লালমনিরহাট প্রতিনিধি।
তিস্তা নদীর বাম তীরের লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সলেডি স্প্যার-২ ধসে যাচ্ছে। বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার প্রাণপণ চেষ্টা করছেন এলাকাবাসী। বুধবান (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে হঠাৎ ধসে পড়তে শুরু করে বাঁধটি। মুহূর্তে বাঁধটির এক তৃতীয়াংশের বেশি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, তিস্তা নদীর বাম তীরের ভাঙন ও বন্যা থেকে রক্ষায় ২০০৩-০৪ সালে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে আদিতমারী উপজেলার গোবর্দ্ধন এলাকায় সলেডি স্প্যার বাঁধ-২ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত বছর কিছু অংশে ভাঙন দেখা দিলে চলতি বছরে তা সংস্কার শুরু হয়।সেই সংস্কার কাজ শেষ হতে না হতেই সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে তিস্তায় পানি কমে যাওয়ায় হঠাৎ ভাঙনের কবলে পড়ে বাঁধটি। স্থানীয়রা রাতেই মসজিদ থেকে মাইকিং করে গ্রামবাসীকে জড়ো করে নিজেদের বসতবাড়িতে থাকা বালুর বস্তা ফেলে কিছুটা রক্ষা করেন।রাত যেতে না যেতেই বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে পুনরায় ওই স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে বাঁধটির এক তৃতীয়াংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
গ্রামবাসী ধসে যাওয়া বাঁধটি রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা কিছু জিও ব্যাগ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের মাধ্যমে রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছেন। বাঁধটি রক্ষায় ব্যর্থ হলে ভাটিতে থাকা কয়েক হাজার বসতভিটা নদীর স্রোতে ভেসে যাওয়ার শঙ্কায় কান্নার রোল পড়েছে নদী পাড়ে। পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষজনও সহায়তার জন্য ছুটছে বাঁধের দিকে। বাঁধটি রক্ষায় শিশু কিশোররাও নেমে পড়েছেন বস্তা নিয়ে।
এদিকে বাঁধটি রক্ষায় সহায়তা করতে এবং বিলীন হলে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে ঘটনাস্থলে প্রস্তুত করা হয়েছে আদিতমারী ফায়ার সার্ভিসের একটি দল। তারা নদীপাড়ে পৌঁছে প্রস্তুতি শুরু করেছেন।
স্থানীয় মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মতিয়ার রহমান বলেন, রাতে হঠাৎ বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। মসজিদে মাইকিং করলে গ্রামবাসী নিজের বাড়ির সংগৃহীত বস্তা নিয়ে বালু ভর্তি করে ডাম্পিং করে কিছুটা রক্ষা করেছেন। সকালে আবারো তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। ফলে গ্রামবাসী দিশেহারা হয়ে পড়ে। গ্রামবাসীর সহায়তায় বাঁধটি রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। মাত্র ৩০ মিনিটের ব্যবধানে বাঁধের এক তৃতীয়াংশের বেশি ধসে গেছে। বাঁধটি রক্ষায় ব্যর্থ হলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি নদীর স্রোতে ভেসে যাবে।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, সলেডি স্প্যার বাঁধটি রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। গ্রামবাসীকে নিয়ে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমিও ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছি।