ওয়াজি উদ্দিন খান যিনি ‘উদ্দিন ভাই’ নামেই বেশি পরিচিত, এক সময়ে তিনি ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশনের’ সভাপতি সহ অনেকগুলি সংগঠনের সভাপতি ছিলেন, এমনকি হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ তাকে যোগাযোগ মন্ত্রী হবারও আমন্ত্র জানিয়েছিলেন কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন পালন করে গেছেন I জানা যায় যে মরহুম ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর ষড়যন্ত্রে মরহুম বগা মিয়ার সড়ক দুর্ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে বঙ্গবন্ধুকে দিয়ে বহিস্কার করানো হয়েছিল এই নির্লোভ সৎ মুজিব সৈনিককে, কিন্তু তিনি কখনও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হন নাই I ১৯৮৬ সালে ষড়যন্ত্র করেই উদ্দিন ভাইকে পাবনা ৩ আসনে মনোনয়ন দিয়ে পাঠনো হয়েছিল, তিনি মনোনয়ন চেয়েছিলেন পাবনা সদর আসরের জন্য কিন্তু তাকে মনোনয়ন দিয়ে পাঠানো হলো পাবনা ৩ আসনে যা তিনি ঘুনাক্ষরেও চিন্তা করেন নাই বলে বিভিন্ন আলাপচারিতায় বলতেন I পাবনা ৩ আসনের আপামর জনগণ আপন করে নিয়েছিল উদ্দিন ভাইকে এবং উদ্দিন ভাইও পাবনা ৩ আসনকে মনের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছিলেন, তাই মৃত্যুর আগে পর্যন্ত পাবনা ৩ আসনের যে কেউ আমন্ত্রণ জানালেই চলে আসতেন শারীরিকভাবে অক্ষম হওয়া সত্ত্বেও I
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার পরে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতাসীন হন এবং ১৯৭৯ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারী সংসদ নির্বাচন দেন, এই নির্বাচনে বিএনপি ২০৭ আসনে জয়ী হয় এবং শতকরা ৪১.২% ভাগ ভোট পায়, অপরদিকে আব্দুল মালেক উকিলের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ ৩৯ টি আসন এবং শতকরা ২৪.৫% ভোট পেয়ে প্রধান বিরোধী দলের আসনে আসীন হয়, আওয়ামীলীগ এই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছিল বলে অভিযোগ এনে ‘ঘরে বাইরে’ আন্দোলন গড়ে তোলার রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করে সংসদ এবং রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিল I পাবনা ৩ আসনে এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ছিলেন চাটমোহরের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ময়েজ উদ্দিন, তিনি মুক্তিযুদ্ধে আহত হয়েছিলেন এবং পর্বরীতে তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়েছিল, তিনি ক্র্যাচে ভর করে নির্বাচন মাঠে নির্বাচন কার্যক্রম চালিয়ে যেতেন I আমি সহ মরহুম আবুল ফজল খান, ডাক্তার শাহাদৎ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা লতিফ ভাই, হালিম ভাই, আমিনুজ্জামান রঞ্জু (আমার বড় ভাই) আনোয়ারুল হক, ডিএম, বারিক, আব্দুল আজিজ, আরও অনেকে এই নির্বাচন পরিচালনা করেছিলাম, হালিম ভাইকে মৃধাপাড়া কেন্দ্রে আওয়ামীলীগের প্রচারণার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছিল I এই প্রহসনের নির্বাচনে বিএনপির খন্দকার আনোয়ার নির্বাচিত হয়েই আওয়ামীলীগের প্রতি নির্মম অত্যাচার চালিয়েছিলেন, জয় বাংলা বলাটা সেই সময় রাষ্ট্র বিরোধী কাজ বলে গণ্য করা হত, সে সময় আওয়ামীলীগের প্রচার প্রচারণা চালাতে গেলেই যে কোনও বিপদ বরণ অনিবার্য ছিল I
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্ট্রগ্রামে এক সামরিক অভভুথানে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হলে বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহে হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ আব্দুস সাত্তারকে পদত্যাগে বাধ্য করে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেন এবং তিনি ১৯৮৬ সালের ৭ মে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন I পাবনা ৩ আসনে এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পত্র তুলেছিলেন চাটমোহরের ময়েজ উদ্দিন এবং ফরিদপুরের আলহাজ্ আবুল ফজল খান যিনি হাজী সাহেব নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন I আমরা ফরিদপুর থেকে হাজী সাহেব কে নিয়ে ঢাকায় মাননীয় নেত্রী সহ বিভিন্ন নেতার কাছে অনেক তয় তদবির করেছিলাম I কোনো এক সাক্ষাৎকারে হাজী সাহেব মাননীয় নেত্রীকে একটি কথা বলেছিলেন যা আজও আমি বিস্ময়ে মনে করি I মাননীয় নেত্রীর সাথে সাক্ষাৎ শেষে মাননীয় নেত্রীকে বলেছিলেন ‘আপা যাবার আগে একটা কথা বলতে চাই আপনাকে, আপনি যদি অনুমতি দেন’ মাননীয় নেত্রী সহাস্যে উত্তর দিয়েছিলেন ‘ঠিক আছে বলেন হাজী সাহেব’ হাজী সাহেব মাননীয় নেত্রীকে বলেছিলেন ‘আপা আমেরিকার বিরুদ্ধে আপাতত কিছু না বলে আমেরিকার সাথে যোগযোগের চেষ্টা করেন’ মাননীয় নেত্রী সহাস্যে তাকিয়ে ছিলেন হাজী সাহেবের প্রতি I এই কথা স্মরণ করে হাজী সাহেব বার বার বলতেন ‘বাপু আপাকে মনের কথাটা বইল্লা আইছি’ I পরবর্তীতে হয়তো বাস্তবতার নিরিখেই আওয়ামীলীগ পররাষ্ট্র নীতিতে পরিবর্তন পরিবর্ধন এনেছিল কিন্তু মরহুম হাজী সাহেবের দূরদৃষ্টির কথা মনে হলে এখনও তার প্রতি শ্রদ্ধাবনত হয়ে যাই I
আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল যে এবারে হাজী সাহেব মনোনয়ন পাবেন, মরহুম নাসিম ভাই, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ সহ অনেকের সাথে আমরা দেখা করেছিলাম, আমরা ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারি নাই যে উদ্দিন ভাইয়ের নাম ঘোষণা হবে পাবনা ৩ আসনে I আমাদের ধারণা ছিল খুব সম্ভবত হাজী সাহেব পাবেন না হলে ময়েজ চাচা চাটমোহর থেকে আবারও মনোনয়ন পাবেন I তবে আমার ধারণামতে হাজী সাহেবের মনোনয়ন পাবার সম্ভাবনা খুব বেশি ছিল তাতে হয়তো পাবনা ৩ আসনের রাজনৈতিক ইতিহাস অন্যভাবে লিখতে হতো I
আমরা অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই শুনলাম যে পাবনা ৩ আসনে উদ্দিন ভাইয়ের নাম ঘোষণা হয়েছে, এবং পাবনা সদের বকুল ভাই I এ কথাও প্রচার হয়ে গেলো যে আওয়ামীলীগের তৎকালীন প্রভাবশালী নেতা আব্দুস সামাদ আজাদ আত্মীয়তার সূত্রে বকুল ভাইকে পাবনা সদর আসন এবং উদ্দিন ভাইকে পাবনা ৩ আসনে মনোনয়ন দেবার ক্ষেত্রে প্রভাব খাটিয়েছেন I অপ্রত্যাশিতভাবে উদ্দিন ভাইয়ের নাম ঘোষণা হলেও তিনি নাকি ভালো মানুষ এটাও ছড়িয়ে পড়লো সর্বত্র, আমরা বিষন্ন হলেও খুব একটা অখুশি ছিলাম না কেউ I
কয়েকদিন পরেই উদ্দিন ভাই ফরিদপুরে আসলেন ফরিদপুর উপজেলার পুরিন্দরপুর গ্রামের এডভোকেট রাজ্জাক ভাইকে সাথে নিয়ে, ভাঙ্গুড়াতে ৩ থানার মিটিং ডাকা হয়েছে সেখানে যাবার জন্য উদ্দিন ভাই আমাদের বললেন, তখন ভাঙ্গুড়ার সাথে কোনও প্রকার পাকা রাস্তা ছিল না, একই নৌকায় করে উদ্দিন ভাইয়ের সাথে ভাঙ্গুড়া গেলাম আমরা I ভাঙ্গুড়ায় হাজী সাহেবের এক চাচার হোমিও দোকান ছিল রেল লাইনের সাথে টিনের চাল বাঁশের চটাইয়ের বেড়া, সেখানে আমরা একটা আলাদা মিটিং করার জন্য বসলাম I সিদ্ধান্ত হলো যে হাজী সাহেবের পক্ষে আমি বক্তব্য রাখবো এবং বক্তব্যে উদ্দিন ভাইকে পাবনা সদরে এবং হাজী সাহেবকে পাবনা ৩ আসনের জন্য মনোনয়ন দেবার পুনঃবিবেচনার কথা তুলে ধরবো I নৌকায় উদ্দিন ভাইয়ের কথায় ইতিমধ্যেই তার প্রতি একটা শ্রদ্ধাবোধ জেগেছিলো, তাই তার বিপক্ষে যায় এমন বক্তব্য দেয়া আমার জন্য কঠিনই হচ্ছিলো I মিটিংটি হয়েছিল ভাঙ্গুড়া রেল লাইনের কাছে একটি সিনেমা হলের সম্মুখে I তিন থানা মিলে সর্বমোট প্রায় দেড় শত নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন I
প্রায় সবাই উদ্দিন ভাইকে পাবনা ৩ আসনে স্বাগতম জানিয়ে বক্তব্য দিলেন, আমি আমার বক্তব্যে পূর্বের আলোচনা মোতাবেক উদ্দিন ভাইকে পাবনা সদরে এবং হাজী সাহেবকে পাবনা ৩ আসনে মনোনয়নে পুনর্বিবেচনার কোনো ব্যবস্থা থাকলে তা করতে অনুরোধ করেছিলাম I
উদ্দিন ভাইয়ের মর্মস্পর্শী বক্তব্যে সবাই এতটা খুশি হয়েছিলেন যে আমরা শেষ পর্যন্ত উদ্দিন ভাইকে বলেছিলাম যে তিনি যেন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করেন I ‘আমি সারা জীবন পাবনা সদরে রাজনীতি করেছি, আমি চাই আপনাদের এলাকার নেতৃত্ব আপনারা দেবেন, আমি মনোনয়ন তুলেছি পাবনা সদর আসনের জন্য আমাকে ষড়যন্ত্র করে পাঠিয়ে দেয়া হলো পাবনা ৩ আসনে, আপনারা যদি না চান আমি নির্বাচন করতে আসবো না, আপনার যদি চান তা হলে পাবনা ৩ আসনে আমি নির্বাচন করবো এবং নির্বাচিত হলে এই আসনকে আমি আমার করে গড়ে তুলবো, আমার কোনো লোভ লালসা নেই, আমি কখনও দুর্নীতি করবো না’ ইত্যাদি কথাগুলি মানুষের হদয় ছুঁয়ে গিয়েছিলো, শেষ পর্যন্ত যাবার সময় হাজী সাহেব এবং আমরাও উদ্দিন ভাইকে বলে দিয়েছিলাম আপনি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবেন না, আমরা সর্ব শক্তি দিয়ে আপনাকে জয়ী করার জন্য কাজ করবো I
বিএনপির আনোয়ার সাহেব দল বদল করে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে এসেছিলেন যার জন্য তিনি ‘গোল আলু’ হিসাবে খ্যাতি লাভ করেছিলেন মানুষের কাছে ,মানুষ রাস্তায় রাস্তায় তার ছবি টানিয়ে গলায় গোল আলুর মালা পরিয়ে রাখতো, তা ছাড়া ঘুষ দুর্নীতি রাজনৈতিক নিপীড়নে মানুষ তার প্রতি অনেকটাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল I
বনওয়ারী নগর বাজারে খলিল ভাইয়ের একটা বাসা ছিল, সেখানে আমরা পরামর্শ করলাম কিভাবে নির্বাচন করা যায়, খলিল ভাই আমি হাজী সাহেব আসাদ, রাজ্জাক, নুরুল ইসলাম কুদ্দুস, মাসুম সহ আরও অনেকে ছিল, সেখানে খলিল ভাইয়ের একটি কথা আজও মনে পরে তিনি বলেছিলেন ‘আমরা ধরেই নিলাম যে উদ্দিন ভাই নির্বাচিত হবার পরে পাবনার মানুষের ধাক্কায় আমরা অনেক সময় তার কাছে যেতে পারবো না, তার পরেও নির্বাচন করতে হবে, জয়ী হতেই হবে’ পরবর্তীতে উদ্দিন ভাই জয়ী হবার পরে অনেকটা তাই হয়েছিল, উদ্দিন ভাইয়ের সাথে দেখা করতে পাবনা গিয়ে অনেক সময় তার কাছে গিয়ে আমরা বসবার জায়গা পেতাম না, পাবনার নেতা কর্মীরা অনেকটাই উদ্দিন ভাইকে ঘিরে রাখতেন যাদের কোনো অবদানই ছিল না উদ্দিন ভাইকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করার, অবশ্য উদ্দিন ভাইয়ের আন্তরিকতার কোনও অভাব ছিল না I শেষ মেশ শুরু হলো নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার যুদ্ধ, পাবনা থেকে ৪-৫ টা মোটর সাইকেল ফরিদপুরে ড্রাইভার সহ পাঠানো হলো, পাবনার শহীদ ভাই, মোশারফ হোসেন (বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ) আরও অনেকে স্থায়ীভাবে ফরিদপুরে আমাদের সহযোগিতা করার জন্য আমাদের সাথেই থাকতেন I মোশারফ ভাই একটি মোটর সাইকেল নিয়ে সর্বদাই আমার সাথে থাকতেন, যেখানে যেতে চাইতাম সেখানেই নিয়ে যেতেন I তখন রিক্সা ভ্যান ছিল না, সাইকেলে মাইক বেঁধে নিজেরাই মাইকিং করতাম, নিজেরাই পোস্টার লাগাতাম, উদ্দিন ভাই কি দিবে না দিবে সেদিকে কোনও নজর ছিল না, নিজেরা খেয়ে না খেয়ে দিন রাত কাজ করে যেতাম, প্রচন্ড সারা পরে গেলো চারিদিকে, ফরিদপুর ভাঙ্গুড়ার প্রতিটা গ্রামে একাধিকবার উদ্দিন ভাইয়ের সাথে প্রচারণার কাজে আমরা গিয়েছি, অনেক রাত মানুষের বাড়ীতে বাড়ীতে কাটিয়েছি , একটাই লক্ষ্য ছিল উদ্দিন ভাইকে জেতাতে হবে নৌকাকে জেতাতে হবে I
অনেক সময় টাকা না থাকায় ফরিদপুরের সূর্যু ভাইয়ের হোটেলে বাঁকী করে খেতাম, সূর্য ভাই কখনও না করতেন না I মাহাতাব (বর্তমানে ফরিদপুর উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি) তার হাতের আংটি পর্যন্ত বিক্রি করে নির্বাচনে খরচ করেছে, আমার বন্ধু আসাদ (বর্তমান এস পি জাহাঙ্গীরের মামা) একটা বড় পাঞ্জাবী বানিয়েছিলো তার পকেট ইচ্ছা করেই বড় করেছিল, বাড়ী থেকে পকেট ভর্তি চাল চুরি করে এনে বাজারে বিক্রি করে সেই টাকা নির্বাচনে খরচ করতো I রাউত নাগধা পাড়ার গনী চাচা নিজে নৌকার গুন্ টেনে নির্বাচনী প্রচারে আমাদের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতেন, মরহুম আবুল চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলে জাহাঙ্গীর ভাই তার বাবা বিএনপির সেই সময়ে ফরিদপুর উপজেলার সর্বময় নেতা হওয়া সত্ত্বেও তিনি দিন রাত নৌকার জন্য পরিশ্রম করেছেন I অবশেষে পাবনা ৩ আসনের এক ঝাঁক মুজিব সোনিকের অক্লান্ত শ্রমে আমরা নির্বাচনে জয়ী হলাম, চারিদিকে জয়বাংলা স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠলো, শুরু হলো একজন সংসদ সদস্য হিসাবে উদ্দিন ভাইয়ের পথচলা I এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ১৫৩ টি আসন এবং শতকরা ৪২.৩ ভাগ ভোট পায় এবং আওয়ামীলীগ ৭৬ টি আসন এবং শতকরা ২৬.২ ভোট পায়, তার মধ্যে পাবনা জেলায় পাবনা সদর এবং পাবনা ৩ আসন ২টি আওয়ামীলীগ পেয়েছিলো, বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করেছিল I এই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছিল বলে জেনারেল এরশাদ দেশ বিদেশে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন I
অনেকটা নিজের পয়সা খরচ করে খেয়ে না খেয়ে দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রমে করে পাবনা ৩ আসনে নৌকা কে জয়ী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তাদের কথা তুলে না ধরলে আমরা বিবেকের কাছে দায়ী থাকবো, এই সমস্ত ত্যাগী নেতা কর্মীর অবদানের কথা চিরদিনের জন্য চাপা পরে যেতে চলেছে হাইব্রিড এবং সুবিধাভোগীদের দাপটে I সবার নাম হয়তো আমার মনে নাই এর অর্থ এই নয় যে তাদের ভূমিকা ছোট করে দেখার বিষয়, দয়া করে আমাকে মনে করে দিলে আমি সংশধোন করে তা পুস্তক আকারে প্রকাশ করবো ইনশাল্লাহ I
বনওয়ারী নগর ইউনিয়ন:
মরহুম ডাক্তার শাহাদৎ হোসেন, মরহুম আনোয়ারুল হোক, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিপ, মরহুম মোজাহার আলী, মরহুম আব্দুল গফুর, দুলাল হোসেন, চেতন(গাজী) সবার বাড়ী থানা পাড়া I সাইফুল ইসলাম, আফাজ উদ্দিন রুলদহ I সুলতান চাচা, নুরুল ইসলাম কুদ্দুস, আবুল বাসার মাসুম, গোলাম মর্তুজা, স্বপন, হোসেন আলী, সাহেব আলীমোহন, মুক্ত, আতিক খলিশাদহ I জাহাঙ্গীর আলম, আমিনুল ইসলাম ডেভিড, বিশু কুন্ডু, মিঠু, জুলফিকার আলম, সেলিম বনওয়ারী নগর বাজার I আব্দুল গনি, মহব্বত হোসেন, খন্দকার আব্দুস সালাম, মান্নান, আরিফুল ইসলাম আরিফ, রাউত নাগধা পাড়া I আবুল সাত্তার, আবু সাঈদ, খোরশেদ আলম, মাহাতাব উদ্দিন, মাহে আলম, দক্ষিণ টিয়ার পাড়া I আবুল মনসুর মঞ্জু ভাই, মোতালেব হোসেন, মোহাম্মদ আলী, আফসার প্রামানিক, মংলা প্রামানিক, হাসেন আলী নতুন পাড়া I মরহুম শামসুল হক ডিএম, মরহুম স্বপন কুমার, বীজন কর্মকার, মরহুম বারিক, শাহজাহান মেম্বর, মরহুম মোকসেদ শাহ, খগেন হালদার, গোপাল নগর I মরহুম নজরুল মাস্টার, আফজাল ভাই, আসাদ, রাজ্জাক, বিভু, শাখাওয়াত, সোনাহারI মরহুম নুরুল হক, মোকসেদ আলী, কাশিপুর I আরও অনেকে I
ডেমরা ইউনিয়ন :
মরহুম মিজানুর রহমান, আব্দুল হালিম, মরহুম খালেক, আব্দুল গনী, হান্নান, মৃধাপাড়া I আবুল আজিজ, শুকুর আলী, খবির উদ্দিন, সোলেমান, পচা মৃধা , পাচুরিয়া বাড়ী I ইউসুব মেম্বার, হান্নান, আয়নাল খাগুড়িয়া I মরহুম সালেক চেয়ারম্যান, আবু যার গাফ্ফারী, মরহুম জুলফিকার, তারক নাথ, সোলেমান, রাজ্জাক ডেমরা বাজার I রফিক মোল্লা কালিয়ানি I রউফ, গোবিন্দ চকচকিয়াI I আরও অনেকে I
পুঙ্গুলী ইউনিয়ন :
মরহুম হাবিবর মাস্টার, আব্দুল করিম, ভোলন, ইসমাইল মেম্বার, লুৎফর রহমান মোল্লা, হাশেম ভাই, আব্দুল মতিন মতি, অনিচ্ছার আলী, দুলাল চন্দ্র শীল I আরও অনেকে I
ফরিদপুর ইউনিয়ন :
মরহুম ইজিবর রহমান, খলিল ভাই, মাহাতাব উদ্দিন, রমজান মোল্লা, সাহেব আলী, জমিন, কালাম, ঠান্ডু, রাজ্জাক মোল্লা, করিম মেম্বার, মিল্টন খাগড় বাড়ীয়া I মরহুম বক্কার সরকার, মরহু খয়ের খাঁ, আনোয়ার সরকার, মরহুম আবু ইসহাক, ইদ্রিস আলী, বের চিথুলিয়া I রেজাউল করিম, হাবিবুর রহমান সাভার I ইসহাক মাস্টার, আব্দুল খালেক নারান চন্দ্র শীল, পারফরিদপুর I চাদ আলী, নুরুল হক, নেছড়া পাড়া I আরও অনেকে I
বি এল বাড়ী ইউনিয়ন:
মরহুম আবুল ফজল খান, বজলার মল্লিক, খাইরুল ভাই, আব্দুস সাত্তার, বাবলু, জিন্দার মল্লিক, আনোয়ারুল হক আনছার, দেওভোগI হামিদ মাস্টার পুরিন্দর পুর, মরহুম নেফাজ উদ্দিন বাঁশুরিয়া I আরও অনেকে I
হাদল ইউনিয়ন :
মরহুম নুরুল হক, সাবু ভাই, সেলিম রেজা, সাত্তার ডাক্তার, মাজেদ দর্জি, ধানুয়া ঘাটা, মোহাম্মদ আলী, হাদল I মরহুম রিয়াজ মাস্টার,শহিদুল ইসলাম, বাদাল I আরও অনেকে I
পরবর্তী পর্ব: উদ্দিন ভাইয়ের সাথে কিছু উল্লেখযোগ্য স্মৃতি I