ঋণে জর্জরিত নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসদরের খলিফাপাড়া মহল্লার বলাই চন্দ্র সুত্রধরের স্ত্রী গৃহবধূ জয়ন্তী রানী (৫০)। জয়ন্তীর শেষ সম্বল চারশতক ভিটেমাটি। বছর খানেক আগে দশ লাখ টাকায় বিক্রি করেও মহাজনদের ঋণ শোধ হয়নি। ঢাকায় পালিয়েও বাঁচতে পারেনি জয়ন্তী রানী। অবশেষে রবিবার (৮ নভেম্বর) নিজবাড়িতে মারা যান তিনি।
জানা যায়, আয় রোজগার না থাকায় জয়ন্তী রানী দুই ছেলে অমিত ও মকুলকে লেখাপড়া করাতে গিয়ে এবং অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসার জন্য এলাকার বিভিন্ন এনজিও ও স্থানীয় সুদে কারবারিদের কাছ থেকে চড়াসুদে টাকা নেন। সপ্তাহে ১ হাজার টাকায় ৪০০ টাকা সুদ দিতে হতো। বাড়ি বিক্রির টাকায় ঋণ শোধ না হওয়ায় পরিবারসহ ঢাকায় পাড়ি জমান তিনি। দেড় মাস আগে বাড়িতে ফিরলে পাওনাদার, আলেয়া সওদাগর, অরুনা, বুলু, মান্নান সওদাগর, ছাবিনা, ফাইমা, আলমাছসহ অনেকে টাকার জন্য তাকে চাপ দিতে থাকেন। এ অবস্থায় নানা অপমান, গঞ্জনা ও হুমকিধামকির চাপ মাথায় নিয়ে রবিবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান জয়ন্তী রানী।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, জয়ন্তীর মরদেহ সৎকার করতে দেয়নি সুদে কারবারি মহাজনরা। অবশেষে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ওইদিনই জয়ন্তীর লাশ কালাকান্দর কেন্দ্রীয় মহাশশ্মানে সৎকার করা হয়।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তমাল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে জয়ন্তীর সৎকারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঋণের ভার সইতে না পেরে ওই একই মহল্লার মসলেম ফকিরের ছেলে রসুন ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম (৩৫) নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে।