পাবনায় ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক

পাবনার রাজনৈতিক অঙ্গনে এক আলোকিত নাম রণেশ মৈত্র। ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। লেখক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী এক সংগ্রামী মানুষ। নির্লোভ, নিরহংকারী একজন সাদা মনের মানুষ। আপাদমস্তক রাজনীতিক চরিত্রের এই গুণী মানুষটি অগাধ জ্ঞানের অধিকারী। বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী এই গুণী মানুষটিকে বলা হয় পাবনার জীবন্ত ইতিহাস।

রণেশ মৈত্র ১৯৩৩ সালে ৪ অক্টোবর রাজশাহীর নওহাটায় তাঁর নানা বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা রমেশ চন্দ্র মৈত্র ছিলেন স্কুল শিক্ষক এবং মাতা ননীবালা মৈত্র ছিলেন গৃহিণী। পৈত্রিক নিবাস পাবনা জেলার অন্তর্গত সাঁথিয়া উপজেলার ভুলবাড়ীয়া। বাবা ছিলেন ভুলবাড়ীয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। রণেশ মৈত্র প্রাথমিক শিক্ষা গ্রামে গ্রহন করেন। এরপর পাবনা শহরের গোপালচন্দ্র ইনিস্টিউট ( জিসিআই) ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৫০ সালে কৃতিত্বের সাথে ম্যাট্রিক পাশ করে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ভর্তি হন। তিনি ১৯৫৫ সালে এডওয়ার্ড কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯৫৯ সালে বিএ পাশ করেন। পরবর্তীতে আইন বিষয়ে ডিগ্রী লাভ করেন।

রণেশ মৈত্র ১৯৪৮ সালে জিসিআই স্কুলে পড়ার সময় ভাষা আন্দোলনে জড়িত হন। একই সময়ে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্যপদ গ্রহণ করেন। ১৯৫২ সালে এডওয়ার্ড কলেজে পড়াশুনার সময় জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে এডওয়ার্ড কলেজ ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। সেই সময়ে প্রগতিশীল ছাত্রনেতাদের নিয়ে সাংস্কৃতিক সংগঠন শিখা সংঘ গঠন করেন। যার নেতৃত্বে ছিলেন আবদুল মতিন (লাল মিয়া), কামাল লোহানী, জয়নুল আবেদীন খান, আনোয়ারুল হক প্রমুখ। ১৯৫২ সালে পাবনায় ভাষা আন্দোলনের সময় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ছিলেন ছাত্রলীগের নেতা আব্দুল মোমিন তালুকদার। তাদের সাথে যৌথভাবে ভাষা আন্দোলন করেন। ১৯৫৩ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এবং শেখ মুজিবুর রহমান পাবনা সফরে আসলে রণেশ মৈত্র সহ তৎকালীন ছাত্র ইউনিয়ন নেতাদের সাথে বৈঠক করেন।

ভাষা সংগ্রামী রণেশ মৈত্র তাঁর রাজনৈতিক জীবনে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী, শেখ মুজিবুর রহমান, শেরে বাংলা ফজলুল হক সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দের সংষ্পর্ষে যাবার সুযোগ পান। ভাষা আন্দোলনের পরে ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের সময় মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এবং শেখ মুজিবুর রহমান সাথে ছাত্রনেতা হিসেবে রণেশ মৈত্র একাধিক নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পান। যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করার পর সরকার গঠন এবং পরবর্তীতে সরকার ভেঙ্গে গেলে অনেক নেতার সাথে ভাষা সংগ্রামী রণেশ মৈত্র গ্রেপ্তার হন। ১৯৫৫ সালে রণেশ মৈত্র কারাগার থেকে মুক্তিলাভের পর আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৫৭ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ন্যাপ গঠন করলে রণেশ মৈত্র ন্যাপে যোগ দেন। ১৯৬৭ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ( ন্যাপ) বিভক্ত হলে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বধীন ন্যাপে রণেশ মৈত্র যোগ দেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে জোয়ার-ভাটার মত ও পথের পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকল্পে বাকশাল গঠন করলে ন্যাপ বিলুপ্ত করে বাকশালে যোগ দেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যু বরনের পর ১৯৭৮ সালে আবার ন্যাপ পুনর্গঠন হলে রণেশ মৈত্র ন্যাপে ফিরে যান। ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ন্যাপ কয়েক দফা ভাঙ্গন হলে ১৯৯৩ সালে ড. কামাল হোসেনের সাথে গনফোরামে যোগ দেন। রণেশ মৈত্র ২০১৩ সাল পর্যন্ত গনফোরাম কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং পাবনা জেলা কমিটির সভাপতি ছিলেন। ২০১৩ সালে গনফোরাম ভেঙ্গে গেলে দলের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ ভট্টাচার্যের সাথে ঐক্য ন্যাপ গঠন করেন। বর্তমান সময়কাল পর্যন্ত রণেশ মৈত্র ঐক্য ন্যাপের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং পাবনা জেলা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ভাষা সংগ্রামী রণেশ মৈত্রের জীবনে বিফলতা থেকে সফলতা বেশী। শৈশব থেকে আর্থিক অসচ্ছলতা ছিল বেশী সময়। সেটাও তাঁর স্বভাবগত কারনে। নিজের সংসার জীবনের চিন্তা না করে সেই স্কুলে পড়ার সময় থেকে গরীব-দুখী মানুষের চিন্তা বেশী করেছে। সকল সময়ে তাঁর নিজের জীবনকে তুচ্ছ ভেবে মানুষের জন্য রাজনীতি করেছে। আর সেই রাজনীতি করতে গিয়ে জীবনকালে প্রায় ১৫ বার গ্রেপ্তার হয়েছেন। জীবনের প্রায় ১০ বছর জেলে কাটিয়েছেন। তবে এই জেলজীবনের গল্প আজ জীবনের ইতিহাস হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী থাকাবস্থায় আইন বিষয়ে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে। সেই সময়ে রাজশাহী জেলখানা থেকে ঢাকা জেলখানায় নেওয়া হলে তাঁকে রাখা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেল এর সাথে আরেকটি সেলে। সেখানে বঙ্গবন্ধুর সাথে পুনর্বার দেখা হয়। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধুর সাথে ঘনিষ্ঠতার মাত্রা বেড়ে যায়। বঙ্গবন্ধু রচিত কারাগারের রোজনামচা গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু অন্তত ছয় জায়গায় রণেশ মৈত্রের কথা উল্লেখ করে লিখেছেন। ঐ সময়ে রণেশ মৈত্রের সাথে জেলগেটে বেগম মুজিব এবং আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সাথে বঙ্গবন্ধু পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। যা আজ ইতিহাসের অংশ হয়ে বঙ্গবন্ধুর কারাগারের রোজনামচা বইয়ে লিপিবদ্ধ হয়ে আছে।

ভাষা সংগ্রামী রণেশ মৈত্রের জীবনের আরেকটি অর্জন মহান মুক্তিযুদ্ধে পাবনার অন্যতম সংগঠক হিসেবে কাজ করা। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষনের পর পাবনায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ শুরু করেন। পাবনায় মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে আওয়ামী লীগ, কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপ, ছাত্রলীগ, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সমন্বয়ে স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ন্যাপ নেতা হিসেবে ঐ পরিষদে আমিনুল ইসলাম বাদশা এবং রণেশ মৈত্র সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পাকিস্তান সৈন্যরা পাবনা শহর দখল করলে ২৭ মার্চ রাত থেকে সর্বস্তরের জনতা প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে। ২৯ মার্চ সমস্ত পাকিস্তানী সৈন্যদের হত্যা করে পাবনাকে মুক্ত করা হয়। ২৯ মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত পাবনা জেলা হানাদার মুক্ত ছিল। ২৯ মার্চ পাবনা মুক্ত হওয়ার পর স্থানীয় সংগ্রাম পরিষদের সিদ্ধান্তে রণেশ মৈত্র, এডভোকেট আমজাদ হোসেন এবং কুষ্টিয়ার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অভিযুক্ত আলী রেজাকে ভারত সরকারের সাথে যোগাযোগ করে সহযোগিতা পাওয়ার আশায় ভারত পাঠানো হয়। তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল কুষ্টিয়া হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। তাঁরা কলকাতায় গিয়ে নাচোলের নারীনেত্রী তৎকালীন ভারতের সংসদ সদস্য ইলা মিত্রের সাথে সাক্ষাৎ করে ভারত সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

পরবর্তীতে ভারতের মাটিতে বসে মুজিবনগর সরকার গঠন করা হলে এবং ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলায় মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহন করে। এরপর শুরু হয় সশস্ত্র লড়াই। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারের সহযোগিতায় ন্যাপ – কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়ন আলাদা ক্যাম্প স্থাপন করে। পাবনা অঞ্চলের জন্য নদীয়া জেলার করিমপুর নামক স্থানে ক্যাম্প করে মুক্তিযুদ্ধে ট্রেনিং গ্রহণ ও যুদ্ধ শুরু করে। মুক্তিযুদ্ধের নয়মাসে ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাঁদের এই ক্যাম্প পরিচালনায় আমিনুল ইসলাম বাদশা, রণেশ মৈত্র এবং প্রসাদ রায় নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার জন্য রণেশ মৈত্র এবং তাঁর স্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়েছেন।

ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক রণেশ মৈত্রের জীবনে আরেকটি বিষয় জড়িয়ে আছে, তাহলো সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকতা। ১৯৫১ সাল থেকে শুরু করে আজ অবধি সংবাদপত্র জগতে লেখক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট হিসেবে বিরতিহীন ভাবে জড়িত। সংবাদপত্র জগতে রণেশ মৈত্রের নাম জানেন না এমন মানুষের সংখ্যা কম। ১৯৫১ সালে সিলেট শহর থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক নও বেলাল পত্রিকা দিয়ে সাংবাদিকতার শুরু। এরপর কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সত্যযুগ এরপর ১৯৫৫ থেকে দৈনিক সংবাদ। ১৯৬১ সালে ডেইলী মর্নিং নিউজ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ডেইলী অবজারভারের পাবনা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। ১৯৯২ সালে কিছুদিন দি নিউ নেশন এর মফঃস্বল সম্পাদক ছিলেন। এরপর ১৯৯৩ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত দি ডেইলী স্টারের পাবনা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। এরপর গত বিশ বছর ফ্রিল্যান্স হিসেবে কাজ করছেন। সংবাদপত্র জগতে কাজ করতে এসে সাংবাদিক হিসেবে দুটি অন্যন্য রেকর্ড স্থাপন করেছেন যা হাজার বছরের মধ্যে কেউ ভাঙ্গতে পারবেন না। এক ১৯৬১ সালে স্থাপিত পাবনা প্রেসক্লাবের তিনি প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এবং একই বছরে মফঃস্বল সাংবাদিকদের বৃহৎ সংগঠন সাংবাদিক সমিতির তিনি প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। ৬৯ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে এখনও নিয়মিত একাধিক পত্রিকা পড়েন এবং একাধিক পত্রিকায় লেখেন। আরেকটি বিরল বৈশিষ্ট্য হলো বর্তমানে ৮৭ বছরের জীবনে প্রায় নিয়মিত প্রেসক্লাবে আসেন এবং বসেন।

এই মহান মানুষটি রাজনীতি এবং সাংবাদিক জীবনে যতটুকু মনোযোগ দিয়ে কাজ করেছেন ততটুকু অমনোযোগী ছিলেন সংসার এবং কর্মজীবনে। সংসার জীবন শুরু করেছিলেন ১৯৫৯ সালে নাটোর জেলায় এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে বিয়ে করেন । স্ত্রী পূরবী মৈত্র প্রথমে গৃহিণী হিসেবে সংসারে প্রবেশ করলেও পরবর্তীতে শিক্ষকতা পেশা গ্রহণ করতে হয়। আর রণেশ মৈত্র বাবার পেশা হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করলেও কোথাও স্থায়ীভাবে কর্ম করতে পারেন নাই। প্রথম জীবনে পাকশী চন্দ্রাপ্রভা স্কুলের শিক্ষক, পরবর্তীতে পাবনার বৃহৎ ঔষধ কোম্পানীর সুপারিন্টেন্ডেন্ট। না সেসব চাকরি বেশীদিন করতে পারেননি। অবশেষে ১৯৬৯ সালে পাবনা জজকোর্টে আইনজীবী হিসেবে যোগ দেন। সেখানকার উন্নতি বলতে ১৯৭৫ সালে পাবনা বারে সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তারপর উকালতি পেশা বাদ দিয়েছেন আর নামের সাথে এডভোকেট পরিচয় ত্যাগ করেছেন।

ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক রণেশ মৈত্রের সারাজীবন ত্যাগের বিনিময়ে অর্জন সেটাও কম নয়। একজন আদর্শ সহধর্মিণী পেয়েছেন। পেয়েছেন সুশিক্ষিত সন্তান। তাঁর দুই ছেলে তিন মেয়ে। বড়ছেলে প্রবীর মৈত্র ওরফে বাবলা গত ২৫ বছর যাবত অষ্ট্রেলিয়ার সিডনীতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। স্বাধীনতার পরে বুলগেরিয়া থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন। এরপর আমেরিকা থেকে পিএইচডি করেছেন। অষ্ট্রেলিয়ায় উচ্চ পদে চাকুরী করেন। সেখানে বাঙালী কমিউনিটির নেতা এবং সেখানে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলার নির্বাচিত হন। মেঝছেলে প্রলয় মৈত্র ওরফে বাদল। ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। বড়মেয়ে মধুমিতা মৈত্র ওরফে কাজল বর্তমানে তাঁর স্বামীর সাথে আমেরিকা করছেন। জামাতা ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে কর্মরত। দ্বীতিয় মেয়ে মানবিকা মৈত্র কুমকুম পরলোকগমন করেছে। ছোটমেয়ে মৌসুমী মৈত্র কচি। রণেশ মৈত্রের চার ভাই এক বোন। তিনি বাবা মায়ের বড় সন্তান। মেঝ ভাই বীরেশ মৈত্র পাবনা পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। তৃতীয় ভাই ব্রজেশ মৈত্র পাবনা তথ্য অফিসে চাকুরী করতেন। ছোট ভাই পরেশ মৈত্র ছোটবেলা থেকে কলকাতায় বসবাস করেন। একমাত্র বোন বেঁচে আছেন এবং পাবনা শহরে থাকেন।

রণেশ মৈত্র অষ্ট্রেলিয়া, সোভিয়েত ইউনিয়ন, বুলগেরিয়া, কিরঘিজিয়া, ভারত, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর সহ অনেক দেশ ভ্রমণ করেছেন। অবসরে পড়াশুনা এবং লেখালেখি করেন। তাঁর নিজের লেখা বই রূদ্র চৈতন্যে বিপন্ন বাংলাদেশ প্রকাশিত হয়েছে।

ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক রণেশ মৈত্রকে ২০১৮ সালে একুশে পদক দেওয়া হয়। তাঁকে স্মরণীয় করতে পাবনার কোন স্থাপনা এবং সড়ক নামকরণ করা হোক।

( সমাপ্ত)

লেখক পরিচিতি –

আমিরুল ইসলাম রাঙা
রাধানগর মজুমদার পাড়া
পাবনা।
১৮ অক্টোবর ২০২০