ারী সরকারি জায়গা দখল করে বালু ব্যবসা বন্ধ করতে পদ্মা নদীর তীর থেকে জব্দ করা বালু নিলামে বিক্রি করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই নিলামের কাগজ নিয়েই প্রতিদিন শত শত ট্রাক ও ট্রাক্টর বালু বিক্রি হলেও নিলামে ক্রয়কৃত বালুর মজুদ শেষই হচ্ছে না। অভিযানের সময় বালু কাটা ও পরিবহনের কাজে জড়িত শ্রমিকরা এর আগে গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু সিন্ডিকেটের মূলহোতারা কখনই ধরা পড়ছে না