এনামুল হক টগর
আমাদের চলমান আশার স্বপ্নভরা দিনগুলো আর রাতগুলো আজ বড়ই ক্লান্ত,
প্রতিনিয়ত কালো আঁধার এসে ঢেকে দেয় কি বিস্ময় কঠিন জীবন অশান্ত!
তবু আমি রাতের চাঁদ ও নক্ষত্রের সাথে হেঁটে যাই দৃঢ় দীপ্ত চেতনায় স্মরণ।
শেষরাতের কাছাকাছি যখনই আমি জীবনগুলোর সামনে দাঁড়াই আর বলি আলো জ্বালাও নতুন!
ঠিক তখনই দেখি শুধুই আঁধার আর আঁধার সময়,
তারপরও অপেক্ষায় থাকি প্রবল ইচ্ছের শক্তির এক জীবন বাসনায়।
পৃথিবীতো ধীরে ধীরে জেগে ওঠে আকাঙক্ষার লোভে ও ক্ষোভে বিচ্ছেদ বিরহ ব্যথায়-
অপরিবর্তিত সেই প্রাচীন সকাল বুকে নিয়ে অভূক্তরা দাঁড়িয়ে থাকে বিপন্ন ক্ষুধায়,
একই দিনগুলো ও একই রাতগুলো যেন আগের মতোই বিবর্তন ও আবর্তনে আঁধারময়।
স্তব্ধ ও নৈঃশব্দের আড়ালে তাঁর যন্ত্রণার ব্যথিত রহস্য,
দীর্ঘ কষ্টের ভেতর জীবনগুলো কাঁদে ওঠে দুর্ভিক্ষ মহামারী ও যন্ত্রণায় বিভৎস।
কান পেতে শুনি গ্রাম ও নগরের বেদনা বিক্ষোভ ব্যথা
চোখের জলে নীল দুঃখরা খেলা করে আহত রক্তাক্ত ও বিক্ষোভে অযথা।
নিঝুম নিরালা অশরীরী প্রিয়তমার রূপ ধরে বিস্ময় সমাজ দাঁড়িয়ে থাকে অবাক!
কে যেন পিছে পিছে আসে মনে হয় চেনা চেনা কিন্তু বাস্তবে সে এক অচেনা শত্রু ঘাতক!
অপরূপ সৌন্দর্যের গভীরে রহস্যময় মায়ার ছলা কৌশল আর মরিচিকার বিপন্ন ঝলক।
তারপরও অনাগত নতুন সকাল জেগে ওঠে ঠিক আগে মতোই অধিকার আদায়ে চঞ্চল!
মিছিলে আমি ডাকি আর বলি পরিচয় দাও প্রকাশ হও সু-ষমবন্ট সরল।
প্রবেশ করো আঁধার পৃথিবীর দরজা ভেঙে নব নব নতুন আলোয়,
জীবনের চিত্রিত ও প্রজ্ঞার তুলিতে স্বদেশ জেগে উঠুক ফুলে ফলে নিপুণ উদয়,
কিন্তু সময়তো ধরা দেয় না,আমি শুধুই পরিবর্তন ও নতুন আলোর ছবি আঁকি আগামী সুদূর,
মৃত্তিকার উপর দিয়ে রিক্ত পথিক হেঁটে যায় আর কথা বলে নতুন সংস্কারে বাঁচার অধিকার?
নিভৃত অচেনা অজানা যুবকের রূপ ধরে সে যেন বিধ্বস্ত এক সাম্য বিপ্লবী।
নতুন দিন ও রাতগুলো পরিবর্তনের জন্য লড়াই করে মিছিলে ভীষণ অভাবী।
নিরুপায় অজানা পৃথিবীর আঁধারে আঁধারে হাজারও শত্রুর কঠিন আনাগোনা,
অধিকারহীন মানুষগুলো শুধুই স্বপ্ন দেখে মিথ্যা বাসনার সংসার কামনা।
ব্যথিত যন্ত্রণায় জীবনগুলো সময়ের কর্ম খোঁজে দেহকে উত্তাপ দেয় প্রাণশক্তি,
আগামী নতুন আলোর সন্ধানে নদী ও সমুদ্র যেন মিলন বিরহে চেতনায় আনে যুক্তি।
মনে হয় ওই দূর-দিগন্ত জীবন মোহনায় এখনো চৈতন্যের আলোকিত নতুন সূর্য ওঠেনি,
ওই নীল আকাশের মধ্যরাতে চন্দমাখা জ্যোৎস্নার নিপুণ আলো এখনো পৌঁছায়নি!
অভাব অনাটনে পরাণের প্রিয়া ঘর ছেড়ে চলে যায়,
সদ্য তরুণ যুবকের সাথে সুখের সংসারে খোঁজে যৌবন শক্তির কামনায়,
এক সময় বিপন্ন ব্যর্থ ও অশ্রুমাখা প্রাণগুলো ঝরে পড়ে রিক্ত অসহায়,
সরল বিশ্বাসী অস্তিত্বের গভীরে শ্রমজীবী ও কর্মজীবীরা ব্যর্থ চেতনায় কাঁদে বিধ্বস্ত নিরুপায়।
তারপরও কতো মানব জনম ও কতো জন্মান্ধ জীবন স্বপ্ন দেখে নতুন সংস্কারের আশায়।
গভীর আঁধার রাত পাড়ি দিতে চায় কঠিন সাহসী দুঃখভরা সময়ের আহ্বান অবেলায়।
তাদের শরীরে ক্ষুধার দীনতা ছুঁয়ে যায় জীর্ণ শীর্ণ কঠিন আঁধার সংসার অভাব,
অমৃত মাটির গভাীর থেকে বৃষ্টির জল এসে সভ্যতাকে প্রশ্ন করে বিবেকের বাস্তব স্বভাব।
নতুন কলি কণার রুদ্ধকন্ঠ পঙক্তির নিঃসৃত সুরে ও গানে ঝংকার তোলে বিরহ বিচ্ছেদ।
গবীবের পেটে ক্ষুধার শানিত আগুন জ্বলে জীবন ও মরণের অপূর্ণ সাধ,
ফাগুনের স্মৃতিময় অতীত সময়ের সাথে মানবতায় তাকিয়ে থাকে বিরহ ব্যথায় অবাক!
পথভ্র্যান্ত নেতৃত্বের বিভ্রান্ত নির্দেশে প্রতিদিন মানবতাকে খুন করে বিপদগামী ঘাতক নির্বাক।
অনাগত উদ্যানে অপ্রস্ফুটিত কলিগুলো অবেলায় ঝরে পরে অসহায় বিবেক।
ওদের শরীরে স্বপ্নের বাহারী রং সৌরভ আসার আগেই
ওরা নিত্য সন্ত্রাসী ও দূর্নীতির ছোবলে ক্লান্ত হয় আর ঝরে পরে বিপন্ন সর্বদাই।
এক সযময় আশার স্বপ্নগুলো ভেঙে যায় কঠিন কষ্টের বিচ্ছেদ দহন যন্ত্রণায়,
তখন কালো মেঘ এসে পুনরায় আলোকে ঢেকে দিতে চায় কি যে যন্ত্রণা বিষাদময়।
কিন্তু দেশপ্রেমের বিদগ্ধ ভালোবাসা ও সময়ের নতুন সূর্যের আলো ও সোনালী আভরণ ঝলক,
দেশ আর সমাজকে ভরে দিতে চায় আবার কখনও সভ্যতাকে জাগিয়ে তুলতে চায় দক্ষ আলোক।
প্রকৃতির কাশবন নদী গ্রাম নগর জনপদ ও অরণ্যের বাঁকে বাঁকে প্রেমের চেতনা উদয়।
তাঁর সাথে আমরাও অপেক্ষায় থাকি,অন্য জীবনগুলোও প্রতিক্ষায় থাকে অভাবমুক্ত আশায়,
তবুও আসেনা আলোকিত সময় নতুন দিন ও নতুন রাতের আঁধার মুক্ত নিপুণ সকাল।
দেখিনা বিশোধন আলোর বিদগ্ধ পথ জীবন চেতনা সরল
তবু কেন যে আমাদের এই অপেক্ষা আর প্রতীক্ষায় থাকা জীবন বিস্ময়।