ইয়ানূর রহমান : যশোরের নাভারণ আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা
করলো কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বিড়ি ফ্যাক্টরীতে উৎপাদন চলাকালীন কর্মরত বিড়ি শ্রমিকদের হাতে
দু’জন সুপারভাইজার শারিরীক লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনায় রাত ১০টার সময় আকিজ বিড়ি
ফ্যাক্টরী সংলগ্ন নাভারন বাজারসহ সংক্ষিপ্ত এলাকায় মাইকিং করে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ
ঘোষনার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এজন্য বুধবার সারাদিন কোন বিড়ি শ্রমিককে বিড়ি
ফ্যাক্টরীতে ঢুকতে দেখা যায়নি বলে জানা যায়।
সরেজমিনে তদন্তে জানা যায়, ৩ অক্টোবর বিড়ি ফ্যাক্টরীতে উৎপাদন চলাকালীন সময়ে বিড়ির
মান নিয়ে কর্মরত একজন সুপারভাইজারের সাথে কর্মরত বিড়ি শ্রমিকদের বিরোধ সৃষ্টি
হয় এবং শ্রমিকরা একত্রিত হয়ে ফ্যাক্টরী ম্যানেজারসহ সমস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
অফিস কক্ষে দুই ঘন্টা যাবৎ আটকিয়ে জিম্মি করে ঐ সুপারভাইজারের নিঃশর্ত অপসারন
দাবি করে। কর্মরত বিড়ি শ্রমিকদের নিঃশর্ত দাবি মেনে নিয়ে সুপারভাইজারকে
অব্যাহতি দেয় ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কোন শ্রমিককে ছাটাই করেনি ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ।
কর্মরত বিড়ি শ্রমিকদের হাতে আবারও সুপারভাইজারের লাঞ্চিত হতে হবে এমন ভয়ে একে
একে নয়জন সুপারভাইজার চাকরি ছেড়ে চলে গেছে বলে জানা যায়। সর্বশেষ বুধবার
সকালে বিড়ি ফ্যাক্টরীতে উৎপাদন চলাকালীন সময়ে বিড়ির মান নিয়ে একইভাবে কর্মরত
একজন সুপারভাইজারের সাথে কর্মরত বিড়ি শ্রমিকদের বিরোধ সৃষ্টি হয় এবং শ্রমিকরা
একত্রিত হয়ে ফ্যাক্টরীতে বিভিন্ন নির্মানাধীন কাজে ব্যবহৃত রড, এ্যাঙ্গেল, লাঠি নিয়ে
দুইজন সুপারভাইজারের উপর অতর্কিত চড়াও হয়ে মার-ধর করে আহত করে এবং ভয়ে কর্মরত
সুপারভাইজাররা উৎপাদন এলাকা ছেড়ে চলে আসে। উৎপাদন চলাকালীন সময়ে বিড়ি ফ্যাক্টরীর
ভিতরের পরিবেশ থমতমে অবস্থায় ছিল বলে জানা যায়। উদ্ভুত পরিস্থিতি বিড়ি ফ্যাক্টরীর
উর্ধতন কর্তৃপক্ষ জানার পর বিড়ি ফ্যাক্টরী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করে।
দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক ফজলুর রহমান ঘটনার সত্যতা
স্বীকার করে বলেন, বিড়ি ফ্যাক্টরীর উদ্ভুত পরিস্থিতি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। তবে,
শ্রমিকদের এমন ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডের কারণ আমার জানা নাই।
আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরীর ম্যানেজার শান্ত কুমার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিড়ি
ফ্যাক্টরীর শ্রমিকরা এমন ধরনের ঘটনা পুর্বেও ঘটানোর পর বিড়ি ফ্যাক্টরী অনির্দিষ্টকালের
জন্য বন্ধ ঘোষনার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ থাকলেও শ্রমিকদের অর্থনৈতিক
দুর্দশার কথা চিন্তা করে ফ্যাক্টরীর উৎপাদনের কাজ বন্ধ করা হয়নি। শ্রমিকদের হাতে ফ্যাক্টরীর
কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শারিরীকভাবে বারবার লাঞ্চিত হবে এটা মেনে নেয়া যায়না। ফ্যাক্টরীর
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবনের নিরাপত্তার তাগিদে বিড়ি ফ্যাক্টরী অনির্দিষ্টকালের জন্য
বন্ধ ঘোষনা করলো উর্ধতন কর্তৃপক্ষ।#