নিজের জন্য নয় মানুষের জন্য নিরবে কাজ করে যাচ্ছেন নিভৃত পল্লীর এক মহিয়সী নারী

সমাজকে নিয়ে ভাবেন। সমাজের উন্নয়ন করাই যার একমাত্র লক্ষ্য। সকল আরাম আয়াস ছেড়ে গ্রামের নিভৃত পল্লীতে জীবন যাপন করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন ভাবে গ্রামের অবহেলিত মানুষকে আলোর সন্ধ্যান দিতে যিনি ব্যস্ত সময় পার করছেন। দুঃস্থ মহিলাদের কর্মক্ষম করে গড়ে তোলার প্রচেস্টা। শিশু কাল থেকেই লেখা পড়ার পাশাপাশি নিজেকে সাবলম্বি করে তৈরী করে গড়ে উঠার জন্য তিনি নিজ গ্রামে “ সিন্থী পাঠশালা ” প্রতিষ্ঠা করেছেন। গড়ে তুলেছেন নিজ বাড়ীর আঙ্গীনায় গবাদী খামার। যাতে দুগ্ধ জাতের গাভী সহ ষাড় ও বাচুরও রয়েছে বেশ কয়েকটি। আঙ্গীনায় রয়েছে কবুতরের বসবাসের জন্য একটি বড় ঘর। আর গ্রামের মধ্যে সাজানো পরিপাট্রি বাড়ীটি দেখতে খুবই সুন্দর ও মনোরম । স্কুলের নামে রয়েছে ৭ বিঘা জমি। জমির উপর রয়েছে একতল বিশিষ্ট উক্ত পাঠশালা। যেখানে মা শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদানের ব্যবস্থা। পাঠ দানে কর্মরত রয়েছেন ২৪ জন শিক্ষক এবং তাদের দেখভালের জন্য রয়েছে ১১ জন কর্মচারী। যেখানে শিক্ষা গ্রহণ করছে ৩২৮ জন শিক্ষার্থী। শিক্ষক – কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জন্য দেওয়া হয় দুপরের খাবার। স্কুল আঙ্গীনায় রয়েছে শিশুদের জন্য বিভিন্ন বিনোদন মূলক খেলার সামগ্রী । পাঠশালা ক্যাম্পাসে সোভা বর্ধন করছে বাঘ, ভাল্লুক, পাখি ইত্যাদি প্রতিকৃতি।

সব কিছুর দেখভাল করছেন যিনি তিনি হলেন এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান/ পরিচালক মাহমুদা সবুজ। স্বামীর নাম মোঃ সবুজ উদ্দিন খান, প্রধান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথ, ঢাকা।
এ ব্যাপারে মাহমুদা সবুজের কাছে এ প্রতিবেদক প্রশ্ন করেন, ঢাকায় না থেকে কেন গ্রামের বাড়ীতে থাকেন তিনি। এ প্রশ্নের উত্তর দিতেই তিনি এ প্রতিবেদককে সাথে নিয়ে তার কর্মকান্ডের কিছুটা দেখান। তিনি বলেন, একা ভালো থাকা যায় না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকাটাই হলো প্রকৃত ভালো থাকা। এটা উপলব্ধি করতে পেরেই তিনি এভাবে নিজ গ্রামে ,গ্রামের যুবসমাজকে কাজে লাগিয়ে সমাজ উন্নয়নে অংশ নেওয়ার প্রচেষ্টা করছেন তিনি। তিনি বলেন ।
এ কাজ করতে“ হান্ডেড প্লাস সদস্য হতে হবে” আমাদের অসঙ্গতীগুলো একসময় হয়তো হান্ডেড প্লাস হয়ে যাবে। যার বিরুদ্ধে আমরা কাজ করে যচ্ছি।

এ প্রতিপাদ্য বাস্তবায়ন হলে সমাজের অসঙ্গতীগুলো দূর হবে বলে আমি আশাবাদী।

কিন্তু আমার গ্রামের এই দুঃস্থ, অবহেলিত লোকজনকে এ ভাবে সহযোগিতা করতে পারতাম না। তাদের পাশে দাড়াতে পারতাম না। সর্বপরি তাদের কাছ থেকে যে ভালবাসা পেয়েছে এবং পাচ্ছি তা কোটি টাকার বিনিময়ে বিনিময়যোগ্য নয়। তিনি আরও জানান, ‘সিনথী পাঠশালা ’টি ২০১৭ সালে স্থাপিত হয়। ২০১৯ সালে তা রেজিস্ট্রেশন করা হয়। যার রেজিঃ নং এস ১৩১৭৮/২০১৯। যেটি পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার শ্যামপুরটাটী গ্রামে। তিনি আরও জানান, তার তত্ত্বাবধানে গ্রামের ১০১ জন যুবককে নিয়ে কয়েকটি দল করা হয়েছে। যাদের মাধ্যমে গ্রামের উন্নয়ন এবং গ্রামে ময়লা আবর্জনা পরিস্কার এবং পথের ধারে বৃক্ষ রোপন করা। তারই ধারাবাহিতকায় স্কুলের খোলা জমিতে করা হয়েছে বিভিন্ন জাতের সবজি বাগান, পথের ধারে রোপন করা হয়েছে তালগাছ সহ বিভিন্ন ধরনের শত শত বৃক্ষ। তিনি বলেন এ ভাবে সমাজের অন্যান্যরা এগিয়ে আসলে সমাজের দুঃস্থ লোকের সংখ্যা কমে যাবে। অন্যদিকে যুবসমাজ অসামাজিক কর্মকান্ড থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখবে। তিনি আরও জানান, তার ২ ছেলে এবং দুই মেয়ে । বড় মেয়ের নামেই পাঠশালার নামকরণ করা হয়েছে।[ লেখক: সম্পাদক দৈনিক সিনসা,পাবনা