পেশায় একজন দলিল লেখক, সম্পদ রয়েছে অঢেল। অর্থ আর রাজনৈতিক ক্ষমতায় হয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।চলাফেরা দাপটের সঙ্গেই। ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের নাসির চেšধুরী নামের এই দলিল লেখকের বিরুদ্ধে প্রায় ৬ কোটি টাকা অবৈধ পন্থায় উপার্যনের অভিযোগে দুদুক যশোর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাঃ মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এশটি মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি রেজিষ্ট্রিভুক্ত কওে আগামী ৩ জানুয়ারী তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
নাসির চেšধুরী ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সিমলা-রোকনপুর ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামের জামসের আলী চেšধুরীর পুত্র। তিনি বর্তমানে কালীগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের একজন দলিল লেখক ও দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। পাশাপাশি তিনি সিমলা-রোকনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
মামলার এৎাহার সুত্রে
জানা গেছে, দুদুক সন্মনিত জেলা কার্যালয় যশোরের সাবেক সহকারী পরিচালক মোঃ
শহিদুলইসলাম মোড়ল নাসির চেšধুরীর বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ গুলোর তদন্ত করেন।
পরবর্তীতে তার তদন্ত¿ প্রেিতবদনের আলোকে দায়ের হওয়া এই মামলায় উল্লেখ করা
হয়েছে আসামী নাসির চেšধুরী তার নিজ নামে ব্র্যাক ব্যাংক লিঃ যশোর শাখায়একটি
সঞ্চয়ী হিসাব ও ১২ টিএফডিআরহিসাব খোলেন। এগুলোতে তিনি বিভিন্ন সময়ে মোটা
অংকের টাকা লেনদেন করেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সঞ্চয়ী হিসাব থেকে টাকা
স্থানন্তর করে অন্য এফডিআর এ জমা করা হয়েছে। সর্ব পরিসকল ক্ষেত্রে এফডিআর
হতে হস্তান্তর কওে মূলসঞ্চয়ী হিসাবে এনে আবার সেখান থেকে উত্তোলন করা
হয়েছে। নাসির উদ্দিন চৌধুরী ০৭/০২/২০১২ তারিখ থেকে ৩০/০৭/২০১৮ তারিখ
পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে মোট ৭ টিএফডিআর এ ১ কোটি ৭৬ লাখ ৯০
হাজারটাকাজমাকরেছিলেন। যা থেকে তিনি ০১/১১/২০১৫ তারিখে ৩১ লাখ ৫০ হাজার
টাকা উত্তোলকরে একই ব্যাংকে স্ত্রী খাদিজা বেগমের নামে সঞ্চয়ী হিসাবে
হস্থান্তর করেন। এছাড়া তিনি ওই শাখায় স্ত্রী খাদিজা বেগমের নামে একটি
সঞ্চয়ী ও ৫ টিএফডি আরও খুলে লেনদেন করেন। যার মধ্যে সঞ্চয়ী হিসাবটি এখনও
চলমান রয়েছে। ০৪/০২/২০১৩ তারিখ হতে ০৭/১১/২০১৯ তারিখে ওই ৬ টি সঞ্চয়ী ও
এফডিআর এর মাধ্যমে বিপুর পরিমান টাকা লেনদেন করেন। তিনি স্ত্রীর নামের এই
সকল এফডিআর ও সঞ্চয়ী হিসাব থেকে ১ কোটি ২৭ লাখ ৪৭ হাজার ৪১৬ টাকা উত্তোলন
পূর্বক স্থানন্তর করেন।
অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন তার শালিকা (দ্বিতীয়
স্ত্রী) মোছাঃ মাহফুজা খাতুন এর নামে ওই ব্র্যাক ব্যাংক শাখায় একটি সঞ্চয়ী
হিসাব ও ৪ টিএফডিআর খুলে দেলদেন করেন। যারমধ্যে বর্তমানে একটিও চলমান নেই।
ওই ৫ টিহিসাব পর্যালচা করে দুদক নিশ্চিত হয়েছেন অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন তার
দ্বিতীয় স্ত্রীর সঞ্চয়ী হিসাবে টাকা জমা করে সেখান থেকে এফডিআর হিসাবে জমা
করেছেন। যেখান থেকে আবার সঞ্চয়ী নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত ০২/০২/২০১৪ তারিখ হতে
১৪/০৫/২০১৯ তারিখপর্যন্ত মোট ১ কোটি ৫৬ লাখ ৩৫ হাজার ৬২৮ টাকা উত্তোলন
পূর্বক স্থানন্তর করেছেন। নাসির উদ্দিন চৌধুরী তার শ্যালক মোঃ জিয়াকুব আলীর
নামে একই ব্র্যাক ব্যাংক ও যশোরের অন্য একটি এবি ব্যাংকে এফডিআর ও
এম.আই.ডি.এস হিসাব খুলে ৮০ লাখ টাকা জমা করেছিলেন। যাসম্পূর্ণ উত্তোলন কওে
অন্যত্র স্থানন্তর করেছেন। যা তার শ্যালক তদন্তকারী সংস্থাকে নিশ্চিত
করেছেন।
ইাসির উদ্দিন চৌধুরীর কলেজ পড়–য়া পুত্র মোঃ মারুফ হোসেন রিয়াজ
এর নামে রুপালী ব্যাংক লিঃ কালীগঞ্জ শাখায় আর.এস.এস হিসাব খুলে সেখানে ৩০
লাখ টাকা জমা করেন। যাওপরবর্তীতে উত্তোলন করে স্থানন্তর করেছেন।মামলায় আরো
উল্লেখ করা হয়েছে অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন চৌধুরী অবৈধ পন্থায় দূর্নীতির
মাধ্যমে ৫ কোটি ৭০ লাখ৭৩ হাজার ৪৪ টাকা অর্জন করেছেন। তিনি নিজ নামে, প্রথম
স্ত্রী মিসেস খোদেজা বেগম, দ্বিতীয় স্ত্রী মিসেস মাহফুজা খাতুন, শ্যালক
জিয়াকুব আলী ও পুত্র মারুফ হোসেন রিয়াজ এর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর এ
জমাকরে। যা পরবর্তীতে সম্পূর্ণ টাকা উত্তোলন কওে অন্যত্র স্থানন্তর করেছেন।
আরএই অপরাধে তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ধারায়
সিনিয়র স্পোশাল জজ আদালতে মামলার আবেদন করা হয়।
আদালত সুত্রে জানা গেছে,
গত ২৪ নভেম্বর দুদুক কর্মকর্তা ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটি
নথিভুক্ত করার আবেদন করেন। আদালত শুনানী শেষে ৩০ নভেম্বর আদেশের দিনধার্য্য
করেন। পরবর্তীতে ধার্য্য তারিখে মামলা রেজিষ্ট্রিভুক্ত কওে আগামী ৩
জানুয়ারীর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মামলার তদন্তকারী দুদুক
কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে দুদক যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক
মোঃ নাজমুচ্ছ সাদাত জানান, তারা দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে অনুমতি পেয়ে
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্ত ও পরবর্তীতে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি
তদš চলছে, এখনও আসামী গ্রেপ্তার হয়নি।